প্রিপেইড মিটার স্থাপনে আর্থিক লেনদেন না করার আহ্বান

আগের সংবাদ

হাটে পর্যাপ্ত গরু, দাম চড়া : কেনাবেচা আজ থেকে > শর্ত মানছেন না ইজারাদার > ট্রাক নিয়ে টানাটানি

পরের সংবাদ

ফুলবাড়িয়ায় স্কুল ভবন নির্মাণে অনিয়ম : ধরলেই খসে পড়ছে ঢালাই

প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ফুলবাড়িয়া প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার কালাদহ ইউনিয়নের বিদ্যানন্দ গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন নতুন ভবনের পিলারের ঢালাই খসে পড়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ৩টি পিলারে হাত দিয়ে ধরলেই খসে পড়ছে ঢালাইসহ বালিমাটি। ইতোমধ্যে পিলারের সিমেন্ট, বালু মিশ্রিত খোয়া উৎসুক জনতা হাত দিয়ে ধরায় অনেকটাই খসে পড়েছে।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গত মঙ্গলবার সকালে নির্মানাধীন স্থাপনা পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদুল করিম। এ সময় উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুব মুর্শেদ, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাতুড়ি নিয়ে পিলারগুলো যাচাই করেন। স্থানীয়রা বলেন, বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণের শুরু থেকেই নি¤œমানের ইট, বালু, সিমেন্ট ও সরকি দিয়ে দায়সারাভাবে কাজ করছেন ঠিকাদার। ভবনটির পাইলিং থেকে শুরু করে প্রতিটি কাজেই ব্যবহার করা হয়েছে নি¤œমানের সামগ্রী। এতে করে যে কোনো সময় স্থাপনাটি ধসে যেতে পারে। এতে আমাদের শিশুরা পড়বে ঝুঁকিতে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আলম মিয়া বলেন, শুরু থেকেই নি¤œমানের রড ও সিমেন্ট দিয়ে কাজ করা হয়। এতে ভবনটি যেমন দীর্ঘস্থায়ী হবে না, তেমনি শিক্ষার্থীদের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে। উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যানন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের চুক্তি করা হয় মেসার্স হৃদয় এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। চুক্তি অনুযায়ী ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের ২৭ জানুয়ারি যা চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়।
কালাদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মাস্টার বলেন, নি¤œমানের কাজের কারণে নির্মাণ শেষ হওয়ার দুদিন পরেই ভবনটি ধসে পড়তে পারত। এতে শিক্ষার্থীও মারা যেতে পারত। আমরা এই ভবন নিয়ে আতঙ্কে ছিলাম। আল্লাহ বাঁচিয়েছেন, এর আগেই ধরা পড়েছে। যারা এই ভবন নির্মাণে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের কঠোর শাস্তি হোক।
অনিয়মের বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রাবেয়া আক্তারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হৃদয় এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি আহসান হাবিবের সঙ্গে মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে পাওয়া গেলেও অনিয়মের কথা শুনে কল কেটে ফোন বন্ধ করে দেন তিনি।
ভবন নির্মাণে অনিয়মের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী মাহাবুব মোর্শেদ বলেন, একটি অভিযোগের ভিত্তিতে আমি এবং ইউএনওসহ আমরা কয়েকজন সরজমিনে পরিদর্শন করেছি। এখানে ভবনের তিনটি কলামে ত্রæটিপূর্ণ কাজ পাওয়া গেছে এবং কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা একটি টিম পাঠাবে। তারা সরজমিনে তদন্ত করে যে সিদ্ধান্ত দেবে সে অনুযায়ী কাজ হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদুল করিম বলেন, ভবনটি পরির্দশন করে রিপোর্ট করা হয়েছে এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজে অনিয়মের জন্য দায়ী সবাইকে শোকজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়