কাগজ প্রতিবেদক : ৭২ হাজার টন সার আত্মসাতের ঘটনায় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) আদালতে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় উষ্মা প্রকাশ করছেন হাইকোর্ট। সার আত্মসাতের ঘটনায় বিসিআইসিকে দুই মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরো সময় আবেদন করলে হাইকোর্ট উষ্মা প্রকাশ করেন। মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ মন্তব্য করেন, ‘টাকা কি বাতাসে খেয়েছে? কারা এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত, কারা এত টাকা আত্মসাৎ করেছে! সুনির্দিষ্ট করে তাদের নাম দিন।’ দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের বিরুদ্ধে আমাদের (হাইকোর্ট) অবস্থান কঠোর। কোনো ছাড় দেয়া হবে না। প্রয়োজনে কোর্ট থেকে সরাসরি জেলে পাঠিয়ে দেব।’
এ সময় আদালতে বিসিআইসির পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট মোল্লা কিসমত হাবিব। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট খুরশিদ আলম খান। পরে আদালত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৯ জুলাই সময় নির্ধারণ করে আদেশ দেন।
‘৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাৎ’ শিরোনামে গত ৫ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনের বলা হয়, সরকারিভাবে আমদানি করা ৭২ হাজার টন রাসায়নিক সার বন্দর থেকে খালাসের পর গুদামে পৌঁছে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছে পরিবহনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্স। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৫৮২ কোটি টাকা। মেসার্স পোটন ট্রেডার্স সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। কামরুল আশরাফ খান সার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের (বিএফএ) সভাপতিও। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, তিনিই মূলত দেশে সারের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে এনে ওইদিন(৫ জানুয়ারি) স্বপ্রণোদিত হয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। রুলে সার আত্মসাতের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ৬০ দিনের মধ্যে এ অভিযোগের অনুসন্ধান করে দুদককে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।