মার্কিন সেনা অভিযান : সিরিয়ায় জ্যেষ্ঠ আইএস নেতা নিহত

আগের সংবাদ

বঙ্গবাজার ফের চক্রের কবজায়! : অস্থায়ী দোকান বসবে শনিবার, আগুন নির্বাপণ হয়নি পুরোপুরি

পরের সংবাদ

তিন দশকেই সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়েছে ৯ সেন্টিমিটারের বেশি

প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আগে যে ধারণা করা হচ্ছিল তার থেকেও দ্রুত বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার এক বিশ্লেষণ তাই বলছে। গত ৩০ বছর ধরে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যেসব ডাটা সংগ্রহ করেছে সংস্থাটি, তা বিশ্লেষণ করেই এই দুঃসংবাদ দিয়েছে তারা। এক রিপোর্টে নাসা জানিয়েছে, ১৯৯৩ সাল থেকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা মোট ৯.১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু ২০২১ থেকে ২০২২ সালেই উচ্চতা বেড়েছে ০.২৭ সেন্টিমিটার। এটিকে সামান্য মনে হলেও কয়েক দশকের বিচারে এই পরিমাণ অত্যন্ত ভয়াবহ। সময় যত যাচ্ছে এই উচ্চতাবৃদ্ধি আরো গতি পাচ্ছে।
সায়েন্স এলার্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৫০ সালে প্রতি বছর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ০.৬৬ সেন্টিমিটারে গিয়ে দাঁড়াবে। ২০৫০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপকূলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে এই অবস্থা আরো খারাপ হবে। আর এই অবস্থার জন্য মানুষকেই দায়ী করেছে নাসা।
মানুষ প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন করে চলেছে বায়ুমণ্ডলে। আর এটিই পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি করছে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি করছে। দুই মেরুতে বরফ গলায় নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে।
সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পরিমাপ করার জন্য সবথেকে ভাল উপায় হচ্ছে স্যাটেলাইট। মার্কিন-ফরাসি টপেক্স মিশন ১৯৯৩ সাল থেকে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা পরিমাপ করা শুরু করে। তারপর থেকে নাসা, ইএসএ এবং এনওএএর মতো সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে সমুদ্রপৃষ্ঠের পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রয়েছে। রাডার অল্টিমিটারের মতো বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন সারা বিশ্বে সমুদ্রপৃষ্ঠের আরো সুনির্দিষ্ট পরিমাপ তৈরি করতে সহায়তা করে। সমুদ্রের উচ্চতা নির্ণয় করতে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মহাসাগরের পৃষ্ঠ থেকে মাইক্রোওয়েভ সংকেত প্রতিফলন ঘটানো হয়। তারপর একটি স্যাটেলাইট থেকে পৃথিবী থেকে যাওয়া এই সংকেত রেকর্ড করা হয়। এতে কি পরিমাণ সময় লাগে সেটির হিসাব রাখা হয়। এরপর আগের বছরের সঙ্গে এই হিসাবের পার্থক্য বিবেচনা করে নির্ধারণ করা হয় যে, এক বছরে কতখানি উঁচু হয়েছে সমুদ্রপৃষ্ঠ।
ওয়াশিংটনে নাসার আর্থ সায়েন্স ডিভিশনের পরিচালক কারেন সেন্ট জার্মেইন বলেন, সা¤প্রতিক সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি নিয়ে আমরা নিশ্চিত। আমরা এখন সমুদ্রের উচ্চতা কতা এবং কত দ্রুত তা বাড়তে থাকবে সেটি আরো ভালোভাবে প্রজেক্ট করতে পারি। আমরা গত কয়েক দশক ধরে সমুদ্র পর্যবেক্ষণ করে তথ্য সংগ্রহ করেছি। এই হারে উচ্চতা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে কমপক্ষে ৮০ কোটি মানুষ আধা মিটার পানির নিচে তলিয়ে যাবে। সবথেকে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হবে মিয়ামি, নিউইয়র্ক, ব্যাংকক, সাংহাই, লিমা ও কেপ টাউনের মত শহরগুলো। শহর ছাড়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা সমুদ্রের নিচে তলিয়ে যাবে।
শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলে দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি বাস করে। এখানেই দেশের প্রধান বন্দরগুলো, বিনোদনমূলক এলাকাগুলো অবস্থিত। এছাড়া এই সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। এছাড়া ব-দ্বীপ অঞ্চল ও জলাভূমিগুলোও হুমকিতে রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়