যাত্রী কল্যাণ সমিতি : ২৭ জুন সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি

আগের সংবাদ

রাজশাহীতে নজীরবিহীন নিরাপত্তা

পরের সংবাদ

নোয়াখালীতে আ.লীগ নেতা দুলাল হত্যা : প্রকৃত ঘাতকদের নামে মামলা গ্রহণ ও ফাঁসির দাবি

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালী সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. দুলালকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িত প্রকৃত ঘাতকদের নামে মামলা গ্রহণ এবং আসামিদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত রবিবার বেলা ১১টায় নোয়াখালী প্রেস ক্লাব চত্বরে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে আন্ডারচর ইউনিয়নবাসী। এতে পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ২০১১ সালের নির্বাচনে আন্ডারচর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড থেকে ইউপি সদস্য (মেম্বার) নির্বাচিত হন মো. দুলাল। একই ভোটে ৫নং ওয়ার্ড থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনও ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। ওই সময় জসিম উদ্দিন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে চাইলে তার অন্যায় কাজে বাধা দেন দুলাল। সেই থেকে জসিমের সঙ্গে দুলালের বিরোধ তৈরি হয়। সর্বশেষ ২০২২ সালের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন জসিম উদ্দিন ও দুলাল। তবে জসিম উদ্দিন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নিজের ভাই-ভাতিজা এবং আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে পুনরায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন। এতে একাধিকবার চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন দুলাল। যার কারণে দুলালকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত দুলালের বড় ছেলে মো. আজিজ বলেন, ‘গত ২৫ মে চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন তার বাড়িতে একটি সালিশ বৈঠকে আমার বাবাকে ডাকেন এবং তার লোক দিয়ে আমার বাবাকে গুলি করে হত্যা করেন। আমার বাবা মৃত্যুর আগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার হত্যাকারী জসিম চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের নাম বলে গেছেন। জসিম চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার বডিগার্ড সুমন, মো. সবুজ, ভাতিজা ফিরোজ আলম, ভাই ফারুক, ভাগিনা মমিন, তার সহযোগী ইউসুফ, সেলিম ও আরেক বডিগার্ড নুর মোহাম্মদ রবিন আমার বাবাকে গুলি করে হত্যা করে।’
আজিজ বলেন, ‘বাবা গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আমাদের দাদিকে দিয়ে তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি জিডি নেয় পুলিশ। গত ২৯ মে রাতে বাবার মৃত্যু হয়।

এরপর স্থানীয় চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করতে যাই। তবে পুলিশ আমার মামলা নেয়নি। আদালতে গেলেও আমার মামলা নেয়নি। পরবর্তী সময়ে আগের জিডিকে মামলা হিসেবে রেকর্ড করে পুলিশ। যেখানে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়। এতে আমার বাবার প্রকৃত খুনিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। আমি আমার বাবা হত্যার বিচার চাই।’
মানববন্ধনে স্থানীয়রা বলেন, ২০২০ সাল থেকে আন্ডারচর ইউনিয়নে ৭টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যেকটি হত্যার কারণ হলো আধিপত্য বিস্তার। হত্যাকারীরা রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। হত্যার বিচার না হওয়ায় ক্রমেই হত্যাকারীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে দুলালসহ অন্যান্য হত্যার রহস্য উদঘাটন করে সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে আসামিদের ফাঁসির দাবি জানান এলাকাবাসী।
এদিকে অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমিও চাই দুলালের খুনিদের শাস্তি হোক। কিন্তু একটি চক্র ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসাতে চাচ্ছে। আমি কোনোভাবেই এই হত্যার সঙ্গে জড়িত নই।’
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘তারা (দুলালের পরিবার) আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। এরপরেও এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। কিন্তু ওদের অভিযোগ, এ ঘটনায় জিডি হয়েছে, মামলা হয়নি। কিন্তু আমিতো মামলাই নিয়েছি, জিডির চেয়ে বড়টাই নিয়েছি।’
মামলার বাদীর প্রধান অভিযোগ তো স্থানীয় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে, তাহলে মামলায় চেয়ারম্যানকে আসামি করা হয়নি কেন? এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, ‘ওই অভিযোগেতো চেয়ারম্যানকে আসামি করা হয়নি, অভিযোগটি অজ্ঞাত হিসেবে ছিল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়