গ্রিন ভয়েস : প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের দাবিতে সাইকেল র‌্যালি

আগের সংবাদ

বাজেটে কেউ খুশি নয় : সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা বেড়েছে, পূরণ হয়নি ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগ দাবি

পরের সংবাদ

সধবার নামে ৩ বছর বিধবা ভাতা তুলে আত্মসাৎ : বন্ধ প্রতিবন্ধী ভাতা, বিচার চান দরিদ্র দম্পতি

প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ফেরদৌস জুয়েল, গাইবান্ধা থেকে : গীতা রানী প্রামাণিক। স্বামী গৌতম চন্দ্র প্রামাণিক। গীতা রানীর দুই হাতে শাখা, কপালে লাল টিপ ও সিঁথিতে সিদুর। তার বাম পা ও বাম হাত অনেকটাই বিকলাঙ্গ। এক কথায় প্রতিবন্ধী। গৌতম চন্দ্র প্রামাণিক জীবিত হলেও জেলা সমাজসেবা অফিসের তালিকায় তিনি মৃত। তাকে মৃত দেখিয়ে একটি চক্র তিন বছর ধরে গীতা রানী প্রামাণিকের নামে বিধবা ভাতা তুলে আসছে। এমন তথ্য প্রকাশ পাওয়ায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের বোর্ডঘর গ্রামের বাসিন্দা গৌতম চন্দ্র প্রামাণিক দিনমজুরের কাজ করেন। তার স্ত্রী গীতা রানী শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাদের তিন মেয়ে রয়েছে। এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। দুই মেয়ে লেখাপড়া করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে গীতা রানীর নামে প্রতিবন্ধী কার্ড ইস্যু করা হয় ২০২১ সালে মার্চ মাসের ২১ তারিখে। যার নম্বর ১৯৭৮৬৮৯৪৩৪১৪০০-০২।
দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর চলতি বছর অন্যান্য প্রতিবন্ধীর মতো এ বছর গীতা রানীর নামেও প্রতিবন্ধী ভাতা হিসেবে সরকারি অর্থ ছাড় করে মন্ত্রণালয়। অনেকেই ভাতার টাকা উত্তোলনও করেন। কিন্তু প্রতিবন্ধী ভাতা তালিকায় নাম থাকলেও মোবাইলের বিকাশ একাউন্টে টাকা পায় না গীতা রানী। সরকারের দেয়া প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা মোবাইল একাউন্টে না আসায় খোলাহাটী ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে উপজেলা সমাজ সেবা ও জেলা সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করেন গীতা রানী ও তার স্বামী গৌতম চন্দ্র। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, তার আইডি কার্ড ব্যবহার করে স্বামী জীবিত থাকার পরও তার নামে তিন বছর আগে থেকে বিধবা ভাতা প্রদান করে আসছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। ওই টাকাও অন্য কোনো ব্যক্তির মোবাইল একাউন্টে জমা হচ্ছে। যে কারণে প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা তার মোবাইল হিসাবে জমা হয়নি। জীবিত স্বামীর মৃত্যুর কথা শুনে হতবাক হয়ে যান গীতা রানীসহ গ্রামবাসী।
গীতা রানীর স্বামী গৌতম চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, আমাকে মৃত দেখিয়ে আমার স্ত্রীর নামে বিধবা ভাতা করল কে আমি তার বিচার চাই।
খোলাহাটী ইউনিয়ন পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইতিশ চন্দ্র সরকার বলেন, একজন গরিব প্রতিবন্ধী মহিলার স্বামীকে মৃত দেখিয়ে যারা ৩ বছর ধরে বিধবাভাতা তুলেছেন তাদের শাস্তি হওয়া দরকার।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন শাহ্ বলেন, বিষয়টি জানার পর গীতা রানীর নামে বিধবা ভাতা বাতিল করে সেখানে অন্য একজন বিধবাকে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া গীতা রানীর নামে প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা ছাড় করার জন্য অধিদপ্তরে পে-রোল পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ৩ বছর ধরে বিধবা ভাতার টাকা যারা উত্তোলন করেছে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ফজলুল হকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি জানার পর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেই। তদন্ত প্রতিবেদন এখনো জমা হয়নি। প্রতিবেদনে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া গত ৩ বছর ধরে বিধবা ভাতার টাকা যার একাউন্টে জমা হয়েছে খুব শিগগির সেই টাকা উদ্ধার করে সরকারি কোষাগারে জমা করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়