টানা দাবদাহের পর সিলেটে স্বস্তির বৃষ্টি

আগের সংবাদ

প্রথম দিনের ঈদযাত্রায় স্বস্তি : কমলাপুরে নেই হুড়োহুড়ি, সড়ক মহাসড়কে নেই যানজট, নৌপথে বেড়েছে যাত্রীর চাপ

পরের সংবাদ

নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী-ছাত্র সংঘর্ষে নিহত দুই : বছর পেরিয়ে গেলেও ৫ মামলায় নেই অগ্রগতি

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আজিজুর রহমান জিদনী : ঢাকা কলেজের ছাত্র ও নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন নিহত হওয়ার বছর পেরোলেও ৫ মামলায় এখনো অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিতে পারেনি পুলিশ। দুটি হত্যা মামলার মধ্যে একটি মামলার প্রধান আসামি এখনো পলাতক রয়েছেন, অপরটির তদন্তেও তেমন অগ্রগতি নেই। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন নিহতদের স্বজনরা। তবে মামলা দুটি তদন্তের দায়িত্বে থাকা ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) রমনা বিভাগ বলছে, তারা তদন্তকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আসামি শনাক্ত হলেই চার্জশিট দেয়া সম্ভব হবে।
ঢাকা কলেজের ছাত্র ও নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে গত বছরের ১৮ এপ্রিল রাতে শুরু হওয়া সংঘর্ষ পরের দিন দুপুর পর্যন্ত গড়ায়। এ সময় কুরিয়ার সার্ভিসের ডেলিভারিম্যান নাহিদ হাসান ও দোকানকর্মৗ মোরসালিন নিহত হন। আহত হন আরো শতাধিক ব্যক্তি। পরে এই সংঘর্ষের ঘটনায় হত্যাসহ পুলিশের ওপর হামলার বিষয়ে পাঁচটি মামলা হয়। মকবুল নামে বিএনপির এক নেতাকে গ্রেপ্তারও করা হয় তখন। পরবর্তীতে সংঘর্ষের ফুটেজ ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভিডিও পর্যালোচনা করে হামলা ও খুনের সঙ্গে ছাত্রলীগঘেঁষা ঢাকা কলেজে পড়ুয়া কয়েকজনের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ। দুটি হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ডিবি রমনা বিভাগকে। বাকি তিনটি মামলার তদন্ত করছে নিউমার্কেট পুলিশ। তবে সংঘর্ষের এক বছরেও নাহিদ হত্যা মামলার সন্দেহভাজন প্রধান আসামি ইমন বাশারকে খুঁজে পায়নি পুলিশ ও গোয়েন্দারা। ঢাকা কলেজের ছাত্র ইমন বাশারই গত বছরের ১৯ এপ্রিল সংঘর্ষের সময় নাহিদকে ছুরিকাঘাত করেছিলেন বলে তথ্যপ্রমাণ মিলেছে। এদিকে নাহিদ হত্যা মামলায় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তারা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির রমনা বিভাগের ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) তরিকুল আলম জুয়েল ভোরের কাগজকে জানান, মোরসালিন হত্যাকাণ্ড নিয়ে তারা সম্পূর্ণ অন্ধকারে রয়েছেন। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, মাথায় ভারী কিছুর আঘাতে মোরসালিনের মৃত্যু হয়েছে। তবে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারী শনাক্ত করা যায়নি। মামলার আসামীরা ছাত্র হওয়ায় আমরা সুচারুভাবে তদন্তকাজ চালিয়ে যাচ্ছি। যাতে নির্দোষ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
অন্যদিকে ডিবি রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হামায়ুন কবির বলেন, নাহিদ হত্যার প্রধান আসামি ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের ছাত্র ইমন বাশারকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। ঘটনার পর ডিবির অভিযানে কলেজ হোস্টেলে ইমনের কক্ষ থেকে দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছিল। এরপর তারা তাদের সমস্ত প্রযুক্তিগত শক্তি দিয়ে চেষ্টা চালিয়েও তার অবস্থান শনাক্ত করতে ব্যর্থ হন। ইমন সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরার বাসিন্দা। তাই সে ভারতে পালিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা। হামায়ুন কবির আরো জানান, নুরজাহান সুপার মার্কেটের সামনে নাহিদকে ছুরিকাঘাত করার সময় সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ইমনকে দেখা গিয়েছিল। তদন্ত শেষ করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। তবে তদন্ত কবে শেষ হবে সেই সময়সীমা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না।
নিহত মোরসালিনের ভাই নূর মোহাম্মদ ভোরের কাগজকে জানান, ঘটনার পর ডিবি কয়েকবার তার

সঙ্গে যোগাযোগ করলে পরে তা বন্ধ করে দেয়। এরপর তিনি একাধিকবার ডিবির সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা মামলার কোনো অগ্রগতি জানাতে পারেনি। হতাশ কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করার এক বছরেও জড়িতদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এটা খুবই হতাশাজনক।
এদিকে ডিএমপির নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান জানিয়েছেন, তিন মামলায় উল্লেখ করার মতো কোনো অগ্রগতি নেই। এছাড়া এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ১৫ জন বর্তমানে জামিনে রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়