চট্টগ্রামে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার স্বামী পলাতক

আগের সংবাদ

চ্যালেঞ্জ উত্তরণে সংস্কার জরুরি : বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জ দেখছে আইএমএফ

পরের সংবাদ

মেলান্দহে বৈশাখী মেলা যেন মাদকের আখড়া

প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাকিব আল হাসান নাহিদ, মেলান্দহ (জামালপুর) থেকে : প্রতিবছরের মতো মেলান্দহে এবারও চলছে বৈশাখী মেলা। মেলায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চস্বরে মাইক ও সাউন্ড বক্স বাজানোর শব্দে অতিষ্ঠ এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ অসুস্থ ব্যক্তি ও শিশুরা। পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়া বিঘিœত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া মেলার মাঠে পাগলদের বসানো প্রতিটি ডেরায় চলছে মাদক সেবন ও সেবনের সরঞ্জামাদি বিক্রি। এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
মেলা উপলক্ষে খোলা ট্রাক, অটোরিকশা, মাহিন্দ্রা ও নছিমন গাড়িতে গাদাগাদি করে উচ্ছৃঙ্খল নৃত্য। উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে উঠতি বয়সি তরুণরা পাড়া দাপিয়ে যাচ্ছে মেলাস্থলে। এ নিয়ে অতিষ্ঠ পরীক্ষার্থী ও স্থানীয়রা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
গত ১৪ এপ্রিল শুরু হয়েছে এ মেলা। চলবে বৈশাখ মাসজুড়ে। জানা গেছে, মেলায় বিভিন্ন পণ্যের কয়েকশ স্টল রয়েছে। প্রতিটি স্টলের জন্য মেলা কমিটিকে দিতে হয় ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এতে মেলায় বাণিজ্য হচ্ছে কয়েক কোটি টাকার। প্রতিদিন মেলা প্রাঙ্গণে চলছে সার্কাস, চড়কি ও নানান গানের আসর।
স্থানীয়রা বলছেন, মেলার মাইক ও সাউন্ড বক্সের উচ্চশব্দে পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছে। মাদকের নেশায় পড়ে ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে তরুণ সমাজ। মেলার আয়োজক কমিটি অর্থ আয়ের জন্য পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা না করে পরীক্ষার মধ্যেই মেলা চালু রেখেছে।
স্থানীয় এসএসসি পরীক্ষার্থীরা বলে, মেলায় দিন-রাত প্রায় সময়ই উচ্চ শব্দে মাইকে বা ডেকসেটে বাজানো হচ্ছে গান-বাজনা। মেলায় আগত দর্শনার্থী ও যানবাহনের হর্নের শব্দে পড়ালেখা করতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। এসব শব্দ কানে এসে লাগে। মনোযোগ সহকারে পড়তে পারি না। যানবাহন ও লোকজনের ভিড়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে যায়।
অভিভাবকরা বলেন, যেভাবে উচ্চ শব্দে মাইক বা ডেকসেট বাজানো হচ্ছে এতে করে আমাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় বিঘœ ঘটছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়, এ দাবি জানিয়েছেন তারা।
মেলার সার্বিক বিষয় দেখভাল করা দুরমুঠ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেকুজ্জামান জুবেরী মুঠোফোনে ভোরের কাগজকে বলেন, মাজার মেলায় আগত পাগলেরা মাদক খায়, এটা দীর্ঘদিন থেকেই চলছে। পাগলেরা মাদক খায়, সারাদেশ জানে। এটা প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে থাকে, আমরাও থাকি। তবে তরুণ শিক্ষার্থীরা যাতে এর সঙ্গে জড়িত না হতে পারে এজন্য আমরা চেষ্টা করছি। আর উচ্চ শব্দে গান বাজানোয় চলমান এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে বিঘœ ঘটায় প্রশাসনের নির্দেশে গত শনিবার মাইক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মেলান্দহ থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা সাধ্যমতো মাদক নির্মূলের চেষ্টা চালাচ্ছি। কয়েকবার মেলায় অভিযান চালিয়েছি। এ সময় আমাদের চোখে এমন কিছু পড়েনি। আবার গিয়ে যদি দেখতে পাই তাহলে ব্যবস্থা নেব।
এ নিয়ে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি এই প্রথম জানলাম। মেলার পারমিশন কে দিয়েছে জানি না। আমার কাছ থেকে কেউ পারমিশন নেয়নি। তবে আমি বিষয়টি জানলাম, দেখব।
মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম মিঞা ভোরের কাগজকে বলেন, ইতোমধ্যেই মেলায় যাতে উচ্চ শব্দে গান না বাজে সে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্য বিষয়গুলো নিয়ে দ্রুত সময়ে সরজমিন গিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়