রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু

আগের সংবাদ

সিসিক মেয়রের প্রতি প্রধানমন্ত্রী : মেয়র নয়, সেবক হিসেবে কাজ কর

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামে সমাবেশ : নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি বাস্তবায়নের দাবি

প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : আমদানিনির্ভর জ্বালানি নীতির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে। শনিবার নগরীর বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার চত্বরে বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন আইএসডিই বাংলাদেশ, ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগর, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন) ও বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলোজি এন্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডব্লিউজিইডি) এই সমাবেশের আয়োজন করে। এই সমাবেশ থেকে ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করা এবং সমন্বিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) বাতিলের দাবি জানান বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে ও ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সভাপতি এম নাসিরুল হক, এডাব চট্টগ্রামের সভাপতি নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারু, প্রশিকার উপ-পরিচালক অজয় মিত্র শংকু, বহদ্দারহাট সিটি করপোরেশন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী জানে আলম, সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, বন গবেষণাগার কলেজের অধ্যাপক একেএম হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে জলবায়ু-সহিষ্ণু মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে বাংলাদেশ সরকার ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করে। এর আলোকে ওই বছরই ডিসেম্বরে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। ২০২৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভা এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অনুমোদন দেয়। এতে বাংলাদেশে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ, ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করা হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বিরুদ্ধে গিয়ে প্রস্তাবিত সমন্বিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি)র চতুর্থ খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এই খসড়ায় ২০৪১ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ তথাকথিত ‘পরিচ্ছন্ন জ্বালানি’র লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরিছন্ন জ্বালানির আওতায় উন্নততর প্রযুক্তির নামে আমদানি-নির্ভর তরল হাইড্রোজেন, আ্যামোনিয়া ও কার্বন সংরক্ষণ প্রযুক্তি প্রবর্তনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
বক্তারা বলেন, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা)র সহযোগিতায় ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইকোনমিক্স, জাপান (আইইইজে) বাংলাদেশের জন্য আইইপিএমপি প্রণয়ন করছে। এর আগে ২০১০ ও ২০১৬ সালেও জাইকার সহযোগিতায় বিদ্যুৎ খাতবিষয়ক মহাপরিকল্পনা (পিএসএমপি) প্রণয়ন করা হয়েছিল। এগুলোতে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছিল আমদানি-নির্ভর কয়লা ও তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)। কিন্তু করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকটে এখন বাংলাদেশে আমদানিকৃত জ্বালানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ করেও বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিশেষ করে সৌর ও বায়ুবিদ্যুতে বিনিয়োগ করলে বর্তমান সংকট এতটা গভীর হতো না।
ক্যাব নেতা এস এম নাজের হোসাইন বলেন, এই অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি জাইকার অর্থায়নে জাপানি প্রতিষ্ঠান আইইইজে প্রণীত বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী খসড়া আইইএমপি অবিলম্বে বাতিল করা হোক। পাশাপাশি ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’র শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়নের জন্য সৌর ও বায়ুবিদ্যুতে প্রাধান্য দিয়ে দেশজ মালিকানায় দেশের নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা দরকার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়