কনস্টেবল বাদল হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

আগের সংবাদ

দুর্ভোগের অবসান চান নগরবাসী : সুপেয় জলের তীব্র সংকট জলজটের খুলনায়

পরের সংবাদ

রাঙ্গামাটিতে ডায়রিয়ায় ২ জনের মৃত্যু : আক্রান্ত অর্ধশতাধিক

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিেিবদক, রাঙ্গামাটি : রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দুর্গম লংথিয়ান পাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গবতি বালা ত্রিপুরা (৫০) ও দরুং ত্রিপুরা (৬০) নামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। লংথিয়ান পাড়ায় ২০ জন ও আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে নারী শিশু বৃদ্ধসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আরো অর্ধশতাধিক মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে।
গতকাল বুধবার ভোর রাতে গবতি বালা ত্রিপুরা ও দুপুর ১টার দিকে দরুং ত্রিপুরা (৬০) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার বনবিহারী চাকমা। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার বনবিহারী চাকমা আরো জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে সাজেকের লংথিয়ান পাড়া, অরুণ পাড়া, কাইজা পাড়া, রায়না পাড়া ও শিয়ালদহ এলাকাসহ আশপাশের বেশকিছু এলাকায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এলাকায় বা আশপাশে কোনো হাসপাতাল বা কমিউনিটি ক্লিনিক না থাকায় স্থানীয় তান্ত্রিক দ্বারা চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। এলাকায় যাতায়াতের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পায়ে হেঁটে এতো দূর থেকে মাচালং ও উপজেলা সদর হাসপাতালে রোগী পাঠানো সম্ভব নয়। হেলিকপ্টারে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় যদি মেডিকেল টিম পাঠানো যায় তাহলে দ্রুত চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হবে। না হয় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
সাজেক ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার জোপুইথাং ত্রিপুরা জানান, শিয়ালদহ এলাকায় ১০ থেকে ১২ জন ডায়রিয়া রোগী রয়েছে, মূলত ছড়ার পানি থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে। ২০১৬ সালে এখানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মেডিকেল টিম গিয়ে দীর্ঘ এক মাসের চিকিৎসায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এবারো দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে রোগী ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
এদিকে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এলাকটি খুবই দুর্গম। পায়ে হাটা পথ ছাড়া বিকল্প নেই। মূলত খাবার পানি থেকে এই রোগ ছড়াচ্ছে। আমরা সংবাদ পাওয়ার পরপরই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (ইউএইচএফপিও) ডা. অরবিন্দু চাকমার সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি মেডিকেল টিম পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পার্শ্ববর্তী বিজিবি বিওপি থেকেও স্যালাইন সরবরাহ করা হয়েছে, তবে খুবই সীমিত।
বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. অরবিন্দু চাকমা বলেন, ইতোমধ্যে ৪ সদস্যদের একটি মেডিকেল টিম প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ সাজেকের উদ্দেশ্য রওনা হয়েছে। সাজেকের কংলাক পাড়া থেকে পায়ে হেটে ঘটনাস্থলে পৌঁছুতে একদিন লাগবে। মেডিকেল টিমের সদস্যরা পৌঁছালে আরো বিস্তারিত জানতে পারবো।
এদিকে রাঙ্গামাটির সির্ভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতেই ডায়রিয়ায় আক্রান্তের তথ্য আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। খুব ভোরেই আমরা একজনকে কিছু ওষুধপত্র দিয়ে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে দিয়েছি। দুর্গম হওয়ায় তিনি আজ বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদ ওই এলাকায় পৌঁছাতে পারবে। এছাড়া প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কলেরার স্যালাইনসহ বিভিন্ন ওষুধপত্র দিয়ে আরো একটি টিম আমরা ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকায় পাঠাচ্ছি।

ক্যাপশন : সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের উন্নত চিকিৎসার্থে পায়ে হেঁটে মাচালং ও উপজেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা। ছবিটি মঙ্গলবার রাঙ্গামাটির সাজেক এলাকা থেকে তোলা – ভোরের কাগজ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়