যাত্রী কল্যাণ সমিতি : ২৭ জুন সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি

আগের সংবাদ

রাজশাহীতে নজীরবিহীন নিরাপত্তা

পরের সংবাদ

সৈয়দপুরে পাউবোর সেচনালা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জিকরুল হক, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : নীলফামারীর সৈয়দপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সেকেন্ডারি সেচনালা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তিস্তা সেচ প্রকল্পের দিনাজপুর ক্যানেলের ৬নং সেকেন্ডারি সেচনালা এটি। সংগলশী ইউনিয়ন থেকে শুরু করে বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের বোতলাগাড়ীর দোলা পর্যন্ত সাড়ে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেচনালা নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এ কাজ বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, নীলফামারী পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ (পওর) বিভাগ। সেচনালা নির্মাণে নি¤œমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় শুষ্ক মৌসুমে নালায় পানি ছেড়ে দেয়া হলে ¯্রােতের তীব্রতায় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে একাধিক এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, সেচনালার উভয় পাশে ১৫২ সেন্টিমিটার (প্রায় ৫ ফুট) ক্যানেল ডাইকের মাটি কমপক্ষে শতকরা ৮৫ ভাগ কমপেকশন করতে হবে কিন্তু এক্ষেত্রে কিছুই করা হচ্ছে না। ফলে ক্যানেল ডাইকের আলগা মাটি বর্ষাকালের বৃষ্টির পানিতেই ধসে পড়ে যাওয়ার শঙ্কা বিরাজ করছে। তাদের দেয়া তথ্যমতে পানি প্রবাহের ক্যানেলের দুই পাশে পলিথিন দিয়ে সাড়ে ১২ মিলিমিটার ঢালাইয়ের পর ৭৫ মিলিমিটার ঢালাই দিতে হবে। সেক্ষেত্রে সাড়ে ১২ মিলিমিটারের স্থানে ১০ মিলিমিটার এবং ৭৫ মিলিমিটারের জায়গায় ঢালাই দেয়া হচ্ছে ৬০ মিলিমিটারের সামান্য বেশি। একইভাবে সেচনালায় বেড ঢালাইয়েও সিডিউল মানা হচ্ছে না। এতে করে ইঞ্জিনিয়ারিং কৌশলে অনিয়ম করার সুযোগ মিলছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের।
এলাকার বিশিষ্টজন তৈমুর, বাদশা মিয়া, জানে আলম, রবিউল ইসলাম জানান, কাজের সিডিউল মতে ঢালাইয়ের কাজে সিংগেল পাথর ব্যবহার করার কথা। কিন্তু সিঙ্গেল পাথরের সঙ্গে ক্রাশিং পাথর মেশানো হচ্ছে। সিমেন্ট, বালু ও পাথর মেশানোর অনুপাতেও তারতম্য করার অভিযোগ রয়েছে। একভাগ সিমেন্টের সঙ্গে দুই ভাগ বালু ও চার ভাগ পাথর দেয়ার কথা থাকলেও মিকচার মেশিনের মাধ্যমে একভাগ সিমেন্টের সঙ্গে চারভাগ বালু ও ছয়ভাগ পাথর দেয়া হচ্ছে। এছাড়া দুই দশমিক পাঁচ মিলিমিটার আয়তনের বালুর ব্যবহার না করে ঢালাইয়ের কাজে এক দশমিক দুই মিলিমিটার আয়তনের স্থানীয় বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। অভিযোগকারীদের মতে, কর্ম এলাকায় সিটিজেন চার্টার টাঙানোর কথা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ জনগণের জিজ্ঞাসু চোখকে ফাঁকি দিতে তা টাঙায়নি। এমনকি সেচনালা ঢালাইয়ের সময় উপসহকারী প্রকৌশলী, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী উপস্থিত থাকার নির্দেশনা থাকলেও ওইসব কর্মকর্তারা কেউ উপস্থিত থাকছে না। শুধুমাত্র কার্যসহকারী উপস্থিত থেকেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে জানতে কথা হয় কর্ম এলাকায় উপস্থিত পাইবোর ওয়ার্ক অ্যাসিসটেন্ট আজগর আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, স্যাররা চাইলে উপস্থিত থাকতে পারেন, কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তারা উপস্থিত থাকেন না। অভিযোগকারীরা আরো জানান, সেচনালা ঢালাই ও ক্যানেল ডাইক কমপেকশন করার সময় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত না থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজে নয়-ছয় করার সুযোগ পাচ্ছেন। ফলে সেচনালা নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। যার কারণে সরকারের টাকা ব্যয় হলেও তা জনগণের কাজে আসবে না। ব্যয়িত অর্থের পুরোটাই চলে যাবে পানিতে। সেচনালা নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কথা হয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, অনিয়মের বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়