টানা দাবদাহের পর সিলেটে স্বস্তির বৃষ্টি

আগের সংবাদ

প্রথম দিনের ঈদযাত্রায় স্বস্তি : কমলাপুরে নেই হুড়োহুড়ি, সড়ক মহাসড়কে নেই যানজট, নৌপথে বেড়েছে যাত্রীর চাপ

পরের সংবাদ

বিশিষ্টজনদের বিবৃতি : সেলিনার নিরাপত্তা নিশ্চিত ও চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : সম্প্রতি কবি ও চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজের সদ্য সাময়িক বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কবি সেলিনা আক্তার শেলীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া একটি পোস্ট নিয়ে একটি মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে বলে বিশিষ্টজনরা এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছেন। বিবৃতিতে তারা কবি সেলিনা শেলীকে অযথা হয়রানি না করা ও তার নিরাপত্তা বিধানের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে কবি সেলিনা শেলীর বিরুদ্ধে নেয়া পদক্ষেপ প্রত্যাহার, মৌলবাদী চক্রের হীন ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আজ বুধবার বিকাল ৪টায় চট্টগ্রামের চেড়াগি পাহাড় চত্বরে সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মী ও সচেতন নাগরিক সমাজের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আহ্বান করা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিশিষ্টজনদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাঙালি মুসলমান চিরকাল পবিত্র রমজান মাসকে ‘মাহে রমজান’ বা ‘রমজানুল মোবারক’ বলতে অভ্যস্ত। ইদানীং ‘রামাদান’ শব্দটির ব্যবহার কবি সেলিনা শেলীর কাছে আরোপিত মনে হওয়ায় তিনি এ বিষয়ে ফেসবুকে একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশ করেন। কিন্তু সেলিনা শেলীর সহজ, সরল বিশ্বাসে দেয়া এই বক্তব্যকে অহেতুক বিকৃত ও অতিরঞ্জিত করে সুযোগসন্ধানী মৌলবাদীগোষ্ঠী অহেতুক পরিস্থিতিকে জটিল করার চেষ্টা করতে থাকে। কুশপুত্তলিকা দাহসহ মিছিল-সমাবেশ করে মৌলবাদীগোষ্ঠী তাকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। নিরাপত্তাহীনতায় কবি সেলিনা শেলী ফেসবুকে দেয়া তার পোস্টটি পরবর্তীতে প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু এরপরও এই গোষ্ঠী তাকে নানাভাবে হেনস্তা অব্যাহত রেখেছে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, এদিকে সমগ্র বিষয়টি যাচাই-বাছাই ছাড়াই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীকে তার কর্মক্ষেত্র থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে এবং বিভাগীয় মামলা দায়ের করে। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, কবি সেলিনা শেলী ফেসবুকে দেয়া পোস্টের মাধ্যমে কোনোভাবেই ইসলাম ধর্মের অবমাননা করেননি। পবিত্র রমজান মাসের বিরুদ্ধেও তার কোনো বক্তব্য সেই পোস্টে ছিল না কিংবা ধর্মীয় মনীষীদের নিয়েও কোনো কটূক্তি তিনি করেননি। এরপরও তিনি যেভাবে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন- এটি একজন নাগরিকের ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি চরম অন্যায় আচরণ বলে আমরা মনে করি। তারা বলেন, আমরা সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অবিলম্বে এই দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অবিলম্বে সেলিনা আক্তার শেলীর বিরুদ্ধে নেয়া পদক্ষেপ প্রত্যাহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন- ডা. মাহফুজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রফেসর ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম, সভাপতি, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী কমিটি, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, সাবেক সভাপতি, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, চট্টগ্রাম কেন্দ্র, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, মহাসচিব, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, মফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ, নূরজাহান খান, মানবাধিকার সংগঠক, অধ্যাপিকা আনোয়ারা আলম, লেখক-শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক ফেরদৌস আরা আলীম, কথাসাহিত্যিক, শিশির দত্ত, উন্নয়ন সংগঠক, ডা. চন্দন দাশ, সাংস্কৃতিক সংগঠক, এডভোকেট আকতার কবীর চৌধুরী, আইনজীবী, কামরুল হাসান বাদল, কবি ও সাংবাদিক, বিশ্বজিৎ চৌধুরী, কবি ও সাংবাদিক, ওমর কায়সার, কবি ও সাংবাদিক, কুন্তল বড়ুয়া, নাট্যজন, হোসাইন কবির, শিক্ষক, ফারুক ইকবাল, সাংবাদিক, এজাজ ইউসুফী, কবি ও সাংবাদিক, রাজীব নূর, সাংবাদিক, লতিফা কবীর, সাধারণ সম্পাদক, মহিলা পরিষদ চট্টগ্রাম, শরীফ চৌহান, পরিবেশ সংগঠক, রাশেদ হাসান, আবৃত্তিশিল্পী, স্বপন মজুমদার, সাংস্কৃতিক সংগঠক, আহমেদ মুনির, লেখক মুহাম্মদ শামসুল হক, সম্পাদক, ইতিহাসের খসড়া, সুমন টিংকু, লেখক, আসমা বীথি, কবি, রিমঝিম আহমেদ, কবি, ফারহানা আনন্দময়ী, কবি। এছাড়া সম্মিলিত আবৃত্তি পরিষদ, উদীচী, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, কণ্ঠনীড়, নির্মাণ আবৃত্তি সংগঠন, বিভাষ, চট্টগ্রাম আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র সাংগঠনিকভাবে এই বিবৃতির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে বলে আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়