সংসদে বিল উত্থাপন : আমানত সুরক্ষা ট্রাস্ট তহবিল গঠন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক

আগের সংবাদ

খুলনা-বরিশালে ‘উন্নয়ন’ ম্যাজিক : খুলনার উন্নয়ন ভাবনা ও ব্যক্তি ইমেজেই খালেকের বাজিমাত

পরের সংবাদ

বৃদ্ধাশ্রমে মেসি!

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাতার বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি ইতোমধ্যেই পিএসজির হয়ে শেষ মৌসুম খেলে ফেলেছেন। আগামী ৩০ জুনের পর থেকে মেসি এবং পিএসজির মধ্যে কোনো সম্পর্ক থাকবে না। আগামী জুলাইয়ে বিশ্বকাপজয়ী মহাতারকা নাম লিখাবেন মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে। লিগটি স্বল্প পরিচিত হলেও এই লিগে তারকা ফুটবলারই নিজেদের শেষ বয়সে খেলেছেন। ক্যারিয়ারের শেষ মুহূর্তে তারকা ফুটবলাররা এমএলএসে নাম লেখান বিধায় যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল লিগটিকে অনেকেই বৃদ্ধাশ্রম বলে আখ্যায়িত করেন। সেই হিসেবে ফুটবল থেকে অবসর নেয়ার আগেই বৃদ্ধাশ্রমে গেলেন মেসি।
পিএসজির সঙ্গে মেসির সম্পর্কচ্যুতি নিশ্চিত হলেও মেসি কাগজে-কলমে এখনো পিএসজির খেলোয়াড়। ৩০ জুন মেসি-পিএসজির চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি ফ্রি এজেন্টে পরিণত হবেন এবং অন্য কোনো ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারবেন। মেসি আগামী জুলাইয়ের প্রথম দিকে ইন্টার মায়ামির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলেও ক্লাবটির জার্সি গায়ে মাঠে নামতে পারবেন না ২১ জুলাইয়ের আগে। তাছাড়া ক্লাবের হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপনের জন্যও অপেক্ষায় থাকতে হবে মায়ামি সমর্থকদের।
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক তার সাবেক ক্লাব বার্সেলোনায় ফিরতে চাইলেও বার্সার অর্থনৈতিক দৈনতার কারণে তা আর হয়নি। তাকে দলে ভেড়াতে অন্য খেলোয়ারদের বিক্রি কিংবা বেতন কমানোর সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন তিনি। কিন্তু বার্সায় না গেলেও আল হিলালের বছরে ৬০০ মিলিয়ন ইউরোর লোভনীয় প্রস্তাবও ছিল তার কাছে। তবে মায়ামিতে যাওয়ার কারণে ইউরোপের সবচেয়ে বড় স্পোর্টসওয়ার ব্র্যান্ড অ্যাডিডাসের লভ্যাংশের একটা অংশ মেসি পাবেন। এছাড়া এমএলএস দেখতে যত মানুষ অ্যাপল টিভি সাবস্ক্রাইব করবেন এবং তা থেকে যে মুনাফা হবে সেটারও একটা অংশ পাবেন মেসি।
যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল লিগে মেসিই প্রথম বড় নাম নয়। সবার আগে যুক্তরাষ্ট্রের

ফুটবলে নাম লেখান ব্রাজিলের প্রয়াত কিংবদন্তি পেলে। তিনি ১৯৭৫
সালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সান্তোস ছেড়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ক্লাব কসমসে। পেলের উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবলকে দারুণ জনপ্রিয় করে তোলে। তবে তখন মেজর সকার লিগ নামে কোনো ফুটবল লিগ যুক্তরাষ্ট্রে ছিল না।
ফুটবল খেলা সারা বিশ্বে ‘ফুটবল’ নামে পরিচিত হলেও যুক্তরাষ্ট্রে পরিচিত ‘সকার’ নামে। অন্যান্য খেলার তুলনায় সকার বা ফুটবলের জনপ্রিয়তা যুক্তরাষ্ট্রে তুলানমূলকভাকে অনেকটাই কম। তবে খেলাটির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপের পর। কেননা ১৯৯৫ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে এমএলএস। যদিও প্রথম আসরে কর্তৃপক্ষের যথেষ্ট লোকসান হয়েছিল, তবে পরবর্তীতে জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর থেকে এমএলএস কর্তৃপক্ষকে আর লোকসান গুনতে হয়নি। আর এই জনপ্রিয়তার মূলে ছিলেন ডেভিড বেকহ্যাম, অঁরি, কাকা, জেরার্ড, পিরলোদের মতো তারকারা।
এমএলএসের ক্লাব লস অ্যাঞ্জেলস গ্যালাক্সিতে ২০০৭ সালে যোগ দেন ডেভিড বেকহ্যাম। এই ক্লাবটির হয়ে তিনি ২০১২ সাল পর্যন্ত খেলেছেন। তিনিই ছিলেন প্রথম ইংলিশ তারকা ফুটবলার, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল লিগে নাম লিখিয়েছেন। বেকহ্যাম বর্তমানে লিওনেল মেসির ক্লাব ইন্টার মায়ামির একটা অংশের মালিক। লস অ্যাঞ্জেলস গ্যালাক্সিতে তার বার্ষিক মূল বেতন ছিল ৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার এবং ক্লাবটির লভ্যাংশের একটি অংশও তাকে দেয়া হতো। বেকহ্যামের পর এমএলএসের নিউইয়র্ক রেড বুলসে যোগ দেন আর্সেনাল ও ফরাসি তারকা থিয়েরি অঁরি। তিনি টানা ৫ বছর ক্লাবটির হয়ে খেলেন। প্রথম মৌসুমে ক্লাবের জন্য তেমন কিছু করতে না পারলেও পরের চার মৌসুমে অঁরি ছিলেন তার সর্বোচ্চ ছন্দে। তিনি থাকাকালে ৩ বার এমএলএসের সেরা একাদশে তার দল জায়গা করে নিলেও লিগ শিরোপা জিততে পারেনি একবারও।
এমএলএসের ইতিাহাসে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া খেলোয়াড় ছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা কাকা। তার পারিশ্রমিক ছিল ৭ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি ২০১৫ সালে অরলান্ডো সিটির হয়ে সকার লিগ ক্যারিয়ার শুরু করেন। তিনি এমএলএসে যোগ দেয়ার পর লিগটির জনপ্রিয়তা অনেক বেড়ে যায়। টানা তিন মৌসুমে ক্লাবটির হয়ে ব্রাজিলিয়ান এই কিংবদন্তির গোল ও অ্যাসিস্ট সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ২৪ ও ২২টি।
স্প্যানিশ গোলমেশিন খ্যাত ডেভিড ভিয়া এমএলএস ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০১৫ সালে। তিনি ২০১৮ সালে তার এমএলএস ক্লাব নিউইয়র্ক সিটি এফসিকে বিদায় জানিয়ে পাড়ি জমান জাপানের লিগে। ক্লাবটির হয়ে ভিয়ার পারফর্ম্যান্স ছিল অসাধারণ। ১২৪ ম্যাচে তিনি গোল করেছেন ৮০টি এবং সেই সঙ্গে ছিল ২৬টি অ্যাসিস্টও। বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা মেজর লিগ সকারের ‘মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার’ ছিলেন ২০১৬ সালে এবং দুইবার জায়গা করে নিয়েছিলেন লিগের সেরা একাদশে।
ইতালিয়ান কিংবদন্তি আন্দ্রে পিরলো নিউইয়র্ক সিটি এফসিতে যোগ দিয়েছিলেন স্প্যানিশ স্ট্রাইকার ডেভিড ভিয়ার সঙ্গে। মেজর লিগ সকার ইতিহাসের অন্যতম বড় নাম হলেও উল্লিখিত অন্য কিংবদন্তিদের তুলনায় পিরলো এই লিগে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি। তিন মৌসুমে ক্লাবটির হয়ে পিরলো ৬১টি ম্যাচ খেলেছিলেন, মাঝমাঠের এই কিংবদন্তি এই সময়ে করেছেন মাত্র ১টি গোল এবং ১৮টি অ্যাসিস্ট। ২০১৭ সালে মেজর লিগ সকারকে বিদায় জানান পিরলো।

:: শাহাদাত হোসেন কিফাত

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়