দুদকের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি হুইপ সামশুলকে

আগের সংবাদ

মোকা’র মুখ বাংলাদেশের দিকেই : সমুদ্রবন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, ৮ থেকে ১২ ফুট জলোচ্ছ¡াসের আশঙ্কা

পরের সংবাদ

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনাল : মিলানকে হারিয়ে ফাইনালে এক পা ইন্টারের

প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের প্রথম লেগে চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী এসি মিলানকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ইন্টার মিলান। ইউরোপের কোন মঞ্চে এই প্রথমবার মিলানকে হারায় ইন্টার। এই জয়ে ফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছে সিমোন ইনজাগির শিষ্যরা।
দুই দলের ঘরের মাঠ সান সিরো হলেও এটি ছিল এসি মিলানরে হোম ম্যাচ। পরবর্তীতে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলবে তারা। আর ইন্টার মিলান খেলবে স্বাগতিক হয়ে। দ্বিতীয় লেগে ১-০ গোলে হার কিংবা ১-১ গোলে ড্র করলেও দুই লেগ মিলিয়ে এগিয়ে থেকে ফাইনালে উঠবে ইন্টার। আর জিতলে তো কোনো কথাই নেই। এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই মিলানের উপর আক্রমণ করে খেলতে থাকে ইন্টার। ম্যাচের ৮ মিনিটেই গোলের দেখা পায় তারা। ইন্টার মিডফিল্ডার হাঁকান চালহানোলুর নেয়া কর্ণার থেকে বল পেয়ে বাঁ পায়ে সাইড ভলি করেন ফরোয়ার্ড এডিন জেকো। এসি মিলান গোলরক্ষক কিছু বোঝার আগেই বল জড়িয়ে যায় জালে। প্রথম গোল হজম করার তিন মিনিট পরেই দ্বিতীয় গোল হজম করে মিলান। ম্যাচের ১১ মিনিটে মিডফিল্ড থেকে ফেদেরিকো ডিমার্কোর দুর্দান্ত পাস পেয়ে যান লাওতারো মার্তিনেজ। তবে সেই বল তিনি স্পর্শ না করে সুযোগ করে দেনহেনরিখ মাখিতারিয়ানেকে। বল পেয়ে মিলান গোলরক্ষককে বোকা বানান আরমেনিয়ান এই মিডফিল্ডার। প্রথমার্ধেই ব্যবধান ৩-০ হতে পারত। ম্যাচের ৩১ মিনিটে মার্তিনেজকে ফাউল করে মিলান ডিফেন্ডার সিমোন কায়ের হলুদ কার্ড দেখেন। ফলে পেনাল্টি পায় ইন্টার। তবে ভিএআর রিপ্লে দেখে কার্ড ও পেনাল্টি দুটোই বাতিল করেন রেফারি। ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় মার্তিনেজ-জোকোরা।
দুই গোলে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় ফেরার চেষ্টা করে মিলান। কিছুটা গুছিয়ে খেলতে শুরু করে তারা। ব্রাহিম দিয়াজ, অলিভিয়ের জিরুদ ও সান্দ্রো তোনালিরা টুকটাক সুযোগ পেয়েও সেগুলো কাজে লাগাতে পারেনি। প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল ইন্টার। প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যেই জেকোর একটি নিচু শট দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক মাইনান। শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধান নিয়েই শেষ হয় খেলা। প্রথম লেগে মিলানকে হারিয়ে ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখে ইন্টার। ইস্তাম্বুলে ফাইনালের টিকিট পেতে হলে ইন্টারের হোম ম্যাচে অবিশ্বাস্য কিছু করতে হবে মিলানকে। ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টে দুই দলের পাঁচবারের দেখায় এই প্রথম এসি মিলানকে হারায় ইন্টার। আগের চার দেখায় দুবার জিতেছিল মিলান, অন্য দুটি ড্র হয়েছিল।

ইন্টারের হয়ে প্রথমার্ধে এক গোল করা জোকো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার দৌড়ে লুকা মদ্রিচকে ছুঁয়ে ফেলেন। এই মৌসুমে গ্রুপপর্বে সেল্টিকের বিপক্ষে ৩৭ বছর ৫৪ দিন বয়সে গোল করেছিলেন মদ্রিচ। ফুটবলের পরিসংখ্যানভিত্তিক টুইটার অ্যাকাউন্ট অপটা অ্যানালিস্ট জানিয়েছে, চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে সবচেয়ে বেশি বয়সি গোলদাতাদের তালিকায় দ্বিতীয় জেকো। চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে তার চেয়ে বেশি বয়সে গোল পেয়েছেন রায়ান গিগস। ২০১১ সালে শালকের বিপক্ষে প্রথম লেগে গোল করেছিলেন গিগস। আর চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সে গোলের রেকর্ড ফ্রান্সেসকো টট্টির। ২০১৪ সালে সিএসকেএ মস্কোর বিপক্ষে ৩৮ বছর ১ মাস ২৯ দিন বয়সে গোল করেছিলেন রোমের সম্রাটখ্যাত এই কিংবদন্তি।
প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে গোল না পাওয়ায় কিছুটা আক্ষেপ করেন ইন্টার মিলানরে কোচ সিমোন ইনজাগি। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেতেই তাদের মন উজার করে খেলেছে। মাঠের সব অংশে তাদের বিচরণ ছিল। আমরা খুবই খুশি। তবে তার পরও মনে হয়, সামান্য কিছু ঘাটতি ছিল। প্রথমার্ধে আমরা অসাধারণ খেলেছি এবং অনেক সুযোগ তৈরি করেছি। কিন্তু যতটা সুযোগ পেয়েছি, স্কোরলাইনে সেটির প্রতিফলন পড়েনি। আরও গোল করা উচিত ছিল। ডার্বি ম্যাচের চাপ সামলানোর ক্ষেত্রে ছেলেরা দারুণ ছিল। আমাদের এটা ধরে রাখতে হবে। আমরা স্বপ্নের মঞ্চ থেকে স্রেফ একধাপ দূরে। এর পর আমাদের হোম ম্যাচ। আবারও চাপ থাকবে। তবে ছেলেরা জানে কী করতে হবে। খুব বেশি চিন্তা না করে নিজেদের কাজ করে যেতে হবে, নিজেদের খেলাটা খেলতে হবে এবং মাঠে নিজেদের মেলে ধরতে হবে। ইন্টার মিলানের খেলা মাত্র অর্ধেক হয়েছে। এখনই জয়োৎসব করার কিছু হয়ে যায়নি। পরের ম্যাচটাও জিততে হবে। কাজটা সহজ হবে না। কারণ, মিলান কতটা ভালো দল সেটা তো আমাদের চেয়ে ভালো কেউ জানে না। তারা যে কোনো মূল্যে ফেরত আসতে চাইবে। এরপরেও আমি সবাইকে বলেছি, আমরা স্বপ্নের কাছে।’
এই ম্যাচ হেরেও হাল ছাড়ছেন না এসি মিলান কোচ স্টেফানো পিউলি। তিনি বলেন, ‘বাস্তবতা হলো প্রথমার্ধে আমাদের চেয়ে ইন্টার অনেক ভালো খেলছে। তারা দুটি গোল করেছে। আমরা দ্বিতীয়ার্ধে উন্নতি করেছি এবং গোছানো পারফরম্যান্স দেখিয়েছি। কিন্তু জালের দেখা পাইনি। আমার ছেলেদের সামর্থ্য নিয়ে আমার কোনো প্রশ্ন নেই। কারণ, আমি জানি ওরা চাইলেই পরের লেগে ফিরে আসতে পারবে। দ্বিতীয় লেগে স্বাভাবিকভাবেই আরও আগ্রাসী মানসিকতা দেখাতে হবে আমাদের এবং আরও ভালো খেলতে হবে। ফিনিশং আরো নিখুঁত করতে হবে। এই ম্যাচে খেলার অবস্থায় ছিল না রাফায়েল লিয়াও। তবে পরের ম্যাচ ছয় দিন পর। আশা করি, সে প্রস্তুত হয়ে উঠবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়