হাসপাতালে খালেদা জিয়া

আগের সংবাদ

অপরাধের স্বর্গরাজ্য রোহিঙ্গা ক্যাম্প

পরের সংবাদ

বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকরা : সমাজসেবা অফিসে অসংখ্য অভিযোগ, মিলছে না প্রতিকার

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ইসমাইল হোসেন বাবু, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) থেকে : ভেড়ামারায় একটি চক্র বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও বিধবা ভাতার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ বিষয়ে সমাজসেবা অফিসারের কার্যালয়ে অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়েছে। দরিদ্র মানুষ ভাতার টাকা না পেয়ে ইউএনওর অফিস ও সোনালী ব্যাংকের সামনে কান্নাকাটি করে খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন।
উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কালাম বলেছেন, আমার ওয়ার্ডের ৬-৭ জন বয়স্ক ভাতাগ্রহীতার টাকা প্রতারক চক্র নানা প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে।
ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি আবুল হোসেন, মসজিদের ইমাম আসাদুল, আব্দুল জলিল, অসহায় দলিমন নেছাসহ কেউ বাদ যাননি প্রতারক চক্রের ফাঁদ থেকে।
সরজমিন উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের কার্যালয়ে প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে টাকা হারিয়ে অসহায় মানুষের আর্তনাদ শোনা গেছে। তারা বিভিন্ন অভিযোগ দিচ্ছেন অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার নেই।
বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি গ্রাম থেকে ছুটে আসেন মেনি খাতুন। তিনি বলেন, ভাতার বইটি বাতিল হওয়ার ভয়ে মোবাইলে আসা গোপন পিন নম্বরটি জানিয়ে দিই। পরে টাকা তুলতে গিয়ে দেখি আমার টাকা তুলে নেয়া হয়েছে।
একইভাবে প্রতারণার শিকার হয়ে বিধবা ও বয়স্ক ভাতার টাকা খুইয়েছেন জুনিয়াদহ ইউনিয়নের পরানখালী ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভানু খাতুন, জোহরা খাতুন, ববিতা আক্তার, ভেড়ামারা পৌরসভার বামনপাড়া গ্রামের দুলাল শেখের স্ত্রী জেলি খাতুন, বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামের হাসানুদ্দিনের ছেলে প্রতিবন্ধী আনিছুর রহমান, ধরমপুর ইউনিয়নের রশিদিপাড়ার খোদাবক্সের স্ত্রী শাহারা খাতুন, মোকারিমপুর ইউনিয়নের গোলাপনগর গ্রামের প্রতিবন্ধী ইউনুস খান, বিধবা রাবেয়া খাতুন, বাহিরচর ইউনিয়নের ১৬ দাগ গ্রামের ইয়াকুব মৌলভীসহ শতাধিক অসহায় মানুষ।
সূত্র জানায়, ব্রিলিয়ান্ট নামে একটি অ্যাপের মোবাইল নম্বর দিয়ে ওই প্রতারকরা ভাতাগ্রহীতাদের ফোন দিয়ে বিকাশ বা অন্যান্য এজেন্টের পিন নম্বরটি সংগ্রহ করে টাকা তুলে নিচ্ছে। পরে ওই নম্বরে ফোন করে আর কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। মোকারিমপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওয়াহিদুল মেম্বার বলেছেন, আমার ওয়ার্ডের অসহায় সুফিয়া বেগম, জোসনা খাতুনসহ আরো ৭-৮ জনের ভাতা প্রতারক চক্র নানা প্রলোভন দেখিয়ে পিন নম্বর সংগ্রহ করে তুলে নিচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। ভেড়ামারা উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ভেড়ামারা উপজেলায় বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ৭ হাজার ৮১৮ জন, বিধবা ভাতা পাচ্ছেন ৩ হাজার ২১৬, প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন ৪ হাজার ৮০৫, হরিজন ভাতা পাচ্ছেন ৩৫, হিজড়া ১, প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি পাচ্ছেন ৭৮ এবং হরিজন ও বেদে জনগোষ্ঠী ভাতা পাচ্ছেন ১৪ জন।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আবু নাসের বলেন, বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের ভাতার টাকা একটি প্রতারক চক্র তুলে নিচ্ছে এমন শতাধিক অভিযোগ পেয়েছি। আমরা লিখিতভাবে উপজেলা প্রশাসন, থানা এবং সামাজিক নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে পাঠিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে মাসিক সমন্বয় সভাতেও আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু এখনো কোনো প্রতিকার মেলেনি। সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে এলাকায় মাইকিং করার জন্য চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়