কাগজ প্রতিবেদক, কুমিল্লা : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় মহাসড়কে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে বন্ধ হয়ে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যানবাহন চলাচল। তিন ঘণ্টা পরে স্বাভাবিক হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২২ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে সকাল ৯টায়। ‘বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে’ বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে স্থানীয় এমপি মুজিবুল হক মুজিবের অনুসারীদের আয়োজিত গণজমায়াতের মঞ্চ ভাঙচুর করে সাবেক মেয়র মিজানুর রহমানের অনুসারীরা। এসময় মুহূর্তের মধ্যে উভয় পক্ষের ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে সাবেক মেয়র মিজানের পূর্ব ঘোষিত শোভাযাত্রা পণ্ড হয়ে যায়। সংঘর্ষের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে ধীরগতিতে কখনো থেমে থেমে বাস চলাচল করে। স্থানীয়রা জানান, বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সাবেক রেলপথমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চৌদ্দগ্রাম বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে গণজমায়াতের আয়োজন করেন।
একই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় চৌদ্দগ্রামের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে উপজেলায় শোভাযাত্রার আয়োজন করেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। একপর্যায়ে সকাল ৯টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে সংঘর্ষ বেধে যায়। এসময় ভাঙচুর করা হয় গণজমায়াতের মঞ্চ ও বেশকিছু যানবাহন। আগুন দেয়া হয় একাধিক মোটরসাইকেলে। এসময় মহাসড়কের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় বেশ ২২ জন আহত হয়েছেন। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও কেউ ভর্তি নেই। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কুমিল্লার সহকারী পুলিশ সুপার (চৌদ্দগ্রাম সার্কেল) জাহিদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের পদবঞ্চিত নেতারা চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমানের সমর্থনে মহাসড়কে নেমে ভাঙচুর চালান। পরে এমপি মুজিবুল হকের সমর্থকরা তাদের প্রতিহত করতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
এদিকে মহাসড়কে সংঘর্ষের কারণে চট্টগ্রাম লেনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে শত শত মানুষকে।
খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। তারা চট্টগ্রাম লেন থেকে সরে দাঁড়ালে যান চলাচল শুরু হয়।