ইসলামী আন্দোলন : নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের রূপরেখা ঘোষণা

আগের সংবাদ

কুরবানির পশুর দাম বেশি যে কারণে > আফতাবনগর হাট : এখনো জমেনি হাট গরুও উঠেছে কম

পরের সংবাদ

ইংরেজি পড়ার আবশ্যকতা

প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সভ্যতার বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে অন্যতম একটি উপাদান হলো ভাষা। ভাষা বিশ্লেষণ করেই একটি সমাজ বা গোষ্ঠীর চরিত্র, মানসগঠন ও আচরণ সম্পর্কে ধারণা করা সম্ভব। একটি জাতির মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম হলো ভাষা। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ৭ হাজার ১১১টি ভাষায় কথা বলা হয়। পৃথিবীতে এতসব বিচিত্র ভাষার মধ্যে বৃহৎ পরিধিতে বিস্তৃত একটি ভাষা হলো ইংরেজি। দুটি দেশের মানুষের কথোপকথনের স্বীকৃত মাধ্যমে পরিণত হয়েছে এই ভাষাটি। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই নানা কারণে ইংরেজি হয়ে উঠেছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম। ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের জার্মানীয় শাখার পশ্চিম দলের একটি ভাষা হলো ইংরেজি ভাষা। বর্তমানে এটি যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে ছড়িয়ে থাকা অনেক দ্বীপরাষ্ট্রের প্রধান ভাষা।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের হিসাবে পৃথিবীতে এখন ইংরেজি ভাষায় কথা বলেন ১৫০ কোটি মানুষ। কিন্তু প্রায় ৩৮ কোটি মানুষের মুখের মাতৃভাষা হলো ইংরেজি। মাতৃভাষাভাষীর সংখ্যার বিচারে এর অবস্থান বিশ্বে তৃতীয়। তবে অনেক দেশই ওই দেশের মূল ভাষার সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক ভাষা হিসেবে প্রধান ভাষা হয়ে উঠেছে ইংরেজি ভাষা। এই যেমন জাতি হিসেবে আমাদের প্রধান ভাষা বাংলা, তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন প্রয়োজনে ইংরেজি ভাষা আমরা ব্যবহার করে থাকি। অবশ্য এর কারণ হলো ইংরেজি বর্তমান বিশ্বে স্বীকৃত একটি আন্তর্জাতিক ভাষা। যার ফলে সমগ্র বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থাতেও ইংরেজি ভাষার বেশ আধিপত্য রয়েছে। উচ্চতর শিক্ষা ক্ষেত্রেও ইংরেজি ভাষার চর্চা বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে করা হয়। বলা হয় বাংলা ভাষার জন্যই বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের সৃষ্টি। ভাষা আন্দোলন একটি চেতনার নাম। একটি স্বাধীন দেশের অঙ্কুরাবৃত্ত, একটি স্বাধীনসত্তার প্রকাশ। অনেকেই হয়তো বলে থাকে, যে ভাষার জন্য আমাদের দেশে আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছিল অনেক মানুষ রক্ত দিয়েছে, তবে আমরা কেন নিজ ভাষা বাদ দিয়ে ইংরেজি ভাষা চর্চা করব? হঠাৎ এরূপ প্রশ্ন আমাদের অনেকটা থমকে দেয় ও ভাবনার সৃষ্টি করে। তবে এরূপ প্রশ্নের জবাবে প্রথমেই বলতে হয় আমাদের বাংলা ভাষা ক্রমপরিবর্তনশীল একটি ভাষা। বাংলা ভাষায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিদেশি শব্দ যোগ হচ্ছে। তবে তাদের মধ্যে ইংরেজি শব্দের পরিমাণটা তুলনামূলক বেশিই লক্ষ করা যায়। এই যেমন বর্তমানে ফেসবুক, পোস্ট, স্ট্যাটাস, কমেন্ট, রিয়েক্ট, ভাইরাল, আপ টু ডেট, স্ক্রলিং, নেটওয়ার্ক ইত্যাদি শব্দ বেশ জনপ্রিয়। যেখানে প্রতিনিয়ত আমাদেরকে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে হয়। এই যোগাযোগ রক্ষা করার ক্ষেত্রে সর্বস্তরে প্রচলিত একটি ভাষা হলো ইংরেজি ভাষা। কাজেই ইংরেজি শিক্ষা কেন গ্রহণ করা উচিত? এই প্রশ্নের জবাবে সহজেই বলা যায় বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য হলেও ইংরেজি চর্চার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যম হলো ইংরেজি ভাষা। উচ্চতর শিক্ষাব্যবস্থায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যে বই পড়ানো হয় আমাদের দেশে তা ইংরেজি ভাষাতেই লেখা। কেননা আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ইউরোপীয় শিক্ষাব্যবস্থার আদলেই গঠিত। কাজেই আমরা যদি উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করতে চাই তবে আমাদেরকে ইংরেজি চর্চা করতে হবে।
দেশের চাকরির বাজারেও ইংরেজি ভাষার বেশ দখল রয়েছে। চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নে আবশ্যিকভাবেই ইংরেজি ভাষা থেকে প্রশ্ন করা হয়। এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন চাকরিতে মৌখিক পরীক্ষায়ও ইংরেজিতে প্রশ্ন করা হয়। যেখানে চাকরি প্রত্যাশীদের ইংরেজিতেই জবাব দিতে হয়। কাজেই আমাদের ভালো কোনো পেশায় নিযুক্ত হতে হলেও ইংরেজি ভাষা চর্চা করতে হবে। সর্বোপরি বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইংরেজি ভাষা চর্চার অনেক সুফল রয়েছে আমাদের সমাজে। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য একটি বিষয় হলো এটি আমাদের ব্যক্তিত্বকে সুস্পষ্ট করে তোলে। ক্যারিয়ার গঠন করতেও ইংরেজি ভাষা চর্চার ভূমিকা রয়েছে।

আলী আহসান : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়