রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু

আগের সংবাদ

সিসিক মেয়রের প্রতি প্রধানমন্ত্রী : মেয়র নয়, সেবক হিসেবে কাজ কর

পরের সংবাদ

খুলনা বিভাগীয় নির্বাচন অফিস : আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির আভিযোগ

প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : খুলনা বিভাগীয় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের আওতাধীন অফিসগুলোতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তাপ্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও গাড়িচালক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়োগে খুলনা আঞ্চলিক অফিসের নির্বাচন কর্মকর্তারা কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন এক চাকরিপ্রার্থী।
সম্প্রতি পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে আবেদন করা আব্দুল্লাহ আল মামুনের স্বাক্ষরে ডাক যোগে একটি অভিযোগপত্র এসেছে জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খানের কাছে। সেই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে এ বিষয়ে ইসি সচিবকে তদন্ত করে নথি উপস্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছেন কমিশনার হাবিব। এদিকে চাকরিপ্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন দাবি করেছেন, তিনি ওই অভিযোগপত্র পাঠাননি। এ বিষয়ে কিছু জানেনও না। বিষয়টি নিয়ে ইসি কার্যালয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে।
ইসি কার্যালয়ে সূত্রে জানা গেছে, গাড়িচালক পদে সাতজন, নিরাপত্তাপ্রহরী পদে ৪৭ জন এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে ৬২ জনকে নিয়োগ দেয়ার লক্ষ্যে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এ বিজ্ঞপ্তির অধীনে নিয়োগের লক্ষ্যে ২৮ মার্চ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব বরাবর অভিযোগ দেয়া প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি তো কোনো অভিযোগ দিইনি। আমি চাকরির জন্য আবেদন করেছিলাম। আবেদন সাকসেসফুল দেখিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে পরীক্ষার বিষয়ে আর কিছু জানায়নি। ফলে আমি পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করতে পারিনি। এরপর এ বিষয়ে আর কোনো খোঁজ-খবর রাখা হয়নি।
নিয়োগবাণিজ্য হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বলতে পারব না। যখন আমার এসএমএস আসেনি, তখন আর কিছুই করিনি বা জানতেও চাইনি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না, তাহলে কীভাবে বলব? আমি নির্বাচন কমিশনার বরাবর কোনো অভিযোগ করিনি।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তাপ্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও গাড়িচালক নিয়োগে আর্থিক দুর্নীতি করেছেন খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর। যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চাকরির আবেদন করেও অনেকে লিখিত পরীক্ষার এসএমএস পাননি। শুধুমাত্র হুমায়ুন কবীরের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠানো হয়েছে এবং তারাই পরীক্ষার প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। আবার যারা এসএমএস পেয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই মাস্টার্স পাস এবং পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সহজ হওয়ায় ২৫ নম্বরের মধ্যে ২৫ পেয়েছেন। অথচ পরীক্ষার চূড়ান্ত তালিকায় তাদের নাম নেই।
অন্যদিকে লেখাপড়া জানেন না, নিজের নামও ঠিকমতো স্বাক্ষর করতে পারেন না (যেমন- খুলনা জেলার সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এম মাজহারুল ইসলামের গৃহকর্মী রেহেনা বেগম, রোল নম্বর: ১১২, পদবি : পরিচ্ছন্নতাকর্মী) এমন প্রার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এসব পরীক্ষার্থীকে নিয়োগ কমিটির সদস্যরা বলেছেন, শুধুমাত্র পরীক্ষার খাতায় নাম, পদের নাম ও রোল নম্বর লিখে সাদা খাতা জমা দিতে। পরবর্তী সময়ে নিয়োগ কমিটি তাদের পছন্দের প্রার্থীদের জমা দেয়া সাদা খাতা পূরণ করে দিয়েছেন।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়েছে, খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর তার অনুগত নিয়োগ কমিটির সদস্য এবং জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। সব মিলিয়ে খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা প্রায় এক কোটি টাকার বেশি নিয়োগবাণিজ্য করেছেন। এ নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খোঁজ নিলে সত্যতা পাওয়া যাবে বলেও উল্লেখ করা হয় অভিযোগপত্রে।
এ বিষয়ে খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, যে কোনো পেশায় যে কেউ অভিযোগ করতেই পারেন। সত্যতা থাকলে তার অভিযোগ করার অধিকার আছে। কমিশনার স্যার যদি তদন্তের নির্দেশ দিয়ে থাকেন, তাহলে সচিব স্যার ব্যবস্থা নেবেন। এখানে আমার আর কোনো বক্তব্য নেই। যেহেতু কর্তৃপক্ষ আমলে নিয়েছে, তারা আমার কাছে জানতে চাইলে আমি জবাব দেব।
তিনি আরো বলেন, অভিযোগপত্রে যাদের যাদের নাম লেখা হয়েছে, তাদের কাউকে আমি চিনি না। অভিযোগপত্রে এনআইডি নম্বর ও মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে। যেটা আমার চিন্তার বাইরে। কারণ যাদের আমি চিনি না বা জানি না তাদের এনআইডি ও মোবাইল নম্বর কীভাবে পাব?

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়