গণতন্ত্র মঞ্চের হুঁশিয়ারি : সমাবেশে বাধা দিলে পরিণতি ভালো হবে না

আগের সংবাদ

পাহাড় কাটার হিড়িক, দুই ফসলি জমির টপ সয়েল যাচ্ছে ভাটায়

পরের সংবাদ

প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে ভূমিকা রাখতে হবে সরকারকে : আলোচনা সভায় বক্তারা

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : সারাদেশে প্রতিদিন তিন হাজার টন প্লাস্টিক ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে একবার ব্যবহার করা প্লাস্টিকের পরিমাণই সবচেয়ে বেশি। পানীয়সামগ্রী বিক্রয় প্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি প্লাস্টিক ব্যবহার করছে। তাই পরিবেশ দূষণরোধে পলিথিনসহ প্লাস্টিক উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানির ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ জরুরি। এতে অন্তত প্লাস্টিকের বহুমাত্রিক ব্যবহার কমে আসবে। একইসঙ্গে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে সরকারকে ভূমিকা রাখতে হবে। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের আলোচনা সভায় আলোচক এসব কথা বলেন।
‘প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে, শামিল হই সকলে’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত পরিবেশ দিবসের আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল। এ সময় তিনি বলেন, দেশে প্রায় ৫ হাজার কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান প্লাস্টিক বা পলিথিন তৈরি করে এবং এই উৎপাদনের সঙ্গে ১২ লাখ মানুষ সরাসরি জড়িত। যার প্রতিফলন আমাদের পরিবেশে দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে একবার ব্যবহার করা প্লাস্টিকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। পানীয়সামগ্রী বিক্রয় প্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি প্লাস্টিক ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, পরিবেশ দূষণরোধে পলিথিনসহ প্লাস্টিক উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানির ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ জরুরি। এতে অন্তত প্লাস্টিকের বহুমাত্রিক ব্যবহার কমে আসবে। একইসঙ্গে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে সরকারকে ভূমিকা রাখতে হবে।
অধ্যাপক অলক পাল বলেন, আমাদের দেশে মাত্র ২০ টাকার জিনিস কেনার জন্য পলিথিন দেয়া হয়। অপচনশীল এই প্লাস্টিক ও পলিথিনের কারণে আমাদের শহরগুলো ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্লাস্টিকের ব্যবহার একেবারে বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে এর ব্যবহার অনেকটা কমিয়ে আনতে হবে। এরই মধ্যে ভারতসহ অনেক দেশ প্লাস্টিক ব্যবহার কমিয়ে আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তারা বাজারসহ দৈনিক কাজে পলিথিনের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ ব্যবহার করছে। এ সময় তিনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বিনিয়োগে জোর দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান বলেন, চট্টগ্রামে প্রতিদিন গড়ে ২৫ হাজার টন বর্জ্য তৈরি হয়। এর মধ্যে প্রায় ৮ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য। যা আমাদের খাল-নালাগুলোতে গিয়ে পড়ে। বর্ষা এলেই তার কুফল আমরা ভোগ করি প্রতিনিয়ত। কিন্তু তারপরও আমাদের সচেতনতা বাড়ে না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি একটি জরিপের তথ্য উল্লেখ করে বলছে, গত এক বছরে বঙ্গোপসাগরে ২৬ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য পাওয়া গেছে।
তিনি আরো বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ুর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়া কিংবা শীতকালে শীত অনুভূত না হওয়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ। সুতরাং পরিবেশ দূষণ রোধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে জলবায়ু হুমকির মুখে পড়তে হবে আমাদের। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আগামী ১ জুলাই থেকে প্লাস্টিকমুক্ত শহর গড়তে কাজ শুরু করবে। আমরা তার জন্য বসে না থেকে আজ থেকেই নিজেরা সচেতন হই।
চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের (মেট্রো) পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সাল মাহমুদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান প্রমুখ।
আলোচনা সভার আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও অতিথিরা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদ্বোধন করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়