প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ ৫৪৬ রানের বড় ব্যবধানে জিতে ইতিহাস গড়েছে। ঢাকায় টেস্টের তৃতীয় দিনে আফগানিস্তানকে ৬৬২ রানের লক্ষ্য দিয়ে গত শনিবার চতুর্থ দিনে ১১৫ রানে গুঁড়িয়ে লিটন বাহিনী ৫৪৬ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ জিতেছে, যা নিজেদের ২৩ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়। আর টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৬ বছরের ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম জয়। টাইগারদের এ সাফল্যগাথা ক্রিকেট ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। সোনার ছেলেদের নিপুণ ক্রিকেটশৈলীতে আমরাও উল্লসিত। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে আমাদের প্রাণঢালা অভিনন্দন। ২০০০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৩৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জিতেছে ১৮টি। জয়ের ম্যাচগুলোতে সবচেয়ে প্রভাববিস্তারী পারফরম্যান্স দেখা গেল আফগানিস্তানের বিপক্ষে এবারের টেস্ট ম্যাচে। ১৯৫০ সালের পর পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচের সূচি নির্ধারিত হয়। টানা পাঁচ দিন খেলার নিয়ম চালু হওয়ার পর থেকে রেকর্ড ধরা হলে ৫৪৬ রানের জয় বিশ্বরেকর্ড। আধুনিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় জয়টি এলো টাইগারদের দখলে। চলতি শতাব্দীতেও এটি সবচেয়ে বড় জয়। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই টেস্টে নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মুমিনুল হকের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৬৬২ রানের বিশাল লক্ষ্য দেয় স্বাগতিকরা। সেই রান তাড়ায় সফরকারীরা মাত্র ১১৫ রানেই থেমে যায়। শুধু রানের ব্যবধানেই নয়, বাংলাদেশের স্মরণীয় জয়ের ম্যাচে টাইগাররা রেকর্ড বইয়ে পৃথক একাধিক ক্ষেত্রে নাম তুলেছে। দুই ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ৪৩২ বল খেলতে পেরেছে আফগানিস্তান। ২০১৯ সালে আফগানদের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল। সেই আফগানিস্তানের বিপক্ষেই এবারের জয় এক নতুন মাইলফলক। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আফগানদের বিপক্ষে টাইগারদের এই অনন্য রেকর্ড জয়ের পেছনে বড় অবদান দলের পেসারদের। এই ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের তিন পেসার তাসকিন, এবাদত ও শরিফুল। যা কোনো টেস্টে বাংলাদেশি পেসারদের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড। আগেরটি ছিল ২০২২ সালে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে। ওই খেলায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩ উইকেট নিয়েছিলেন টাইগার পেসাররা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে শরিফুল ও এবাদত ৫টি করে এবং তাসকিন ৪ উইকেট নেন। ব্যাটার-বোলারদের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে টেস্টে ইতিহাস গড়া জয় ছিনিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। টাইগারদের এত বড় অর্জনে ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম ইনিংসে ১৪৬ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১২৪ রান করে তিনি জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। এছাড়া সেঞ্চুরি করেছেন মুমিনুল হক। ফিফটি তুলে নিয়েছেন জাকির হাসান, মাহমুদুল হাসান জয় ও লিটন দাস। দুই ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্ত করেছেন ২৭০ রান। আফগানিস্তান প্রথম ইনিংসে ১৪৬ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে করেছে ১১৫ রান। দুই ইনিংস মিলিয়ে ২৬১ রান। আফগানিস্তানের ব্যাটাররা দুবার ব্যাট করার সুযোগ পেয়েও টেক্কা দিতে পারেনি শান্তকে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিগত কয়েক বছরে সমীহযোগ্য উচ্চতায় পৌঁছেছে, তা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমরা বিশ্বাস করি, এই জয় টাইগারদের ক্রিকেট জ্ঞান-ধ্যান, সাহস, টেকনিক, আত্মবিশ্বাস ও দায়-দায়িত্ব অনেক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্ব ক্রিকেটেই বাংলাদেশ এখন এক দুর্নিবার শক্তি। ক্রিকেটাররা যে বিশ্ব দরবারে শাসন করতে প্রস্তুত হচ্ছে, তাও বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এই জয়ের আনন্দে আত্মহারা হলে চলবে না, আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। এই আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগানোর দৃঢ় সংকল্প নিতে হবে। জয়ের ধারা অব্যাহত থাকুক- এই প্রত্যাশা ও শুভকামনা আমাদের।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।