প্রিপেইড মিটার স্থাপনে আর্থিক লেনদেন না করার আহ্বান

আগের সংবাদ

হাটে পর্যাপ্ত গরু, দাম চড়া : কেনাবেচা আজ থেকে > শর্ত মানছেন না ইজারাদার > ট্রাক নিয়ে টানাটানি

পরের সংবাদ

হাইকোর্টের আদেশ লঙ্ঘন : অবৈধভাবে ছড়ার বালু তোলায় ক্ষতির মুখে অবকাঠামো-জমি

প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি : শ্রীমঙ্গলের সুমাইছড়ায় অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই ছড়ার (পাহাড়ি খাল) প্রায় এক কিলোমিটার অংশে দুই পাড়ের সরকারি ব্রিজ, বসতবাড়ি, কবরস্থান, শ্মশানঘাট ও ফসলের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একই সঙ্গে এই ছড়ার ইজারার রসিদ দিয়ে শ্রীমঙ্গলের অন্যান্য লিজবিহীন ছড়া থেকেও বালু উত্তোলন করে অবৈধভাবে বিক্রি করে আসছে একটি চক্র।
গতকাল শুক্রবার সকালে শহরের সাগরদিঘি সড়কে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন উপজেলার উত্তর লামুয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. ফরমান মিয়া। ফরমান মিয়ার পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন লামুয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. জমসেদ মিয়া।
ফরমান মিয়া বলেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলার লামুয়া মৌজার সুমাইছড়ায় প্রায় এক কিলোমিটার অংশজুড়ে ৫-৭টি স্থানে বালু তোলা হচ্ছে। এতে লামুয়া-সিরাজনগর গ্রামীণ সড়কের সুমাইছড়া ব্রিজ, লামুয়া কবরস্থান, সোনাছড়া ও সিরাজনগর শ্মশানঘাট, সোনাছড়া চা বাগানের চা-আবাদের ভূমি, দুই গ্রামের কয়েকটি বসতবাড়ি এবং বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ভাঙনসহ মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে। এছাড়া বহন ক্ষমতার অতিরিক্ত বালুবোঝাই ট্রাক চলাচলে গ্রামীণ সড়ক ও ব্রিজের অবকাঠামোগত ক্ষতি হচ্ছে।
কালাপুর সিরাজনগর গ্রামের মো. তাজ মিয়া বলেন, সুমাইছড়া থেকে বালু উত্তোলনে উচ্চ আদালতের আদেশও অমান্য করা হচ্ছে। তিনি বলেন, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য একটি রিট পিটিশন দায়ের করি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ গত ৪ জুন এক আদেশে বালু উত্তোলনের ওপর ৬০ দিনের স্থিতাবস্থা বজায় রেখে ৪ সপ্তাহের মধ্যে জবাব দাখিলের জন্য মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। এর পরেও বালু উত্তোলন বন্ধ না হওয়ায় এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য ও গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে জানানো হয়, লিজের শর্ত ও পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করে নির্বিচারে বালু উত্তোলনে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে ও জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। ফরমান মিয়া জানান, শর্ত ভঙ্গ করে বালু উত্তোলন না করতে বলায় ইজারাদার আবরু মিয়া শ্রীমঙ্গল থানায় তাকেসহ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে চাঁদাবজির অভিযোগ করেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সন্দীপ তালুকদার বলেন, ইতিপূর্বে এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে সরজমিন কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। সার্ভেয়ার পাঠিয়ে ইজারাদারের বালু উত্তোলনের স্থান চিহ্নিত করে দেয়া হবে। তবে তিনি উচ্চ আদালতের কোনো আদেশ এখনো পাননি বলে জানান।
এদিকে এই ছড়া আগে ইজারা পাওয়ায় ওই সময় থেকে এর নামে রসিদ দিয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলার অন্যান্য ইজারাবিহীন পাহাড়ি ছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করাও অভিযোগ উঠেছে। সংবাদ সম্মেলনে মকলিশ মিয়া (রাজাপুর), মো. তাজ মিয়া (সিরাজনগর), ফরমান মিয়া (উত্তর লামুয়া), মো. রাজা মিয়া (লামুয়া), লোকমান আহমেদ (রাজাপুর), মো. জব্বার মিয়া (লামুয়া), জোনাব আলী, রেদোয়ান আহমদ, নিয়ামত উল্লাহ, কুতুব মিয়া, জব্বার মিয়া, লোকমান আহমেদ, মো. সাউদ আলম, মকবুল হাসান, মো. সুরুক মিয়া, মইনুল ইসলামসহ কালাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়