শাহজালালে ১২ কোটি টাকার কোকেনসহ ভারতীয় গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

খুলনায় খালেকের হ্যাটট্রিক, বরিশালে খোকন : খুলনায় শান্তিপূর্ণ ভোট, উপস্থিতি কম > তালুকদার আবদুল খালেক ১,৫৪,৮২৫ ভোট, আবদুল আউয়াল ৬০,০৫৪ ভোট

পরের সংবাদ

জীবিত হওয়ার আশা : খাটের নিচে লাশ রেখে স্বামী ও ৪ মেয়ের ছয় দিন বসবাস!

প্রকাশিত: জুন ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি : মনোহরদী পৌর এলাকায় মৃত স্ত্রী পুনরায় জীবিত হওয়ার আশায় মরদেহ খাটের নিচে রেখে খুব স্বাভাবিকভাবেই ৬ দিন বাড়িতে বসবাস করছিলেন সাবেক প্রাথমিক শিক্ষক মোক্তার উদ্দীন তালুকদার (৬৮) ও তার ৪ মেয়ে। পরে লাশ পঁচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গত শনিবার রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে খাটের নিচ থেকে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মনোহরদী পৌরসভা বাজারের পাশেই নিজেদের বাড়িতে বসবাস করতেন অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক মোক্তার উদ্দীন তালুকদার (৬৮), তার স্ত্রী নাজমা বেগম (৫৫), মেয়ে মাহবুবা তালুকদার (৪০), রোকসানা তালুকদার (৩৪), আফরোজা তালুকদার (২৮) ও নিষাদ তালুকদার (২৫)। তারা সবাই আটরশি পীরের ভক্ত ছিলেন। তারা কেউ বাসা থেকে বের হতেন না। নিজেরাই বাড়িতে অবরুদ্ধ হয়ে থাকতেন। এসব নিয়ে প্রতিবেশীরা তাদের জিজ্ঞেস করলেও কোনো সুদত্তর দিতেন না। তারা প্রতিদিন রাত ৩টা থেকে ভোর পর্যন্ত জিকির করতেন। প্রয়াত শামীমা সুলতানা নাজমা তার পরিবারের সদ্যদের বলে গিয়েছিলেন, তিনি যদি কোনো সময় মারা যান তাহলে তার লাশ রেখে যেনো অপেক্ষা করা হয়। তিনি তিন থেকে চারদিন পর পুনরায় জীবিত হবেন। গত সোমবার শামীমা সুলতানা নাজমা মারা গেলে তার পরিবারের সদ্যরা বিষয়টি কউকেই জানাননি। তারা সবাই মরদেহ পুনরায় জীবিত হওয়ার আশায় লাশ খাটের নিচে রেখে অপেক্ষা করতে থাকেন।
এদিকে প্রতিবেশীরা পঁচা গন্ধ পেতে থাকেন। তারা ইঁদুর মরে গন্ধ ছড়ায় বলে ভাবেন। কিন্তু ধীরে ধীরে গন্ধ তীব্র হওয়ার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের রহস্যজনক চলাচলের কারণে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ এসে তাদের ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়া দেয়নি। পরে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখতে পান সবাই ঘরেই অবস্থান করছেন। এ সময় খাটের নিচ থেকে নাজমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর পরিবারের সদস্যদের থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে সেখান থেকে তাদের মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
মনোহরদী থানার ওসি ফরিদ উদ্দীন বলেন, পরিবারটি এক পীরের মুরিদ ছিলেন। তারা জিকিররত অবস্থায় নাজমার মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছেন। পুনরায় জীবিত হবে এই ধারণায় তারা লাশ খাটের নিচে রেখে দিয়েছিলেন। আমরা নিহতের স্বামী, চার মেয়ে, দুই নাতি ও এক নাতনিকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। আর নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু কিনা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর বলা যাবে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়