পেঁয়াজ-সবজির দামে স্বস্তি, মাছ চড়া

আগের সংবাদ

ভোটের জন্য প্রস্তুত খুলনা কার ভাগ্যে ছিঁড়বে শিকে

পরের সংবাদ

নতুন নীতিমালা চাকরি বিধির লঙ্ঘন : কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পদোন্নতি নিয়ে ক্ষোভ হতাশা

প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ব্যাংকের পদোন্নতির নতুন নীতিমালা নিয়ে পক্ষপাতিত্ব ও বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। মূলত নবম (সহকারী পরিচালক) ও দশম (কর্মকর্তা) গ্রেডে প্রবেশন কর্মকর্তাদের পরবর্তী পদোন্নতির জন্য প্যানেল ভুক্তির ক্ষেত্রে চাকরিকাল ২ বছরের পরিবর্তে ৫ বছর করা হয়েছে। এ বৈষম্য সংবিধান, উচ্চ আদালত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি বিধির সরাসরি লঙ্ঘন। এ পরিস্থিতিতে দশম ও নবম গ্রেডের প্রবেশন পদের কর্মকর্তারা পুরো চাকরি জীবনে সর্বোচ্চ যুগ্ম পরিচালক পদে আসীনের সুযোগ পাবেন। যা ভুক্তভোগীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি করেছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, নতুন নীতিমালায় কর্মকর্তা বা সমমান পদ থেকে সহকারী পরিচালক বা সমমান এবং সহকারী পরিচালক পদ থেকে উপপরিচালক বা সমমান পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ন্যূনতম চাকরিকাল ধরা হয়েছে ৫ বছর। নতুন নীতিমালার আগে এসব কর্মকর্তার পরবর্তী পদে প্যানেল ভুক্তির জন্য আড়াই বছর (দুই প্যানেল বা দুই এসিআর সমমান) লাগত। সেই সুবাদে ২০১৯ সালে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও আড়াই বছরে পরবর্তী পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। সেই হিসাবে পরবর্তী ব্যাচের প্রবেশন কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে হওয়ার কথা থাকলেও নতুন নীতিমালার কারণে তাদের প্যানেল ভুক্তি হতে ৩-৪ বছর বিলম্ব হবে।
সংবিধানের ২৯(১) ধারা অনুযায়ী, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের ক্ষেত্রে সুযোগের সমতা থাকবে। অথচ একটি প্রবেশন পদ (১০ গ্রেড) হতে আরেকটি প্রবেশন পদে (৯ম গ্রেড) পদোন্নতিতে ন্যূনতম চাকরিকাল ৫ বছর নির্ধারণ সংবিধান পরিপন্থি। আবার ‘ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্টস’ মানদন্ড অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের সঙ্গে কোনো বৈষম্য করা যাবে না। একইভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদোন্নতি নীতিমালার ১৭ নম্বর বিধিতে বলা হয়েছে, পদোন্নতির যোগ্য কর্মকর্তা পাওয়া না গেলে এবং শূন্যপদ পূরণ আবশ্যক হলে ফিডার পদের কর্মকর্তাকে ন্যূনতম ৩ বছর চাকরি করা সাপেক্ষে চলতি দায়িত্ব দেয়া যাবে। আর সহকারী পরিচালক পদে সরাসরি নিয়োগ ও পদোন্নতির কোটা ১:১ অনুসরণ করেই শুন্যপদ পূরণ করতে হবে। কিন্তু সহকারী পরিচালক পদে পদোন্নতির জন্য কর্মকর্তা পদে ন্যূনতম চাকরিকাল ৫ বছর নির্ধারণ করায় ৭০০টিরও বেশি সহকারী পরিচালক পদ দীর্ঘদিন শূন্য থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৪২৫তম সভায় ৯ম বা তদূর্ধ্ব গ্রেডভুক্ত পদে পদোন্নতির নীতিমালায় সব নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট ডেপুটি গভর্নর নতুন নীতিমালা প্রকাশে একচ্ছত্র প্রভাব খাটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তাও বিষয়টি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, প্রবেশন পদে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পরবর্তী পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সাধারণত দুই থেকে আড়াই বছর লাগে। কম সময় বিবেচনায় বুয়েট ও আইবিএ এর মত স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের মেধাবীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা বা সহকারী পরিচালক পদে যোগ দেন। কিন্তু পদোন্নতির নতুন শর্তে তারা ক্ষুব্ধ ও হতাশ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. আবুল বশর বলেন ‘নিয়ম মেনেই নীতিমালা করা হয়েছে। গভর্নরের নেতৃত্বে সবদিক বিবেচনায় নিয়ে করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের কর্মকর্তা ব্যাচে যোগদানকালীন অভ্যন্তরীণ পদোন্নতি ও সরাসরি নিয়োগের অনুপাত ছিল ৩:১। কিন্তু ২০০১ সালে বিশেষ মহলের প্রভাবে ১: ১ হয়। এতে সহকারী পরিচালক পদে পদোন্নতি পেতে তাদের ৮ থেকে ৯ বছর লেগে যায়। ফলে বর্তমানে অফিসার-৯৯ ব্যাচ যুগ্ম পরিচালক (৫ম গ্রেড) পদে থাকলেও একই বছরের সহকারী পরিচালক ব্যাচ পরিচালক (৩য় গ্রেড) হয়েছেন। বর্তমানে ১৯৯৯ সালের অফিসার ব্যাচ এবং তাদের ১৫ বছর পরে ২০১৪ সালে ৯ম গ্রেডে যোগদান করা সহকারী পরিচালক ব্যাচ একই পদে (যুগ্ম পরিচালক) রয়েছেন। একইভাবে, ২০১৭ সালের অফিসার ব্যাচ ২০১৯ সালে পদোন্নতি পেলেও একই বছরে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক ব্যাচকে জ্যেষ্ঠতা দেয়ার জন্য পুলিশি তদন্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি কাজে যোগ দেয়ানো হয়। যা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৪ সালের ‘জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ’ ধারার পরিপন্থি। আবার ২০১৮ সালের সহকারী পরিচালক ব্যাচকে দ্রুত কাজে যোগ দেয়ার জন্য একই বছরের ক্যাশ অফিসার ব্যাচকে প্যানেল ইয়ারের ১১ দিন পর যোগদান করানো হয়। ফলে ক্যাশ অফিসার ব্যাচটির পদোন্নতি এক বছর পিছিয়ে যায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়