কাগজ প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। গতকাল বুধবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এক ঘণ্টার বেশি সময় তারা আলোচনা করেন বলে জানা গেছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক একান্ত সচিব মুকতাদির আজিজ বলেছেন, সকালে পিটার হাস প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসেছিলেন। সে সময় তার সঙ্গে দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা ছিলেন। তারা বৈঠক করেছেন। তারা কী আলোচনা করেছেন তা জানি না। এ বিষয়ে জানতে তৌফিক-ই-ইলাহীর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। বৈঠকের বিষয়ে মার্কিন দূতাবাস থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতির বিষয়ে শলাপরামর্শ করতে পিটার হাস শিগগিরই ওয়াশিংটন যাচ্ছেন। এর আগে তিনি সরকার ও রাজনৈতিক মহলে সিরিজ বৈঠক করেছেন। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। ভিসানীতি মোতাবেক কেউ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিলে তাকে ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। গত ৩ মে বাংলাদেশ সরকারকে ভিসানীতি অবহিত করে যুক্তরাষ্ট্র। ২৪ মে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিংকেন ভিসানীতি ঘোষণা করেন। পিটার হাস এ বিষয়ে গত ২৫ মে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এটা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের রুটিন সফর। প্রতি বছরই এই সময়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্বাগতিক দেশের পরিস্থিতি নিজ দেশে অবহিত করেন। তবে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এবং ভিসানীতি ঘোষণার পর পিটার হাসের এবারের ওয়াশিংটন সফরকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার আগে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধনীর বিষয়ে অগ্রগতি জানতে ২৯ মে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ চার রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা কমানোর কারণ জানতে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে। এছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে ভিসানীতি নিয়ে আলোচনা করেন। রাষ্ট্রদূত পিটার হাস প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।
এসব বৈঠকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচন প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। দলগুলো তাদের অবস্থান জানানোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধি এবং রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ওয়াশিংটনের প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র বারবারই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি জোর দিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, বাংলাদেশ এমন নির্বাচন করুক, যা গোটা বিশ্ব তাকিয়ে দেখবে। মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশ সফর করেছেন। ওই সময়ে তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের বিষয় পুনর্ব্যক্ত করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গে কিছু বলা হয়নি। একে বাংলাদেশের জনগণের বিষয় বলে মনে করে দেশটি। এ কারণে এসব প্রসঙ্গে কোনো মার্কিন কর্মকর্তাই কোনো মন্তব্য করেননি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।