ইসলামী আন্দোলন : নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের রূপরেখা ঘোষণা

আগের সংবাদ

কুরবানির পশুর দাম বেশি যে কারণে > আফতাবনগর হাট : এখনো জমেনি হাট গরুও উঠেছে কম

পরের সংবাদ

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে আ.লীগের ক্ষমতায় থাকা দরকার : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৬, ২০২৩ , ১:৪৯ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা তো অনেক কথা শুনি, আজকে সরকার ফেলে দেবে, এটা ফেলে দেবে, ওটা ফেলে দেবে। আজকে যে উন্নয়ন শীল দেশ হিসেবে মর্যাদা পেলাম তা আওয়ামী লীগ সরকার যদি ক্ষমতায় না আসে এটা বাস্তবায়ন করবে কে? আমাকে একটা লোক দেখান সে করতে পারে? নিঃস্বার্থভাবে দেশের জন্য কাজ করবে একটা মানুষ দেখান। সেরকম কোনো নেতৃত্ব যদি আপনারা দেখাতে পারেন আমার কোনো আপত্তি নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি যে, বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে আমাদের (আ.লীগ) প্রয়োজন।’ তাই জনগণকে বলব তারা বারবার আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে বলে আমরা দেশকে উন্নয়নের ধারায় নিয়ে আসতে পেরেছি, দারিদ্র্যমুক্ত করেছি। আবারো তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন এটা আশা করি।
গতকাল রবিবার জাতীয় সংসদে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে বেকারত্বের হার মাত্র ৩ ভাগ। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ৬ লাখ যুবক কাজ করে আয় করছে। নিশ্চয় আমরা এগিয়ে যাব, উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে পরিণত হব।
তিনি বলেন, তার মধ্যে এত বাধা, এত প্রতিরোধ, সমালোচনা, এত কিছু হচ্ছে, আমরা কিন্তু অর্থনীতির চাকা সচল থাকে তার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি। তার পরেও বলব, কোভিড-১৯, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধটা যদি না হতো তা হলে আমরা কিন্তু অনেক উঁচু আসনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারতাম। সমস্যা তো আসবে এটাতে ঘাবড়ালে চলবে না, মোকাবিলা করতে হবে।
এবারের যে বাজেট আমরা দিয়েছি অনেকে বলেছেন, এটা নাকি উচ্চাভিলাষী, এটা বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এটা সব সময় বলে থাকেন। তবে আমরা কিন্তু বাজেট বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমাদের দারিদ্র্যের হার কিন্তু গ্রামে কমে যাচ্ছে, শহরে কিছুটা হয়তো আছে। আমাদের অর্থনীতি কিন্তু এগিয়ে যাওয়ার অর্থনীতি। আমাদের লক্ষ্যটাই হচ্ছে আমরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে চাই, নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। কারো কাছে হাত পাততে চাই না। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি, বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা বিশ্বে মাথা উঁচু করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
এ সময় তিনি একটি কবিতা আবৃত্তি করেন- ‘মেঘ দেখে করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে।’
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা প্রয়োজনে বাজেটে কোনো কিছু কমাতে গেলে কোনো আইন লাগে না। সেখানে যদি কোনো কিছু পরিবর্তন করতে হয় তাহলে আমরা পরিবর্তন করব।
তিনি বলেন, তবে আগামী বছরও কৃচ্ছ্রতা সাধনের প্রয়োজন হবে- যা অব্যাহত রাখতে হবে। এ সময় তিনি টাকার মান কমে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে জানান। এটা নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। কৃষি খাতে উৎপাদন বাড়াতে জোর দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতনের ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে বিবেচনার ব্যবস্থা নিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে নির্দেশ দেন। ‘আমি অর্থমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি, এই জরুরি সময়ে সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতনের ৫ শতাংশ বিশেষ বেতন হিসেবে দেয়ার কথা বিবেচনা করুন।’
তিনি বলেন, এবারেও কিন্তু বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের নিচে আছে। আমাদের বৈদেশিক ঋণ আন্তর্জাতিক মাত্রার বেশ নিচেই রয়েছে, তাই চিন্তার কিছু নেই। আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা আনতে ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি। মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ও ক্যাশলেস ট্রানজ্যাকশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যবস্থা করা হয়েছে, ই-পেমেন্ট করা হচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে- এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের ভূয়সী প্রশংসায় জাতিসংঘ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের দুই আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ-পিয়েরে ল্যাক্রোইক্স ও ক্যাথরিন পোলার্ড। গতকাল রবিবার সকালে গণভবনে তারা এই সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, জলবায়ু পরিবর্তন ও নারীর নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রেস সচিব জানান, সাক্ষাৎকালে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলরা বলেন, জাতিসংঘ সফলতার সঙ্গে এর শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ৭৫ বছর পূর্ণ করেছে। শান্তি রক্ষা কার্যক্রমে তারা বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তাদের বলেন, বিগত তিন দশক ধরে পেশাদারিত্ব ও নিবেদিত প্রাণ হয়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ অবদান রাখছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি শান্তিরক্ষী পাঠানো দেশ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে জাতিসংঘের ৯টি মিশনে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার নারী ও পুরুষ শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন।
এ সময় জাতিসংঘের যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতন রোধে গঠিত ফান্ডে সহায়তা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ক্যাথরিন পোলার্ড। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নারী নিরাপত্তা এবং (জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে) নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। তিনি নারীর প্রতি সহিংসতা ও নিপীড়ন বন্ধে বর্তমান সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে বলেন, যাদের বিরুদ্ধে নারী নিপীড়নের প্রমাণ পাওয়া গেছে বাংলাদেশ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। আমাদের সরকার নিজস্ব ফান্ডে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি প্রশমন ও অভিযোজন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
সাক্ষাৎকালে আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর-এ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়