‘প্রস্তাবিত বাজেট তামাকমুক্ত দেশ গড়ার অন্তরায়’

আগের সংবাদ

রাজনীতির ছায়ায় ব্যবসার জাল : জামায়াতের বাণিজ্যিক নেটওয়ার্ক দেশ জুড়ে বিস্তৃত, গোপনে চলছিল সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড, এবার প্রকাশ্যে মাঠে নামার হুংকার

পরের সংবাদ

সোনাইমুড়ীতে সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কা : ঘুষ ছাড়া ধান নেয় না সরকারি গুদাম

প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নাজমুল হক, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) থেকে : নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন কৃষকরা। বিভিন্ন অজুহাতে ধানের ন্যায্যমূল্য দেয়া হয় না কৃষকদের। এছাড়া প্রতিমণ ধানে নগদ ৩০ টাকা ঘুষ, ধানের বিপরীতে বস্তা ও ময়লার ওজন বাবদ আরো অতিরিক্ত দুই কেজি ধান দিতে হয় গুদাম কর্তাদের। এছাড়া ধান বিক্রির চেক বিতরণে বিলম্ব করা হয়। এসব কারণে গুদামে না দিয়ে ফড়িয়াদের কাছে ধান বিক্রি করছেন কৃষকরা। ফলে ধান ক্রয়ে সরকারের বেঁধে দেয়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, এবার চলতি মৌসুমে আগামী আগস্ট পর্যন্ত ৮৯৫ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। প্রতি মণ ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১২শ টাকা।
সোনাইমুড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় মোট ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। এর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪২ হাজার মেট্রিক টন। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও উৎপাদন বেশি হয়। সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রি করতে ৬০০ কৃষকের তালিকা করে ক্রয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়।
তবে গুদামে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষকরা জানান, ধান বিক্রয় করতে এসে পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হয়। সরকার নির্ধারিত চিটাবিহীন প্রতি মণ ধানের মূল্য ১২শ টাকা। তবে ধান পরিমাপের জন্য প্রতিমণ ধানে দিতে হচ্ছে নগদ ৩০ টাকা। এছাড়া প্রতিমণ ধানের বিপরীতে বস্তা ও ময়লার ওজন বাবদ নেয়া হচ্ছে আরো অতিরিক্ত দুই কেজি ধান। যার মূল্য ১১০ টাকা। এছাড়া ধান বিক্রির চেক বিতরণে বিলম্ব করা হয়। সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের বারাহীপুর গ্রামের আবুল খায়ের জানান, গত মঙ্গলবার ৭৫ মণ ধান বিক্রি করতে গুদামে যান তিনি। তবে বুধবার সকালে তার ধান সংগ্রহ করে গুদাম কর্তৃপক্ষ। প্রতি মণ ধান পরিমাপের জন্য তার কাছ থেকে নেয়া হয় নগদ ৩০ টাকা হারে ২ হাজার ২৫০ টাকা। এছাড়া বস্তা ও ময়লার ওজন বাবদ মণ প্রতি ২ কেজি করে ধান দিতে হয়েছে। সোনাইমুড়ী পৌরসভার নাওতোলা ওয়ার্ডের কৃষক জসিম উদ্দিন জানান, গত মঙ্গলবার সকালে গুদামে ১৭ মণ ধান বিক্রি করেছেন তিনি। তার কাছ থেকেও একইভাবে নগদ টাকা ও মণ প্রতি অতিরিক্ত ধান নেয়া হয়েছে। এমনকি তাকে চেক দেয়া হয়নি।
এসব অনিয়মের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সোনাইমুড়ী উপজেলা খাদ্যগুদাম পরিদর্শক ইমরান হোসেন কোনো কথা না বলে গুদামের ভেতর চলে যান। এরপর অফিস সহকারী নুর মোহাম্মদের মাধ্যমে তিনি খবর পাঠান, ‘আমরা ধান সংগ্রহের বিষয়ে সরকার ছাড়া কাউকে তথ্য দিতে বাধ্য নই।’
এ পর্যন্ত কী পরিমাণ ধান সংগ্রহ করা হয়েছে জানতে চাইলে সোনাইমুড়ী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গোলাম রাব্বানি বলেন, ‘অল্প কিছুদিন হলো আমি এখানে যোগদান করেছি। গুদাম সংক্রান্ত সব কার্যক্রম গুদাম পরিদর্শকের। তবুও হয়রানির কোনো ঘটনা ঘটলে তদন্ত করা হবে।’
সোনাইমুড়ী উপজেলা ধান চাল সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন জানান, ধান সংগ্রহ অভিযান একেবারে স্বচ্ছ। কৃষক নিয়ম মেনে ধান নিয়ে গুদামে আসবে, ধান মেপে দিয়ে ক্রস চেকের মাধ্যমে টাকা নিয়ে চলে যাবে। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটার সুযোগ নেই। যাদের কৃষি কার্ড নেই, তারাও যদি সহনীয় পর্যায়ে ধান নিয়ে আসে, তাদের ধানও রাখার নির্দেশনা রয়েছে। যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়