দুদক চেয়ারম্যান : দুর্নীতি নির্মূলে প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করবে দুদক

আগের সংবাদ

সড়কে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে : আইন ও বিধিমালার পরও সড়ক আইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন নেই

পরের সংবাদ

ইউনিয়নে সেবা নিশ্চিতে তৎপর চেয়ারম্যানরা

প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আছাদুজ্জামান : স্থানীয় সরকার বিভাগের একেবারে তৃণমূলে নাগরিক সেবা নিশ্চিতে কাজ করছেন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। তারা প্রতিনিয়ত ইউনিয়নে বসবাসরত নাগরিকের যে কোনো সমস্যা সমাধানে কাজ করেন। সারাদেশে বর্তমানে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন রয়েছে। একটি ইউনিয়ন পরিষদ একজন চেয়ারম্যান ৯ জন ইউপি সদস্য ও ৩ জন নারী সংরক্ষিত সদস্য নিয়ে গঠিত। বর্তমান সরকার গ্রামের অসহায় বয়স্ক, নারী ও পঙ্গুদের ভাতা চালু করেছে। মাতৃত্বকালীন ভাতা চালু করে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে।
সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খায়রুজ্জামান বাবু ভোরের কাগজকে বলেন, গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ছোট-ছোট বিবাদ যেমন, স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া, ভাইয়ে-ভাইয়ে মারামারি, জমিজমা নিয়ে বিরোধসংক্রান্ত বিষয়ে মীমাংসা করি। ট্রেড লাইসেন্স জন্মসনদ, মৃত্যু সনদ ও নাগরিক সনদ দিয়ে থাকি। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে ইউনয়িনবাসীর জন্য যে কোনো ধরনের আদেশ বা নির্দেশ এলে সেগুলো পালন করি। এছাড়া ইউনিয়নের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার সর্বদা চেষ্টা করেন বলেও জানান তিনি।
নাগরিকদের কী ধরনের সেবা দেন জানতে চাইলে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শহীদুল হাসান খান সোহাগ ভোরের কাগজকে বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে সবসময় জনগণের পাশে থাকাই আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমার ইউনিয়নে শান্তি-শৃঙ্খলা বাজায় রাখার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকি। তিনি আরো বলেন, আমার বাসিন্দাদের সরকারের পক্ষ থেকে যে যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা আসে তার সুষম বণ্টন করি।
আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী গ্রামের বিশু মাতুব্বর বলেন, আমি দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণ করেছি। আমার পরিবারে আয়-রোজগার করার মতো কেউ নেই। আমার স্ত্রী ভিক্ষা ও মানুষের বাড়িতে কাজ করে কোনো মতে সংসার চালায়। আমি পঙ্গু ভাতা পাওয়ার কারণে এই টাকা দিয়ে ওষুধ কিনে খাই। এতে আমার পরিবারের ওপর অনেকটা চাপ কমে গেছে। এই ভাত না পেলে আমি হয়তো ওষুধ কিনে খেতে পারতাম না।
উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী গ্রামের শাহিনুর আক্তার বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। আমার স্বামী দিনমজুরের কাজ করে। যে টাকা আয় করে তাতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। সরকার আমাকে মাতৃত্বকালীন ভাতা দিয়েছে। আমি এই টাকা দিয়ে আমার সন্তানকে দুধ কিনে খাওয়াই। এই ভাতা না পেলে আমার পক্ষে আমার সন্তানকে দুধ কিনে খাওয়ানো সম্ভব হতো না। এই ভাতা দেয়ায় আমি আমার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল হাসান খান সোহাগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।
বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোন্দকার সাইফুর রহমান শাহীন ভোরের কাগজকে বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার ইউনিয়নের নাগরিকদের সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করাই আমার প্রধান কাজ। কী ধরনের সেবা দেয়া হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ন্যায্যতার ভিত্তিতে বয়ষ্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, পঙ্গু ভাতা, বিধবা ভাতা নিশ্চিত করাই আমার দায়িত্ব। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। শান্তি-শৃঙ্খলা যাতে বজায় থাকে সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকার চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। যদি কারো জরুরি স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন হয় সেটাকে প্রাধান্য দেই। এককথায় আমার ইউনিয়নের জনগণ ভালো থাকলে আমি নিজেও ভালো বলে জানান চেয়ারম্যান শাহীন।
কেন পরিষদে এসেছেন জানতে চাইলে যদুনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের বাসিন্দা সানজিদা আক্তার হীরা ভোরের কাগজকে বলেন, আমার মেয়ে আফিফা জামান আইভী, শানজানা জামান আনভীর জন্মসনদ ও আমার স্বামী আছাদুজ্জামানের নাগরিক সনদ নিতে এসেছি। আমার সময় স্বল্পতার কারণে চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলামকে বললাম আমাকে জরুরি ঢাকায় ফিরতে হবে। শুনে তিনি বলেন, আমি আপনার সুবিধা মতো জায়গায় পৌঁছে দেব। লোকের মাধ্যমে তিনি সেগুলো আমাকে পৌঁছেও দিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, মাতৃত্বকালীন ভাতা (যাদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে) বয়স্ক ভাতা, পঙ্গু ভাতা ও বিধবা ভাতা সময়মতো দেয়াসহ নাগরিকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করাই মূলত একজন জনপ্রতিনিধির প্রধান কাজ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়