কনস্টেবল বাদল হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

আগের সংবাদ

দুর্ভোগের অবসান চান নগরবাসী : সুপেয় জলের তীব্র সংকট জলজটের খুলনায়

পরের সংবাদ

আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও জ্বালানি সংকটের চাপে বাংলাদেশ : বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কয়েক মাস ধরে আমদানির ওপর বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপের কারণে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি কমেছে। পাশাপাশি জ্বালানি সংকটের চাপের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। দেশের শিল্প উৎপাদন ও পরিষেবা খাতে বড় ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত ‘গেøাবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট’ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছে বিশ্বব্যাংক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি নিয়ে আগের পূর্বাভাসই বহাল রাখা হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল বিশ্বব্যাংক। সেখানে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে- এমন পূর্বাভাস দিয়েছিল। এছাড়া আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। যদিও সরকার চলতি ও আগামী অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করেছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, আন্তর্জাতিক লেনদেনের ভারসাম্য ব্যাহত যাওয়া ও বিনিময় হারের চাপ বেড়ে যাওয়ায় দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশসহ নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা আমদানির ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল। এর ফলে এসব দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। তবে এখন আন্তর্জাতিক লেনদেন ভারসাম্য পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এ কারণে এসব দেশে আমদানি নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল করা হচ্ছে।
আমদানি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বেশ কিছু খাদ্যপণ্য রপ্তানিতেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান। বিশ্বব্যাংক বলছে, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম কমে এসেছে। তা সত্ত্বেও এসব দেশ বিদ্যমান খাদ্য রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা ২০২৩ সাল পর্যন্ত বহাল রাখতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের উন্নতি হয়েছে। তবে পরিবারের প্রকৃত উপার্জন এখনো মহামারির আগের পর্যায়ে যেতে পারেনি।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, উচ্চ মাত্রায় খেলাপি ঋণ, পুঁজির ক্ষেত্রে দুর্বলতা ও ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের দুর্বলতার কারণে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশের আর্থিক খাতে উচ্চ ঝুঁকি রয়ে গেছে। এসব দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বেশি। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশে করপোরেট খাতে সুশাসনের দুর্বলতা ও পুঁজির সংকটও আর্থিক খাতে ঝুঁকি বেড়েছে। এছাড়া বেশি পরিমাণে সরকারি ও বৈদেশিক ঋণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং আর্থসামাজিক উত্তেজনা প্রভৃতি কারণে এ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশে আর্থিক সংকটের ঝুঁকি বাড়ছে।
বিশ্বব্যাংক আরও বলেছে, এ অঞ্চলের দেশগুলোতে আর্থিক নীতির কঠোরতা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিগত সুদহার বাড়িয়েছে। কিন্তু ঋণের সুদহারের ক্ষেত্রে সীমা আরোপিত থাকায় অর্থনীতিতে তার সুফল পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্বব্যাংক আশা করছে, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে আর্থিক একীকরণ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি কমবে : সর্বশেষ গেøাবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে তাদের পূর্বাভাস আগের তুলনায় বাড়িয়েছে। গত জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাংক বলেছিল, চলতি বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হবে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে। যদিও এটি ২০২২ সালের ৩ দশমিক ১ শতাংশ ও ২০২১ সালের ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় অনেক কম। তবে ২০২৫ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি আবার ৩ শতাংশে প্রত্যাবর্তন করবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি কমার পূর্বাভাস দিয়ে বিশ্বব্যাংক বলেছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি কমে ২০২৩ সালে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ হবে। ২০২৪ সালে তা আরও কমে ৫ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে।
প্রতিবেদন প্রকাশের পরে বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইন্দারমিত গিল বলেছেন, বিশ্ব অর্থনীতি একটি অনিশ্চিত অবস্থানে রয়েছে। উদীয়মান ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোতে উচ্চ সুদহারের কারণে ঋণের চাপ বাড়ছে। আর্থিক খাতের দুর্বলতা ইতিমধ্যে অনেক নিম্ন আয়ের দেশকে ঋণসংকটে ফেলেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়