জিএম কাদের : স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশে সাংবাদিকতা অনিরাপদ

আগের সংবাদ

রাজশাহীতে লিটনকে টেক্কা দেয়ার মতো প্রতিদ্ব›দ্বী নেই

পরের সংবাদ

বিশ্ব বাবা দিবস : ভালো থাকুক সব বাবা

প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বের প্রায় দেশই জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বাবা দিবস পালন করে আসছে। সে হিসাবে এ বছর ১৮ জুন বিশ্ব বাবা দিবস। বিশ্বের অনেক দেশেই বাবা হচ্ছেন পরিবারের প্রধান। পরিবারের প্রধান হিসেবে নানা দায়িত্বের বোঝা থাকে তার কাঁধে। বাবা হওয়ার মতো গুরু দায়িত্বের কারণে তাকেই সইতে হয় বাইরের সব রকম যন্ত্রণা। আবার ঘরের ব্যাপারগুলোও তাকে ভুলে থাকলে চলে না। ছেলে-মেয়েদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের নিরাপত্তা দেয়ার পাশাপাশি তাকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার বিষয়টিও তার নজরে রাখতে হয়। পরিবারের প্রধান হিসেবে সব ভালো-মন্দের দায়দায়িত্ব তাকেই নিতে হয়। বলা যায় মা যদি হয় মধুবৃক্ষ তবে বাবা হচ্ছেন পরিবারের প্রধান নির্বাহী বা বটবৃক্ষ। মা যদি হয় নদী তবে বাবা হচ্ছেন নৌকার মাঝি।
বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা প্রকাশের জন্য বিশেষ কোনো দিনের প্রয়োজন নেই। বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসার অবিরাম ধারা বয়ে চলে বছরের প্রতিটি দিন। জীবনের ঘানি টানতে টানতে বাবা এক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়েন, বয়সের ভারে ন্যুব্জ হন, বার্ধক্য তাকে গ্রাস করে। তখন তিনি হয়ে পড়েন অনেকটা অসহায়, দুর্বল। রোগ ব্যাধি তাকে আরো বিপর্যস্ত করে তোলে। এ সময় বাবা চান সন্তান যেন তার পাশে থাকে সব সময়, যেমন তিনি ছিলেন সন্তানের পাশে তার সব প্রয়োজনে পাশে, যখন সন্তান ছিল শিশু। সন্তানের কাছ থেকে অবহেলা কিংবা দুর্ব্যবহার পেলে বাবার হৃদয় ভেঙে চুরমার হয়ে যায়, আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠে, যখন তার প্রিয় সন্তান তাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠায়।
পরিবার হলো অন্যতম সামাজিক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম শিক্ষক হচ্ছেন মা-বাবা। এ জন্য বলা হয়ে থাকে- একজন সন্তানের জন্য পারিবারিক সুশিক্ষাটি খুব বেশি জরুরি এবং সেটি অবশ্যই আদর্শ শিক্ষা। প্রাতিষ্ঠানিক ও ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা পরিবার থেকেই দিতে হয়। আর এর সঙ্গে যোগ হবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ডিগ্রি। গুণীজনরা বলেন, পরিবারই হচ্ছে শিশুর প্রথম বিদ্যাপীঠ। মা-বাবার কাছেই শিশুর শিক্ষা-দীক্ষা শুরু। মূলত শিশুরা বাবা-মায়ের কাছেই লেখাপড়া, নৈতিকতা, আদর্শ বা দেশপ্রেম সম্পর্কে জানতে শুরু করে। তাই মা-বাবাই হচ্ছেন শিশুর প্রথম আদর্শ শিক্ষক। কিংবা মা-বাবাকেই শিশুরা তাদের প্রথম আদর্শ গুরু হিসেবে মানতে শুরু করে। আর সে কারণে শিশুর বেড়ে ওঠায় মা-বাবার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বা প্রয়োজন। একটা শিশুর বেড়ে উঠতে সাধারণত বাবা-মা দুজনের অবদানই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত বাবারা বেশিরভাগই ক্ষেত্রেই পরিবারের অর্থনৈতিক চাপটা সামাল দিয়ে থাকেন, ঘর সামলানোর কঠিন কাজে থাকেন মায়েরা। তবে গবেষকরা জানিয়েছেন, যেসব বাবা তার সন্তানের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকেন তাদের সন্তানরা বেশি সুখী এবং আত্মবিশ্বাসী বোধ করেন। সন্তানকে আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে চাইলে বাবাকে নিতে হবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। যদিও আশার কথা এই যে, বর্তমানে অনেক বাবা পরিবারে সন্তান লালন-পালনে সরাসরি অবদান রাখছেন। মা-বাবা কর্মজীবী হলে শেয়ার করেই শিশুর যতœ নিতে হয়।
বাবা, পরিবারের বটবৃক্ষ। তপ্ত দায়িত্বগুলো কাঁধে তুলে নিয়ে পরিবারকে সারাজীবন ছায়া দিয়ে যায়। বাবারা রাগ করে না, তাদের কষ্টগুলো শুধু হাওয়ায় মিশে যায়, অনেকটা আড়ালে আবডালে। কেউ তার খবর রাখে না, খবর রাখার প্রয়োজন বোধ করে না। শার্ট বা পাঞ্জাবির হাতায় কপালের ঘাম মুছতে মুছতেই চলে যায় বাবাদের বেলা। নিজে ছেঁড়া কাপড় পরেও সন্তানের জন্য ভালো কাপড়টি কিনতে কার্পণ্য করেন না। বড়জোর ক্ষণিকের তরে কিছুটা গম্ভীরমুখে বসে থাকতে পারে। তার তো ভেঙে পড়লে চলবে না। যার কাছে ছায়া নেই, শুধু সেই বোঝে কী নিদারুণ তপ্ত দিবস এই পৃথিবীর, কত রুদ্ধশ্বাস দায়িত্বে ভরা এই বন্ধুর পথ। বিচ্ছেদের যন্ত্রণা কত ভয়ংকর সেসব সন্তানেরাই জানে। বাবারা সব সময় তাদের সন্তানের জন্য নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করে দিতে পছন্দ করেন। যুগে যুগে বিভিন্ন বাবা তাদের সন্তানের জীবনকে সুন্দর করার জন্য তাদের নিজেদের জীবনকে বিসর্জন দিয়েছেন। তাদের দৈহিক পরিশ্রম এবং মানসিক পরিশ্রম দিয়ে যে অর্থ উপার্জন করেছেন তা সম্পূর্ণই ব্যয় করেছেন তাদের সন্তানের মঙ্গলের জন্য। বাবাদের কোনো দিবস নেই, বাবাদের জন্য কোনো দিবসের প্রয়োজন নেই। বাবাদের জন্য নিরন্তর ভালোবাসা। ভালো থাকুক সব বাবা, আড়ালে-আবডালে, এপারে-ওপারে, ইহকাল ও পরকালে, সবসময়।

মো. জিল্লুর রহমান. গেন্ডারিয়া, ঢাকা।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়