ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সাব কমিশন গঠনের প্রস্তাব বাংলাদেশের

আগের সংবাদ

চিকিৎসার ফি নির্ধারণ কতদূর? : বেসরকারি হাসপাতালে সেবা নেন ৮৬ শতাংশ মানুষ, স্বাস্থ্য খাতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে

পরের সংবাদ

বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা : চিরিরবন্দরে লিচু গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা

প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আব্দুস সালাম, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) থেকে : দিনাজপুর চিরিরবন্দরে লিচুর সোনালী মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ ছড়াচ্ছে প্রকৃতিতে। লিচুর মুকুলের ঘ্রাণে চারদিকে মৌমাছির আনাগোনা। এবার সময়ের আগেই সোনালি মুকুলে ভরে গেছে চিরিরবন্দরের বাগানগুলোতে। তাই দখিনা বাতাসে দোল খাচ্ছে চাষির স্বপ্ন। আগাম ফুল আসায় বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের মনে আশার আলো জ্বালিয়েছে। গাছে গাছে নানা ফুলের সঙ্গে লিচুর সোনালি মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা করে তুলছে। থোকায় থোকায় হলুদ রঙের মুকুলে গাছগুলো ভরে গেছে। সোনালি রঙের মুকুল সুবাতাস ছড়িয়ে দিচ্ছে বাতাসে। আর মৌমাছি ব্যস্ত মধু সংগ্রহে।
চিরিরবন্দর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও রাস্তাঘাটে পা রাখলেই চোখে পড়ে বাগান, বসতবাড়ি ও রাস্তার পাশে লিচু গাছগুলোতে মুকুলের সমাহার। যেন অগণিত সোনারাঙা নাকফুলের ছড়াছড়ি। সেই মুকুল আবার সুবাস ছড়িয়ে দিচ্ছে বাতাসে। প্রতিটি লিছু গাছ ভরে গেছে ফুলে ফুলে। সরজমিন চিরিরবন্দর উপজেলার বিভিন্ন ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে এসেছে সোনালি রঙের মুকুল। তাই বাগান পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন লিচু চাষিরা। লিচু বাগানে মৌমাছি আর পাখিদের আনাগোনা, নয়নাভিরাম দৃশ্যে মুগ্ধ এই এলাকার পথচারী ও এলাকাবাসী।
লিচু চাষিরা জানান, চলতি মৌসুমে অধিকাংশ গাছেই মুকুল এসেছে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে, তাহলে এবার লিচুর বাম্পার ফলন হবে। এখন ফুলে ফুলে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকা। মুকুল যেন ঝরে না পড়ে, তাই জন্য বাগানের দিকে নজর রাখছেন বাগান চাষিরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চিরিরবন্দরে ১২টি ইউনিয়নের ৫৮০ হেক্টর জমিতে লিচু গাছ রয়েছে। এই জমিতে লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭২১৫ টন। যা বিঘা প্রতি ২.৬ টন।
উপজেলার ১০ পুনটি ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক জানান, ৪ বিঘা জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। গাছগুলোতে এখন মুকুল এসেছে তাই নিবিড় পরিচর্যা করা হচ্ছে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে আর প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হয়, তবে ৭ থেকে ৮ লাখ লিচু উৎপাদন হবে।
পুনটি ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি বলেন, বাগান কয়েক ধাপে বিক্রি হয়। গাছে মুকুল আসার আগেই এবং লিচু গুটি হওয়ার পরে বাগান বিক্রি হয়। লিচু পাকার আগেই বেশ কয়েকবার পরিবর্তন হয় বাগানের মালিকানা। তবে অনেক বাগান মালিকরা লাভের আশায় নিজেই শ্রম দেন। অনেক সময় খরার কারণে লিচুর আকার ছোট হয়ে যায়। আবার অনেক সময় বৈশাখী কালবৈশাখী ঝড়ে নষ্ট হয় লিচু বাগান। তখন ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন লিচু চাষি ও ব্যবসায়ীরা। তারা আরো বলেন, গাছে মুকুল এসেছে। বাগানে কীটপতঙ্গ, মাকড়সা দূর করার জন্য বালাইনাশক স্প্রে করা হয়েছে। অমরপুর ইউনিয়নের এক লিচু চাষি বলেন, প্রায় ২ বিঘা জমিতে আমার লিচু বাগান রয়েছে। অনাবৃষ্টি আর খরার কারণে মুকুল এসে ঝরে পড়ে। আবার ঝড় আর বৃষ্টির কারণে কিছু মুকুল ঝরে যায়। এবার ঠিক সময়ে লিচুর মুকুল এসেছে। মুকুল আসার পর পরই সামান্য বৃষ্টি হওয়াতে কুঁড়ি সতেজ হয়েছে। গাছে ভিটামিনও কম স্প্রে করতে হচ্ছে।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা শারমিন বলেন, উন্নত মানের লিচু উৎপাদন হয়ে থাকে এই উপজেলায়। এসব জাতের মধ্যে রয়েছে চায়না টু, চায়না থ্রি বোম্বাই, মাদ্রাজি, কাঁঠালি, হাড়িয়া, এলাচি, বারি টু বালি থ্রি এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় বেদনা জাতের লিচু। বর্তমানে চাষিরা ব্যস্ত রয়েছে বাগান পরিচর্যায়। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত লিচু চাষিদের উন্নত জাতের লিচু উৎপাদনে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছি। জৈব রাসায়নিক পদ্ধতিতে নিচু উৎপাদনের জন্য কৃষি বিভাগ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। চলতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে বলে আশা করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়