কাগজ প্রতিবেদক : বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা দায়িত্বের বাইরে গিয়ে কিছু করলে বা সীমা লঙ্ঘন করলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় ‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্র নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, ভারতের অখণ্ড মানচিত্রের বিষয়ে দিল্লি দূতাবাসকে বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে। মানচিত্রটি গৌতম বুদ্ধের সময়েরও আগের। এটা রাজনৈতিক বিষয় নয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সে দেশের নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন করেন। এ সময় একটি ম্যুরাল সবার মনোযোগ আকর্ষণ করে। উদ্বোধনের দিন সংসদীয় বিষয়কমন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী ম্যুরালটিকে ‘অখণ্ড ভারত’ হিসেবে বর্ণনা করেন। এ ম্যুরালের মাধ্যমে অখণ্ড ভারতের যে মানচিত্র আঁকা হয়েছে, তাতে রয়েছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমার। এ নিয়ে নেপালে এরই মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ ধরনের মানচিত্রে বাংলাদেশকে অংশ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
এদিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়ামা কিমিনোরি গত রবিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর একদিন আগে জাপানি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে জানতে চান। রাষ্ট্রদূতরা এ ধরনের কাজ করতে পারেন কিনা জানতে চাওয়া হয় শাহরিয়ার আলমের কাছে। জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার বিস্তারিত জানা নেই। আজ থেকে ৬ মাস আগে একটি পরিস্থিতি গেছে। কেউ কেউ তখন দায়িত্বের বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন। যদি কোনো দেশের রাষ্ট্রদূত আবারো সেই ধরনের কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত হন, যেটা আমরা মনে করব যে তাদের সীমা লঙ্ঘন করে ফেলছেন- এটা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
একই সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে লেখা দেশটির ৬ কংগ্রেসম্যানের ‘কথিত’ চিঠিটি দুর্বল ও সস্তা বলে আখ্যা দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে কংগ্রেসম্যানদের চিঠি সরকার কীভাবে দেখছে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা চিঠি সংগ্রহ করেছি।
অন্যান্য চিঠিপত্রের মতো এখানেও অসামঞ্জস্য আছে। অন্যান্য চিঠির মতো বাড়াবাড়ি আছে। তথ্যের একটা বড় ধরনের ঘাটতি আছে। কংগ্রেসম্যানদের প্রচেষ্টা দুর্বল ও সস্তা। কংগ্রেসম্যানদের চিঠি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারবে না বলে মনে করেন শাহরিয়ার আলম। তবে সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার তত বাড়বে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে।