পাগলায় মানববন্ধন : মন্দিরের জায়গা উদ্ধারের দাবি

আগের সংবাদ

স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না যুক্তরাষ্ট্র : মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

পরের সংবাদ

আরণ্যক ফাউন্ডেশন ও আইএফবির সেমিনার : সুন্দরবন-সেন্টমার্টিনে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধের দাবি

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পরিবেশ-প্রতিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হলেও প্লাস্টিক শিল্প স্থাপনের জন্য সহজেই ব্যাংক ঋণ পাওয়া যায়। কিন্তু বায়োডিগ্রেডেবল উপাদান দিয়ে প্লাস্টিকের বিকল্প পণ্য তৈরি করতে গেলে কোনো ঋণ পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ উদ্যোক্তাদের।
গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর পর্যটন ভবনে আরণ্যক ফাউন্ডেশন ও ইনস্টিটিউশন অব ফরেস্টারস বাংলাদেশের (আইএফবি) যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এমন অভিযোগ করেন বক্তারা। ‘প্লাস্টিক পল্যুশন ইন ফরেস্টস এন্ড আদার ন্যাচারাল ইকোসিস্টেম: ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক ওই সেমিনারে দূষণ বন্ধে সুন্দরবন ও সেন্টমার্টিনে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানানো হয়। বক্তারা বলেন, অর্থায়নের অভাবে বিভিন্ন সময়ে নেয়া পরিবেশবান্ধব শিল্পোদ্যোগগুলো মুখ থুবড়ে পড়ছে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, প্লাস্টিকসহ অন্যান্য দূষণ থেকে সেন্টমার্টিনকে সুরক্ষায় নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এসব নীতি বাস্তবায়নে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্যান্য দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এদিকে সরকার এখন সবুজ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে। দূষণ ও অন্যান্য কারণে বাংলাদেশের বিপন্নপ্রায় প্রজাতিগুলো সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছেন বলে দাবি করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, প্লাস্টিক দূষণ কমাতে অবশ্যই সার্কুলার ইকোনমি বাস্তবায়ন করতে হবে। পরিবেশ সচেতন নির্ভর নতুন প্রজন্ম তৈরি করার নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে সবুজ শিল্পোদ্যোগের ক্ষেত্রে কর ছাড়সহ অন্যান্য প্রণোদনা দেয়ার ব্যাপারেও আশ্বাস দেন মো. ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আরণ্যক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রকিবুল হাসান মুকুল। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইনস্টিটিউশন অব ফরেস্টারস বাংলাদেশের (আইএফবি) প্রেসিডেন্ট ও সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ।
এর আগে সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনভায়রনমেন্ট এন্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসাইন ও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক মোস্তফা ইউসুফ। প্রবন্ধ দুটিতে জানানো হয়, ২০০৫ সাল পরবর্তী ১৫ বছরে প্লাস্টিকের ব্যবহার ৫ গুণ বেড়েছে। শুধু ২০২০ সালে বাংলাদেশে ৯ লাখ ৭৭ হাজার টন প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী এসব প্লাস্টিকের মাত্র ৩১ শতাংশ পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে। পৌরসভার ডাম্পিং ও পর্যটকদের প্লাস্টিক উচ্ছিষ্টের কারণে বন ও জলাভূমিতে দূষণ বাড়ছে বলেও জানানো হয়। এছাড়া প্রতি বছর বঙ্গোপসাগরে ৭৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য পড়ছে।
প্রবন্ধে বলা হয়, প্লাস্টিক দূষণ রোধে আন্তর্জাতিক চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ সময়ের আগেই প্লাস্টিক দূষণ রোধের ব্যাপারে করণীয় বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জোরালো করার তাগিদ দেয়া হয় প্রবন্ধে।
প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার এবং পর্যটন অনুরাগী ও উদ্যোক্তা অপু নজরুল। প্লাস্টিক দূষণ রোধে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ট্যুর অপারেটরদের সংযুক্ত করা ও সার্কুলার ইকোনমির প্রচলনের ব্যাপারে মত দেন তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়