কনস্টেবল বাদল হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

আগের সংবাদ

দুর্ভোগের অবসান চান নগরবাসী : সুপেয় জলের তীব্র সংকট জলজটের খুলনায়

পরের সংবাদ

রাউতারায় অস্থায়ী রিং বাঁধ নির্মাণ : চোখের সামনে কোটি কোটি টাকা জলে ভেসে যায়

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কৃষকদের ধান রক্ষার জন্য প্রতি বছর অস্থায়ী রিং বাঁধ তৈরি করা হয়। ড্রেজারের মাধ্যমে নদী থেকে বালু তুলে এই বাঁধ নির্মাণের কাজ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এতে ব্যয় হয় কোটি কোটি টাকা। একই সঙ্গে চলে পুকুরচুরির ঘটনাও। প্রায় ৩৫ বছর একই নিয়মে এই কাজ হয়ে আসছে। অথচ একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করলে প্রতি বছর সরকারের এত পরিমাণ টাকা জলে যেত না বলে দাবি সুশিল সমাজের।
জানা গেছে, শাহজাদপুরের পোতাজিয়া ইউনিয়নের রাউতারা সøুইস গেটের পশ্চিম পাশে ১ হাজার ২৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ওই বাঁধ নির্মাণে এ বছর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। যদিও প্রতি বছরই নির্মাণের এক থেকে দেড় মাসের মাথায় অদৃশ্য শক্তির ইশারায় বাঁধটি কেটে দেয় স্থানীয় মৎস্য শিকারি ও নৌ শ্রমিকরা। স্থানীয় কৃষকদের ধান রক্ষার নামে বালু দিয়ে অস্থায়ী এ বাঁধ নির্মাণ ও ভাঙার কাজ চলছে বছরের পর বছর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর তথা চলনবিলের হাজার হাজার হেক্টর কৃষি জমির ধান রক্ষার্থে একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যা ১৯৮০ সালে শেষ হয়। এতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়। তবে ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় বাঘাবাড়ি-নিমাইচড়া অংশের রাউতারা স্লুহস গেটের পশ্চিম পাশে বাঁধটি ভেঙে যায়। সেই থেকে প্রতি বছর এই অঞ্চলের কৃষি জমির ধান রক্ষায় রিং বাঁধ তৈরি করে পাউবো। বাঁধটির নির্মাণ কাজ মার্চ মাসে শুরু হয় এবং বাঁধের স্থায়ীত্ব ২৮ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। নির্মাণ শেষে বাঁধের এ অংশ ভেঙে না গেলেও প্রতি বছর জুন মাস শেষে মাছ আহরণ ও নৌকা চালানোর সুবিধার জন্য কেটে দেন মৎস্য শিকারি ও নৌযান শ্রমিকরা। এতে চোখের সামনে সরকারের কোটি টাকা জলে ভেসে যায়। আর স্থানীয়রা বাঁধের পাইলিংয়ের বাঁশ, খুঁটি ও বালুর বস্তা লুট করে বিক্রি করে। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসন কঠোর নজরদারি করলে বাঁধটি সহজেই রক্ষা করা যায়।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ, নাটোর ও পাবনাসহ চলনবিল এলাকার প্রায় ৬২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়। অনেক সময় নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই বাঁধের কিছু অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে উ?ৎপাদিত ধান অনেক সময় পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে ধান কেটে ঘরে তোলা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। অনেক সময় ধান কাটা সম্ভব হয় না। প্রতি বছরই এই বাঁধ নিয়ে শঙ্কিত থাকে কৃষকরা। এবার পানি কম থাকায় ধান কাটা প্রায় শেষের দিকে। সেখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও দুর্নীতি বন্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে পোতাজিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর জাহান বাচ্চু বলেন, এখানে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ হলে দুই ফসলি জমিতে বহুমাত্রিক ফসল উৎপাদন করা সম্ভব। তাই এখানে স্থায়ী বাঁধসহ একটা পাম্প হাউজ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
সিরাজগঞ্জ জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, এবার প্রাক্কলনে বালু দিয়েই বাঁধ নির্মাণ সম্পূর্ণ করার জন্য উল্লেখ করা হয়েছে। সেই মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য বৃহত্তর পরিকল্পনা করা হচ্ছে এবং স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রায় ৬০০ কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে এ সমস্যা আর থাকবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়