প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
তিলক রায় টুলু, পূর্বধলা (নেত্রকোনা) থেকে : ঢাকার বংশাল থানার অপারেশন অফিসার এসআই গৌতম রায় হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১০ সালের এই দিনে (১৯ এপ্রিল) পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে রাতে ওয়ারীর বাসায় ফেরার পথে সূত্রাপুর থানার লালমোহন সাহা স্ট্রিট এলাকায় সুপরিকল্পিতভাবে তাকে গুলি করে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। তবে এই হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছরেও কোনো বিচার না পেয়ে হতাশ নিহতের পরিবার।
নিহত গৌতম রায়ের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার শ্যামগঞ্জ বাজারে। জানা গেছে, গৌতম রায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আইজিপি নব বিক্রম ত্রিপুরা, র্যাবের ডিজি হাসান মাহামুদ খন্দকার ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আশ্বাস দেন। এ ব্যাপারে সূত্রাপুর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলাও দায়ের করে। এর পর র্যাব ও পুলিশের মধ্যে আসামি ধরা নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা। হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে সারা দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে গত ১৩ বছরেও এ মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এ বিষয়ে নিহত গৌতম রায়ের স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মামলায় মোট ৪৭ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ২ জনের সাক্ষ্য নিতেই যদি ১০ বছর লেগে যায়, তবে বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণে আর কত বছর সময় লাগবে? এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার ও বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা
করেন তারা।
নিহত এসআই গৌতম রায়ের ছোট ভাই সাংবাদিক তিলক রায় বলেন, ‘আমার দাদার হত্যাকাণ্ড একটি পরিকল্পিত ঘটনা। যে পিস্তল দিয়ে দাদাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, সেই পিস্তল আজও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। দুজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী থাকার পরও আসল অপরাধীদের চিহ্নিত করতে পারেনি। তাই আমরা বারবার অভিযোগপত্র নিয়ে আপত্তি তুলেছি। যেহেতু আমরা মামলার বাদী নই, তাই পত্রিকার মাধ্যমে এ আপত্তি দিয়েছিলাম।’
তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘এসআই গৌতম রায় অনেক মামলার রহস্য উদঘাটন করে কয়েকবার পুরস্কারও পেয়েছেন। অথচ সেই মানুষটিকে দায়িত্বরত অবস্থায় হত্যা করে পালিয়ে গেছে খুনিরা। আজ ১৩ বছরেও হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে পারেনি পুলিশ। অতি দ্রুত আমার দাদা হত্যার বিচার চাই।’
উল্লেখ্য, গৌতম রায় গৌরীপুর প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও নেত্রকোনার পূর্বধলা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক ছিলেন।
গৌতম রায় হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে এলাকায় একাধিকবার মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু বিচার না পাওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
এসআই গৌতম রায়ের আত্মার শান্তি কামনায় আজ গ্রামের বাড়ি শ্যামগঞ্জে গীতা পাঠ, নাম কীর্তন, প্রসাদ বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।