বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের : গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা বিএনপির কারণেই বারবার হোঁচট খায়

আগের সংবাদ

আত্রাই উপজেলা মিলনায়তনের পাশে জলাবদ্ধতা

পরের সংবাদ

ঘরের মাঠে সিরিজ জিততে ব্যর্থ তপু-জামালরা

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশের বিপক্ষে ফিফা মার্চ উইন্ডোর দুটি প্রীতি ম্যাচের প্রথমটিতে ১-০ গোলে পরাজিত হয়ে পিছিয়ে পড়ে সেশেলস। গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচে তারা লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের ১-০ গোলে হারিয়ে সিরিজ রক্ষা করতে সক্ষম হয়। অন্যদিকে সিরিজ জয়ে ব্যর্থ জামাল -তপুরা ফুটবল প্রেমিদের হতাশায় ডুবিয়েছে। সেশেলসের বিপক্ষে সিরিজ শুরু হওয়ার আগে সৌদি আরবের মদিনায় একটি প্রস্তুতি ক্যাম্পও করে হ্যাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা। সেখানে মদিনার শীর্ষ ক্লাব ওহুদের বিপক্ষে এবং ম্যালাউইয়ের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচেও মাঠে নামেন জামাল ভূঁইয়ারা। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তপু বর্মণের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দলকে। ১-০ গোলে সেশেলস জয় নিশ্চিত করায় বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের সিরিজটি শেষ হয় ১-১ সমতায়।
ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারলেও সিরিজ জয় করবে বাংলাদেশ। এমন সমীকরণ সামনে থাকলেও কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরার চাওয়া ছিল জয়। এমন চাওয়া থেকে একাদশেও আনেন পরিবর্তন। এই পরিবর্তনে একাদশ থেকে বাদ পড়েন দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও। জামালের জায়গায় গতকাল দলের নেতৃত্ব দেন তপু বর্মণ। অধিনায়ককে একাদশ থেকে বাদ দেয়া থেকেই ধারণা করা যায় জয়ের জন্য কতটা মুখিয়ে ছিলেন কোচ। কাবরেরার চাহিদা মোতাবেক মাঠেও পারফর্ম করছিলেন খেলোয়াড়রা। প্রথম দিক থেকেই দুই দল জয়ের লক্ষ্যে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায়।
আক্রমণভাগের সঙ্গে দুই দলের কোচই বিশেষ নজর দিয়েছেন দলের রক্ষণভাগের দিকে। রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের দাপটে কোনো দলের ফরওয়ার্ডরাই জালের দেখা পাচ্ছিলেন না। প্রথমার্ধে বাংলাদেশের সেরা সুযোগ আসে যোগ করা সময়ে। পাল্টা আক্রমণে গোলের পরিস্থিতি তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। ফিরতি বলে তপুর শট আটকে দেন সেশেলস গোলকিপার। আক্রমণ প্রতি-আক্রমণের খেলায় প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য সমতা দিয়েই।
বিরতির পর দুই দলই ফের আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করেন। ৫৭ মিনিটে জোড়া বদল আনে বাংলাদেশ। রবিউলের জায়গায় জামাল এবং মজিবর জনির জায়গায় আসে ইব্রাহিম। তিনি মাঠে এলে অধিনায়কের বন্ধনিটা তাকে দিয়ে দেন তপু। এলিটা এসে দুটি সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি। ম্যাচের ৬০ মিনিটে বিপত্তি ঘটান বাংলাদেশের রক্ষণ ভাগের খেলোয়াড় সাদ উদ্দিন। বাংলাদেশের বক্সের ওপর উড়ে আসা বল ক্লিয়ারের চেষ্টা করেন তিনি।
দলের জাল রক্ষা করতে গিয়ে এই ডিফেন্ডারের পা উঠে যায় সেশেলসের ডিফেন্ডার ডেরিল লুইসের মাথার ওপর। তার এমন বিপজ্জনক ট্যাকল দেখে ভুটানি রেফারি পেনাল্টি দেন সফরকারীদের। পেনাল্টির সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগান সিরিজ রক্ষার মিশন নিয়ে খেলা দলের সেরা তারকা মাইকেল মানসিয়ানে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের জনপ্রিয় ক্লাব চেলসির হয়ে ৪টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই সেন্টারব্যাক স্বাগতিক গোলরক্ষক আনিসুর রহমানকে সহজেই হার মানিয়ে জালের দেখা পান। মাঝখান দিয়ে আলেতো শটে তিনি বল পাঠান জালে। এই গোল উল্লাসে ভাসিয়েছে সেশেলকে। এই গোল হজমের পর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ।
সাদ উদ্দিন এই নিয়ে তৃতীয়বার প্রতিপক্ষ দলকে পেনাল্টি দিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি। এর আগে শ্রীলঙ্কা রাজাপাক্সে টুর্নামেন্টে হাত দিয়ে বল ঠেকিয়ে স্বাগতিকদের পেনাল্টি দেন তিনি। মালদ্বীপে গত সাফে নেপালের বিপক্ষেও একইভাবে তার ফাউলে পেনাল্টি পায় প্রতিপক্ষ। পিছিয়ে থেকে শেষ সময়ে ১-১ করে ফাইনালে ওঠে নেপাল। এই গোল হজম করার পর ছন্দ হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা।
এরপর থেকে মনেই হয়নি বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছে। খেলায় ছিল না তেমন পরিকল্পনার ছাপ। তবে গোলের সুযোগ তৈরি করেছে বেশ কয়েকটি। সুযোগ কাজে লাগানোর মতো ফিনিশারের অভাবে শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয় বাংলাদেশ। অন্যদিকে সেশেলস কোনো গোলের সুযোগ তৈরি করতে না পারলেও স্বাগতিক ডিফেন্ডারের ভুলে সফলতার দেখা পায়। ২০২১ সালে শ্রীলঙ্কায় রাজাপাক্সে চার জাতি ট্রফি জেতার পর ২০২২ সালে তারা কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ জেতেনি। সিরিজ রক্ষার ম্যাচটিতে জয়লাভ তাদের রাজাপাক্সে টুর্নামেন্টের পর প্রথম জয়।
একাদশ থেকে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার বদলি হিসেবে আনা হয়েছে মাঝখানে হারিয়ে যাওয়া ফুটবলার রবিউল হাসানকে। তবে রবিউল দলে ফিরে তেমন কোনো প্রভাব রাখতে পারেননি। প্রথম ম্যাচের একাদশ থেকে গতকাল বাদ পড়েছেন ৭ বছর পর জাতীয় দলে ফেরা স্ট্রাইকার আমিনুর রহমান সজীব। তার বিপরীতে একাদশে এসেছেন বসুন্ধরা কিংসের স্ট্রাইকার সুমন রেজা।
সিরিজ সমতার এই ম্যাচে বাংলাদেশ দলে অভিষেক হয়েছে ডিফেন্ডার আলমগীর মোল্লার। রাইট ব্যাক রিমন হোসেন মাংসপেশীকে টান পড়ায় ১৮ মিনিট মাঠে আসেন তরুণ আলমগীর। নেমেই দারুণ এক ক্রস করেন। বলটা পড়ে রাকিব হোসেনের পায়ে। কিন্তু রাকিব বলে-পায়ে ঠিকমতো সংযোগই ঘটাতে পারেননি। ফলে সহজ সুযোগ নষ্ট হয়েছে। রাকিব দ্বিতীয়ার্ধে এককভাবে বল নিয়ে ঢুকে পোস্টের ওপর দিয়ে মেরেছেন। এটিও ছিল একটি সহজ সুযোগ। একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করার কারণেই শেষ পর্যন্ত সিরিজ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলো বাংলাদেশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়