যাত্রী কল্যাণ সমিতি : ২৭ জুন সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি

আগের সংবাদ

রাজশাহীতে নজীরবিহীন নিরাপত্তা

পরের সংবাদ

ল²ীপুর : শাশুড়ি হত্যা মামলায় গৃহবধূ ও পরকীয়া প্রেমিকের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, ল²ীপুর : ল²ীপুরে শাশুড়িকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার দায়ে গৃহবধূ তাহমিনা আকতার ও পরকীয়াপ্রেমিক জসিম উদ্দিনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে সদর উপজেলায় একটি অস্ত্র মামলায় জসিম উদ্দিন (৩৩) নামের এক যুবককে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে একই আদালত। এ মামলায় লোকমান (৪৩) ও সুমন (৩৫) নামের অপর ২ আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম পৃথক এ দুই মামলার রায় দেন। ল²ীপুর জজ আদালতে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, হত্যা মামলায় গৃহবধূ তাহমিনা জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছে। রায়ের সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। অপর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তাহমিনার পরকীয়া প্রেমিক জসিম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অস্ত্র মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জসিম জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছে। রায়ের সময় তিনি আদালতে উপস্থিত হননি।
হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত তাহমিনা রামগঞ্জ উপজেলার সাউদের খিল গ্রামের মফিজুল ইসলামের মেয়ে ও একই উপজেলার রাঘবপুর গ্রামের কবির হোসেনের স্ত্রী। এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত জসিম রাঘবপুর গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে। অস্ত্র মামলায়দণ্ডপ্রাপ্ত জসিম সদর উপজেলার হাজিরপাড়া ইউনিয়নের চরচামিতা গ্রামের মৃত মনছুর আহম্মেদের ছেলে। খালাসপ্রাপ্ত লোকমান চরচামিতা গ্রামের মৃত অজি উল্যার ছেলে ও সুমন একই গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়, তাহমিনা সঙ্গে তার চাচাতো ভাসুর জসিমের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল রাতে তাহমিনা ও জসিম অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। ঘটনাটি তাহমিনার শাশুড়ি রাহেমা দেখে ফেলেন। এতে জসিম তাকে ধাক্কা দিয়ে খাটের ওপর ফেলে দেয়। একপর্যায়ে তিনি চিৎকার করতে গেলে জসিম তাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে ধরে। এসময় তাহমিনা তার শাশুড়ির দুপা চেপে ধরে রাখে। এতে রাহেমা মারা যান। পরে জসিম ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
পরে আশপাশের লোকজন ঘটনাটি টের পেয়ে ঘরে সামনে এসে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পায়। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় পুলিশে খবর দেয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন রাহেমার স্বামী আবু তাহের বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ হত্যা মামলায় তাহমিনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তিনি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ঘটনার ৬ দিন পর ২৭ এপ্রিল হত্যাকারী জসিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ আদালতে সৌপর্দ করে। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত রায় দেন। অন্যদিকে অস্ত্র মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত জসিম সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য খোরশেদ আলম মিরন হত্যা মামলার আসামি।
২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর সদর উপজেলার মান্দারী বাজার থেকে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে নিয়ে মিরন হত্যা মামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ অভিযানে যায়। এ সময় বটতলী গ্রামের মিজি বাড়ির দরজা এলাকার একটি নির্মাণাধীন কাচারি ঘরে বালুর নিচ থেকে দেশীয় তৈরি একটি একনলা বন্দুক, একটি দোনলা বন্দুক, দুটি এলজি ও বন্দুকের ২৬টি কার্তুজসহ বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জসিমসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাখন লাল রায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেন। অপর দুই আসামি পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘশুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত রায় ঘোষণা করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়