বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘সবুজ মানব প্রাচীর’ তৈরি করল জিএলটিএস

আগের সংবাদ

ভোটের হাওয়ায় জোটের মিশন

পরের সংবাদ

সুনামগঞ্জে বৃষ্টিতে নদীর পানি বৃদ্ধি, একাধিক বাঁধে ফাটল

প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. সাজ্জাদ হোসেন শাহ্, সুনামগঞ্জ থেকে : সুনামগঞ্জের হাওড়াঞ্চলের সব স্থানে এখনো ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। অনেক বাঁধের নির্মাণ কাজে অনিয়ম রয়েছে। এরই মাঝে গেল ১৯ মার্চ ভোর রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি এবং বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি হচ্ছে। এতে নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এছাড়া একাধিক বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে হাওড়বাসীর দুঃখ-দুর্দশা আর দুর্যোগ যেন পিছু ছাড়ছে না।
হাওড় আন্দোলনের নেতা ও স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ মেরামত কাজে সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দিলেও কমপেকশন, সেøাভ ও দূর্বা ঘাস লাগানোতে নজরদারি কম ছিল। যার ফলে কাজ শেষ হয়েছে দাবি করলেও এখনো বাঁধের এসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ অসমাপ্ত রয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিরাই ও শাল্লা উপজেলার অধিকাংশ বাঁধেই ফাটল দেখা দিয়েছে। আটগাঁও ইউনিয়নের অধিকাংশ বাঁধে ছোট ছোট ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, ভারি বৃষ্টি হলে বড় ফাটলের আশঙ্কা রয়েছে। যথাসময়ে কাজ শুরু হলে বাঁধে এমন ফাটল দেখা দিত না।
অপরদিকে টাঙ্গুয়ার হাওড়ের নজরখালি বাঁধ (পাউবো নির্মিত বাঁধ নয়) ভেঙে যাওয়ায় মধ্যনগর উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ বংশীকুণ্ডা ইউনিয়নের কয়েকটি হাওড়ের ফসল ঝুঁকিতে রয়েছে। টাঙ্গুয়ার হাওড়ে চাষাবাদ না হওয়ায় নজরখালিতে ফসলরক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করেনি প্রশাসন। তবে স্থানীয়রা ভেঙে যাওয়া এ বাঁধটি স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করেছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় ২০৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে ১ হাজার ৭৬টি পিআইসির (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) মাধ্যমে ছোট বড় ৫৪টি হাওড়ে ৭৪৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত কাজ বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত ৯৫ শতাংশ বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিদিনের আবহাওয়ার বুলেটিন থেকে দেখা যায়, গত ১৯ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ

পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া গত সপ্তাহে ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের কারণে সুনামগঞ্জের প্রধান নদী সুরমাসহ শাখা নদী যাদুকাটা, বৌলাই, রক্তি, পাটলাই ও পইকরতলা, চলতি নদীসহ বিভিন্ন নদীতে পানি কিছুটা বেড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড আবহাওয়া সতর্কীকরণকেন্দ্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, আজ ২৮ মার্চ কিছু বৃষ্টিপাত হতে পারে। এরপর বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা খুবই কম।
মধ্যনগরের নিশ্চিন্তপুরের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হাই বলেন, ‘বাঁধ না দেয়ায় আমাদের মধ্যনগর উপজেলার হাওরগুলোর ফসল অনেকটা ঝুঁকিতে রয়েছে। ভারি বৃষ্টিপাত বা উজানের ঢল হলে আমাদের সর্বনাশ হয়ে যাবে।’
শাল্লা উপজেলার মৌরাপুর গ্রামের কৃষক শিশু সরকার বলেন, ‘আমাদের এলাকায় বাঁধের কাজ টেকসই হয়নি। বাঁধে এখনই ফাটল ধরছে।’ হাওড় বাঁচাও আন্দোলনের সহসভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, ‘আমি ধরমপাশা ও মধ্যনগরের বিভিন্ন বাঁধ দেখেছি। ইতোমধ্যে কয়েকদিনের অল্প বৃষ্টিতেই অনেক বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। কমপেকশন ও দূর্বা ঘাস লাগানো হয়নি। ভারি বৃষ্টিপাত হলে বাঁধ ঝুঁকিতে পড়বে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ শামসুদ্দোহা বলেন, অল্প বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি কিছুটা বাড়লেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে সম্প্রতি হালকা বৃষ্টিতে যেসব বাঁধে সামান্য ফাটল দেখা দিয়েছে, তা সংস্কারসহ বাঁধে দূর্বা ঘাস লাগানোর কাজ চলমান আছে। ফসল ঘরে ওঠার আগ পর্যন্ত এ কাজ চলমান থাকবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়