ল²ীপুরে যুবলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা

আগের সংবাদ

উপজেলা নিয়ে প্রশাসনে অস্বস্তি : আমলারা বলছেন, কোনো সমস্যা নেই > চেয়ারম্যানরা বলছেন, আদালতই আমাদের মর্যাদা ঠিক করে দেবে

পরের সংবাদ

কাস্তেয়ানোসের এক হালি গোলে বিধ্বস্ত রিয়াল

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : লা লিগার ম্যাচে গত মঙ্গলবার রাতে মুখোমুখি হয় টেবিলের দুইয়ে থাকা দল রিয়াল মাদ্রিদ এবং টেবিলের নবম স্থানে থাকা দল জিরোনা। ইউরোপ এবং স্পেনের সফলতম দলগুলোর মধ্যে একটি রিয়াল। তারপরও এই ম্যাচে দলটি ৪-২ গোলের বড় পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। রিয়ালের জালে জড়ানো চার গোলের চারটিই করেন ভালেন্তিন কাস্তেয়ানোস। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সফলতম দলটির জালে এক হালি গোল জড়িয়ে স্বপ্নের মতোই একটি রাত কাটিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
কাস্তেয়ানোস যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকার থেকে ধারে খেলতে এসেছেন জিরোনায়। গত মঙ্গলবারের ম্যাচের আগে তার তেমন কোনো পরিচিতিও ছিল না। বিপুল পরিচিতি থাকার মতো কিছু করতেও পারেননি তিনি। তবে এবার রিয়ালের জালে একে একে চারটি গোল করে তিনি ফুটবল বিশ্বে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন। পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সাবেক ক্লাবটি ম্যাচের শুরু থেকেই গুছানো খেলার দিক দিয়ে এগিয়ে ছিল। তারা বল দখলও করে রেখেছিল ম্যাচের ৭১ শতাংশ সময়। তবে আক্রমণের নৈপূন্য ভালো ছিল জিরোনার ফরোয়ার্ডদের। তাছড়া দলটির আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়দের নেতৃত্বে ছিলেন কাস্তেয়ানোসের মতো একজন উঠতি তারকা। তিনি এবং তার সতীর্থরা বল কম সময়ের জন্য পায়ে পেলেও আক্রমণ করেছেন ধারাবাহিকভাবে। বল পেলেই তারা ছুটে গিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষণভাগে হামলা করতে। এর সুফল পেতে তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে মাত্র ১২ মিনিট। ম্যাচের ১২তম মিনিটেই এক দুর্দান্ত আক্রমণ থেকে কাক্সিক্ষত গোলটি পেয়ে যান কাস্তেয়ানোস। এটিই ছিল তার ক্যারিয়ারের প্রথম গোল যা বড় কোনো ক্লাবের জালে জড়িয়েছে। এর ১২ মিনিট পরই তিনি ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। তার দ্বিতীয় গোলে ২-০ ব্যবধানের লিড পায় জিরোনা। দুই গোল হজম করে ম্যাচ সমতায় ফেরানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠে ভিনিসিয়াস জুনিয়র এবং মার্কো আসেন্সিওরা। অধিকাংশ সময় বল দখলে রেকে তারা একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায়। এর সুবাদে ৩৪ মিনিটের সময় ভিনিসিয়াস একটি গোল করে ব্যবধান কমিয়ে আনে। তার এই গোলের কারণে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে জিরোনা। বিরতির পর মাঠে নেমে ব্যবধান বাড়ানোর দিকে আরো মনোযোগী হয় জিরোনার আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা। ৪৬তম মিনিটেই হ্যাটট্রিক পূরণ করে নেন কাস্তেয়ানোস। এরপর জিরোনার খেলা গড়ায় মাঝমাঠে। আক্রমণের সুযোগ পেলেও তারা শট না নিয়ে বল দখলে রাখার চেষ্টা করেন। তাছাড়া জিরোনা কোচ মিচেল রক্ষণ ভাগেও খেলোয়াড়দের মনোযোগী হওয়ার নির্দেশ দেন। তার শিষ্যরা রক্ষণভাগ সামলে মাঝে মাঝে আক্রমণেও উঠছিল। এর সুবাদেই কাস্তেয়ানোস পেয়ে যান তার চতুর্থ গোলের দেখা। ৬২ মিনিটে তার করা এই গোলের কারণে জিরোনার জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। এরপর রিয়াল মাদ্রিদ একাধিক আক্রমণ করলেও কোনো সুফল বয়ে আনতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ৮৫তম মিনিটে রিয়ালের হয়ে একটি সান্ত¡নাসূচক গোল করেন লুকাস ভাজকুয়েজ। নির্ধারিত সময় শেষে গুরুত্বপূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে জিরোনা।
রিয়াল মাদ্রিদের এই হারের কারণে দলটি শিরোপা জয়ের দৌড়ে বার্সেলোনার চেয়ে আরো পিছিয়ে গেলো। ৩০ ম্যাচের ২৪টিতে জয় নিশ্চিত করে এই মুহূর্তে ৭৬ পয়েন্ট নিয়ে লা লিগা টেবিলের শীর্ষস্থানে আছে বার্সা। অন্যদিকে তাদের চেয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলে ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে আছে রিয়াল। কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যদের এই হারের কারণে বার্সার সঙ্গে তাদের ব্যবধান বেড়ে ঠেকল ১১ পয়েন্টে।
কাস্তেয়ানোসের আগে ১৯৪৭ সালে রিয়াল ওভিয়েদোর হয়ে রিয়ালের জালে একা ৫ গোল করেছিলেন এস্তেবান এচেভেরিয়া। এবার প্রায় ৭৬ বছর পর জিরোনার ফরোয়ার্ড ফিরিয়ে আনলেন রিয়ালকে বিব্রত করার সেই ইতিহাস। ২০১৭ সালে এই ক্লাবের হয়েই ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ে তার অভিষেক হয়েছিল। ওই মৌসুমেই তাকে ধারে পাঠানো হয় উরুগুয়ের ক্লাব মন্দেভিদেয়ো সিটি তর্কেতে। পরের বছর এই ক্লাবেই চলে যান তিনি। সেখান থেকে ধারে খেলতে যান তিনি মেজর লিগ সকারের দল নিউইয়র্ক এফসিতে। নতুন ক্লাবের হয়ে প্রথম ম্যাচেই গোলের দেখা পান তিনি। পরের বছর ‘অপশন টু বাই’ কাজে লাগিয়ে তাকে দলে নিয়ে নেয় নিউইয়র্ক এফসি। যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে পাকাপাকিভাবে নাম লিখিয়ে হয়ে ওঠেন ক্লাবটির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
প্রথম মৌসুমে ক্লাবের হয়ে ১১ গোল করেন তিনি, সহায়তা করেন ৭ গোলে। কোভিড মহামারিতে বাধাগ্রস্ত পরের মৌসুমে খুব ভালো কিছু করতে পারেননি তিনি। তবে তার সেরাটা মেলে ধরেন ২০২১ সালে। সেবার ১৯ গোল করে ও ৮ গোলে সহায়তা করে জিতে নেন মেজর লিগ সকার গোল্ডেন বুট।
তখনই কাস্তেয়ানোস নজরে আসেন ম্যানচেস্টার সিটির স্কাউটদের। সিটির কোচ পেপ গার্দিওলার সঙ্গে তখন স্কাউটদের আলোচনা হয় তাকে দলে নেওয়া নিয়ে। নিউইয়র্ক এফসির এমএলএস কাপ জয়ে বড় অবদান ছিল কাস্তেয়ানোসের। সেই ম্যাচটি একটি রেস্টুরেন্টে বসে দেখেছিলেন গার্দিওলা। ওই ম্যাচ দেখেই এই ফরোয়ার্ডকে মনে ধরে সিটি কোচের। সেই মুগ্ধতা ব্যক্ত করে তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমার মনে হয়, এই ছেলেটির পরের পদক্ষেপ হবে ইউরোপে। স্কাউটিং বিভাগ আমাকে ওর কথা বলার পর যা দেখলাম, তাকে দারুণ মানসম্পন্ন ফুটবলার মনে হলো এবং ইউরোপে যেতে তাকে তৈরি বলেই মনে হলো।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়