পাগলায় মানববন্ধন : মন্দিরের জায়গা উদ্ধারের দাবি

আগের সংবাদ

স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না যুক্তরাষ্ট্র : মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

পরের সংবাদ

সংসদে ফিরোজ রশীদের প্রশ্ন : প্রধানমন্ত্রী যদি সব করেন মন্ত্রীরা করছেন কি > বিরোধীদের প্রশ্নের জবাব দিলেন স্পিকার

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) বিল ২০২৩ পাসের বিরোধিতা করে ওয়ার্কআউট করেছেন সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্যরা। গতকাল রাতে জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করছিলেন। আ হ ম মুস্তাফা কামাল বিলটি উত্থাপণ করলে বিলটির বিরোধিতা করেন তারা।
বিলটিতে সংসদীয় কমিটির সুপারিশের বাইরে পরিচালকদের মেয়াদ বাড়ানোর ধারা যুক্ত করার অভিযোগ করেন জাতীয় পার্টির এমপিরা। তা বক্তব্যে তুলে ধরেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু। স্পিকার তার বক্তব্য খণ্ডন করে বলেন, এ বিলে কোনো নতুন ধারা আনা হয়নি। নতুন কোনো সংশোধনীও আনা হয়নি। বিলে শুধু ১০ এর ১৫ উপধারার (ক) এর (ক) তে সংশোধনীর কথা বলা হয়েছে। যা সংসদীয় কমিটির রিপোর্টেও উল্লেখ ছিল।
এ সময় কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী একা যদি সবদিক দেখেন তাহলে মন্ত্রী পরিষদ বাদ দিয়ে দেন। তিনি যদি সব করবেন তাহলে আপনারা বসে বসে করতেছেন কি? বিলটির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আগে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্য ব্যাংকগুলো খবরদারি করত, আজ তা উল্টে গেছে, এখন বেসরকারি ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের খবরদারি করে, কে ডাইরেক্টর হবে, কে সহকারী ডাইরেক্টর হবে, কে লোন সেকশনে বসবেন এসব। তাদের কাছে সরকার জিম্মি হয়ে পড়েছে। এখান থেকে আমরা মুক্তি চাই। হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপিদের বিষয়ে কি হয়েছে? কেন তাদের সুবিধা কেন দেবেন? শীর্ষ ৫০ জন ঋণখেলাপি ৫০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। আসলে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা। এই যে আমজাদ, পি কে হালদার, এরা যে টাকা নিয়ে চলে গেছে, এসব তো জনগণের টাকা। এদের যদি আইনের আওতায় না আনা যায় তাহলে দেশ চলবে না। আইনের প্রয়োগ চাই।
তিনি বলেন, টাকা তো একদিনে নেয় না। ব্যাংক অডিট করে না কেন? ব্যাংকের এমডির বেতন, পরিচালকের পিছনে খরচ এত বেশি কেন? স্বতন্ত্র পরিচালক কারা? সব দলীয় লোকজন। এরা ১০ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে ২ কোটি টাকা কমিশন নিয়ে বড় লোক হয়ে গেল, এ যেন আলাউদ্দিনের আশ্চর্য প্রদীপ।
জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম বলেন, বিলটি যখন সংসদে গত ৮ জুন অর্থমন্ত্রী উত্থাপণ করেন তখন দুটি বিষয় ছিল, একটা হচ্ছে উইলফুল ডিফলটার এবং হ্যাবিচ্যুয়াল ডিফলটার। কিন্তু এখানে আজ দেখছি বিলের মধ্যে হ্যাবিচুয়াল ডিফলটার নেই আছে উইলফুল ডিফলটার। তাছাড়া আজকে একটা সার্কুলেশন এসেছে ঋণখেলাপিরা কিস্তির ৫০ শতাংশ যদি দেয় তাহলে তারা ঋণখেলাপিতে নাম থাকবে না। গত তিন মাসে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার কোটি টাকা। এবার বাংলাদেশ ব্যাংক দেখল দেখল এটা যদি না করি তাহলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হবে ১২ হাজার কোটি টাকা হয়ে যাবে। আর টোটাল খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা। আরেকটা বিষয় ১১টি ব্যাংকে ৩৩ হাজার কোটি টাকা রিস্যাফল হয়েছে।
তিনি বলেন, যে আইনটির সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে হবে, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কাটিয়ে উঠতে হবে, পরিচালনা পরিষদকে ব্যাংক পরিচালনার হস্তক্ষেপ থেকে বিরত রাখতে হবে। এর আগে গত ৮ জুন যখন সংসদে বিলটি উত্থাপিত হয়েছিল তখন ১২ বছরের চ্যাপটারটিই ছিল না। যেটা পাস হচ্ছে সেটার সঙ্গে আগেরটার কোনো মিল নেই।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি ঋণখেলাপি হন ব্যাংকের পরিচালনা পর্যদ। সাউথ বাংলা ব্যাংকের ডাইরেক্টর ১ হাজার কোটি টাকা নিয়ে চলে গেল আমেরিকায়, কোনো খবর নেই। দেখা যায় ফলস কাগজপত্র দিয়ে লোন নিয়ে আর দিল না বাইরে চলে যায়। এগুলোর কারণ ব্যাংকের ডাইরেক্টর বা তাদের আত্মীয় স্বজন ও তাদের নিজেরদের যে সমস্ত ব্যবসা সেখানে ঋণ দেয়া হয়েছে। এর ফলে ঋণখেলাপিরা উৎসাহিত হবে। ডাইরেক্টরদের সময় বাড়িয়ে ১২ বছর করলেন, অর্থমন্ত্রী আপনি এদের সময়সীমা আনলিমিটেড করে দেন। যা হবার হবে। যতদিন তারা বেঁচে থাকবে ততদিন ডাইরেক্টর পদে থাকবেন।
পীর ফজলুর রহমান বলেন, অর্থমন্ত্রী ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বলেছিলেন, এদেশে আর খেলাপি আর বাড়বে না। কিন্তু ২০১৭ সালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩, ২০১৮ সালে ৯৩ হাজার ৯১১, ২০২২ সালে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। এটা আমাদের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ। আমাদের মোট ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশই খেলাপি ঋণ। যদিও মানদণ্ড হচ্ছে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ পর্যন্ত সহনীয়।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এখানে ব্যাংকের অনেক আইন পাস হয়। কোন কোম্পানি বা ব্যক্তি জমি রেজিস্ট্রি করল ২ কোট দিয়ে আর ব্যাংকে মটগেজ দিল ২২ কোটি বলে। এভাবে ফাঁকি দিয়ে যদি ব্যাংকের টাকা লুট করে নিয়ে যায় তাহলে দেশ তো রসাতলে যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়