কনস্টেবল বাদল হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

আগের সংবাদ

দুর্ভোগের অবসান চান নগরবাসী : সুপেয় জলের তীব্র সংকট জলজটের খুলনায়

পরের সংবাদ

জাতিকে বাঁচাতে চাই জাতীয় জাগরণ : সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মতবিনিময়ে শ্যামল দত্ত

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ধমনীতে যদি বাঙালির রক্ত না থাকে তাহলে শরীরে-চেহারায় মেকআপ করে কী লাভ- এমন প্রশ্ন রেখে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেছেন, জাতিকে বাঁচাতে হলে জাতীয় জাগরণ তৈরি করতে হবে। আর এই জাগরণ তৈরিতে আমাদের শেষ ভরসাস্থল আওয়ামী লীগের কাছেই চাইতে হবে।
জাতীয় বাজেটে সংস্কৃতি খাতে কমপক্ষে ১ শতাংশ বরাদ্দের দাবিতে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল বুধবার দুপুরে শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার হলে এই মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। সঞ্চালনায় ছিলেন জোটের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, ড. মুহাম্মদ সামাদ, শিক্ষাবিদ রতন সিদ্দিকী, শিল্পী বুলবুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মী, শিল্পী নারায়ণ চন্দ্র শীল, অভিনয় শিল্পী সংঘের রওনক হাসান, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের রেজিনা ওয়ালী লিনা, শিল্পী ফকির সিরাজসহ জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশনের নেতারা।
শ্যামল দত্ত বলেন, আমরা সংস্কৃতিহীন জাতি-রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি বরাদ্দ অবিশ্বাস্য হারে বাড়ছে। সেটা হচ্ছে এই আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরেই। তাই সংস্কৃতিকর্মীদের সামনে অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের প্রধান শক্তিই হচ্ছে তার সংস্কৃতি। তাই শিক্ষা সংস্কৃতিকে বড় ল্যান্ডস্কেপে দেখতে হবে, মাইক্রো লেভেলে দেখে কিংবা ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়িয়েও কোনো লাভ নেই। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ যে অন্ধকারের দিকে নামছে, তা একেবারে গতিহীন নামছে, এর কোনো গতি নেই। যে জাতি তার সংস্কৃতিকেই বোঝে না তাকে দিয়ে কী হবে? এ জায়গায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটকে কাজ করতে হবে। বাঁচাতে হবে বাংলাদেশকে।
নাট্যজন মামুনুর রশীদ বলেন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কৃতিবিযুক্ত হয়ে ভয়ঙ্কর অবস্থার দিকে এগোচ্ছে, আর সংস্কৃতি পেছনের দিকে হাঁটছে। বাংলাদেশের গ্রাম থেকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড একেবারে বিলীন হয়ে গেছে। মানুষের কাছে পৌঁছাতে হলে সংস্কৃতিকর্মীদের জাগরণের নতুন পথ খুঁজে বের করতে হবে।
সংস্কৃতিতে পৃষ্ঠপোষকতা কমে গেলে জাতির আত্মাই মরে যাবে- উল্লেখ করে মুহাম্মদ সামাদ বলেন, আমরা সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন করেছি, গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছি, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছি, সেই আন্দোলনের ফসল হচ্ছে- মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আজ ক্ষমতায় রয়েছে। তাদের কাছে আমাদের এই দাবি জানানো সঙ্গত এবং অধিকার রয়েছে।
বরাদ্দের জন্য অনেক কিছু আটকে থাকে না উল্লেখ করে শরমিন্দ নীলোর্মী বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়নের নামে অনেক গাছ কেটে ফেলেছে, সেখানে

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটকে প্রতিবাদ দেখি না। গাছ কাটা বা কোনো অন্যায় হলে কিংবা আজকের বিদ্যুৎ সমস্যায়ও তাদের দাঁড়াতে হবে।
২০২৩-এর প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘এশিয়ান ড্রামা’ উল্লেখ করে রতন সিদ্দীকী বলেন, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করেছে। কিন্তু মননের সমৃদ্ধির কথা ভাবেনি। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে মননের সমৃদ্ধি ঘটাতে হবে। কারণ আমরা এখন অন্ধকারের বাংলাদেশে আছি।
বুলবুল ইসলাম বলেন, আমাদের রাজনৈতিক নেতারা সংস্কৃতি বোঝেন না। যে দেশে রাজনৈতিক নেতারা সংস্কৃতি বোঝেন না সে দেশের পরিস্থিতি এমনই হবে। অথচ বঙ্গবন্ধু জেলে যাওয়ার সময়ও রবীন্দ্রনাথের বই নিয়ে যেতেন।
সংস্কৃতি খাতে বাজেট বরাদ্দের জন্য আমাদের দাবি এপিক দাবিতে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে আহকাম উল্লাহ বলেন, ক্রীড়ায় যে বাজেট তা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মাধ্যমে হয়, ফুটবলের বাজেট বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের মাধ্যমে হয়, হকির বাজেট হকির মাধ্যমে হয়, শ্যুটিং ফেডারেশনের বাজেট শ্যুটিং ফেডারেশনের মাধ্যমে হয়, শুধু সংস্কৃতির বাজেট বরাদ্দে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কোনো ভূমিকা নাই। অথচ এখানে ১৬টি ফেডারেটিভ বডি সম্পৃক্ত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়