আগামী মাসে ভারত যাবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আগের সংবাদ

তিতাসের গ্যাস সরবরাহ পাইপলাইনের দুরবস্থার কারণেই লিকেজ : বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা

পরের সংবাদ

মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিয়ে রাজাকার যুদ্ধাপরাধী মতিন গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ এলাকা থেকে মো. আব্দুল মতিন (৭০) নামে এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত রবিবার র‌্যাব-৩ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। আব্দুল মতিনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে র‌্যাব-৩ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন।
র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পলাতক ছিলেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন তিনি। যুদ্ধাপরাধী আব্দুল মতিন মৌলভীবাজার বড়লেখার পাখিয়ালার মৃত মিরজান আলীর ছেলে।
র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫টি অভিযোগ আনা হয়। তথ্য-প্রমাণ মতে, আব্দুল মতিন ও মামলার অপর আসামি তারই আপন ভাই আব্দুল আজিজ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের বারপুঞ্জিতে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে তারা পালিয়ে বড়লেখায় এসে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। আব্দুল মতিন বড়লেখা থানা জামায়াত ইসলামী ও ১৯৭১ সালে গঠিত ইসলামী ছাত্র সংঘের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। আব্দুল মতিনসহ রাজাকার বাহিনীর অন্য সদস্যরা মিলে মৌলভীবাজার এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান।
তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর আব্দুল মতিন, আব্দুল মান্নান ওরফে মনাই ও আব্দুল আজিজ ওরফে হাবুলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। গত ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর তদন্ত শেষ হয়। তদন্ত চলাকালীন ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের পহেলা মার্চ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আব্দুল আজিজ ও আব্দুল মান্নানকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তারা কাশিমপুর কারাগারে আটক রয়েছেন। তবে আব্দুল মতিন তখন গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান। ট্রাইব্যুনালের তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগ প্রসিকিউশনের মাধ্যমে প্রমাণিত হলে গত বছরের ১৯ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তিনজনকেই মৃত্যুদণ্ড দেন।
২০১৬ সালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে আব্দুল মতিন পলাতক জীবনযাপন শুরু করেন। তিনি মৌলভীবাজারের বড়লেখা থানাধীন পাখিয়ালা গ্রামের নিজ বাড়ি ছেড়ে সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ থানা এলাকায় তার ভাগ্নের বাড়িতে আত্মগোপন করেন। সেখানে নিজেকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় দিতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে শুরু করে পলাতক জীবন শুরু করার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মতিন জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়