প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের আন্দোলন দুদিন স্থগিত : প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার আশ্বাস বিএসএমএমইউ উপাচার্যের

আগের সংবাদ

আনন্দে পাঠ উৎসবে মূল্যায়ন : ষষ্ঠ ও সপ্তমে চলছে ‘ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন উৎসব’, ঈদুল আজহার পর মূল্যায়নের বিশ্লেষণ

পরের সংবাদ

তিস্তার ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বলা হয় বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। কারণ এই দেশের বুক চিরে বয়ে গেছে প্রায় ৭০০ নদী। আর এই নদীগুলোর দেশের অর্থনীতি বৃদ্ধিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তবে সব নদী যে দেশের অর্থনীতি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে তা কিন্তু নয়। কিছু নদী সঠিক পর্যবেক্ষণের ও নিয়ন্ত্রণের অভাবে দেশের অর্থনীতি বৃদ্ধির বিপরীতে অর্থনীতিকে হ্রাস করছে। এমন একটি অনিয়ন্ত্রিত ও পর্যবেক্ষণহীন নদী তিস্তা। এটি বাংলাদেশের উত্তরাংশ কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলা দিয়ে প্রবাহিত। যা ওই অঞ্চলের জনপদের কাছে ভয়ংকর তিস্তা নামে পরিচিত। আর এর ভয়ংকর হওয়ার পেছনে এর নিষ্ঠুর ভাঙনই দায়ী। বর্ষা মৌসুমে দেখা যায় তিস্তার নিষ্ঠুরতা। বর্ষাকাল যেন তিস্তা পাড়ের মানুষের কাছে এক সর্বনাশের সময়। যে সময় তাদের তিস্তার ভাঙনে শিকার হয়ে ভিটামাটি ছেড়ে চলে যেতে হয় এক অনিশ্চিত ঠিকানায়। সব কিছু হারিয়ে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য বেছে নিতে হয় কোনো এক রাস্তার পাশ কিংবা কোনো পরিত্যক্ত স্থান। কাটাতে হয় দুর্বিষহ জীবন। এ যেন সব কিছু হারিয়ে নতুন করে বাঁচার চেষ্টা। পেটে খিদে আর চোখে জল নিয়ে চেয়ে থাকতে হয় রাস্তার দিকে এটা ভেবে যে, কখন কে আমাদের জন্য কোনো খাবার কিংবা নগদ অর্থের অনুদান নিয়ে আসবে।
তিস্তা পাড়ের মানুষের এই অসহনীয় কষ্ট ও দুর্বিষহ জীবনের পরিত্রাণ কোথায়? কী করলে তারা পাবে তাদের ভিটামাটি রক্ষা করার উপায়?
এমন সব প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় প্রশাসন চাইলেই তিস্তা পাড়ের মানুষের এই দুর্বিষহ জীবন থেকে পরিত্রাণ দিতে পারে। এ জন্য নিতে হবে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ। যার মধ্যে অন্যতম পানি নিয়ন্ত্রণ। তিস্তা নদীর ভাঙনের জন্য সব থেকে বেশি দায়ী অনিয়ন্ত্রিত পানি প্রবাহ। তিস্তার পানি প্রবাহে লক্ষ করা যায় এটি বর্ষাকালে পানিতে থাকে টইটম্বুর। যা ভাঙন সৃষ্টির বড় কারণ। আবার দেখা যায় গ্রীষ্মকালে তিস্তায় পানি শূন্যতা। যার ফলে তিস্তা পাড়ের মানুষ পানি অভাবে ফসল ফলাতে পারে না। যা ওই অঞ্চলের মানুষের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে খারাপ প্রভাব ফেলে। এমন অবস্থায় তিস্তা নদীর পানি নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। আর যেটি তিস্তা চুক্তির মাধ্যমে অনায়াসে করা সম্ভব।
আবার যেহেতু বর্ষাকাল তিস্তার ভাঙনের প্রধান সময়। যদি বর্ষাকাল আসার পূর্বেই তিস্তার পাড়কে (দুই কিনারা) ভালো করে বেঁধে নেয়া হয় তাহলে হয়তো বর্ষায় তিস্তা ভয়ংকর ভাঙন রোধ হবে।
তাই তিস্তার ভাঙন রোধে বর্ষার পূর্বেই অর্থাৎ শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার কিনারা ব্লক দ্বারা বেঁধে পাড় নিয়ন্ত্রণে নেয়া উচিত।
এছাড়া যেহেতু তিস্তা একটি স্বল্প গভীর ও অতি স্রোতের নদী। আর এই অতি স্রোতের কারণেই তিস্তার ভয়ংকর ভাঙন। তাই স্রোতকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই তিস্তার ভাঙন রোধ করা সম্ভব। এজন্য স্বল্প গভীর তিস্তাকে যদি গভীর করা হয় তাহলে পানি ধারণ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় এর স্রোত কমে যাবে। যার ফলে স্রোত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। এতে নদী ভাঙন রোধ পাবে।
এমন অবস্থায় তিস্তার ভয়ংকর ভাঙনের জন্য যখন তিস্তা পাড়ের মানুষ পার করছে দুর্বিষহ জীবন তখন তাদের এই জীবন থেকে পরিত্রাণ দিতে প্রশাসনের উচিত উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা, অন্যথায় তাদের এই দুর্বিষহ জীবন পরিণত হবে অতি দুর্বিষহে। যা একদিকে যেমন প্রভাব ফেলবে দেশের অর্থনীতিতে, অন্যদিকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে দেশের উন্নয়ন ও দেশের মানুষের উন্নত জীবন ধারাকে।

মোহাম্মদ শাকিল আহমেদ : শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়