ভারত মিয়ানমার থাইল্যান্ড : কানেক্টিভিটি প্রকল্পে যুক্ত হতে আগ্রহী বাংলাদেশ

আগের সংবাদ

শুভ জন্মদিন পিতা

পরের সংবাদ

শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব নার্সিং কলেজের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : নার্সদের সেবায় রোগী দ্রুত সুস্থ হতে পারে

প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

** নার্সিং শিক্ষা নিলে শুধু দেশে নয়, বিদেশেও কর্মসংস্থান হবে **
কাগজ প্রতিবেদক : দেশের যুবসমাজকে নার্সিং শিক্ষা নেয়ার পাশাপাশি বৃহৎ পরিসরে সেবা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, নার্সিং শিক্ষা নিলে শুধু দেশে নয়, বিদেশেও কর্মসংস্থান হবে। উন্নত সেবা দিয়ে মানুষের মন জয় করতে পারলে নিজেরও আত্মতৃপ্তি আসবে। গতকাল বুধবার সকালে গাজীপুরের কাশিমপুরে ‘শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে নার্সিং কলেজ’-এর দ্বিতীয় ¯œাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা গ্র্যাজুয়েট হলেন, ডিগ্রি পেলেন, তারা যেন জনগণকে সব সময় সেবাটা দেয়। একজন রোগী চিকিৎসা ও ওষুধে যতটা না সুস্থ হবে চিকিৎসকদের সহানুভূতি আর নার্সদের সেবায় তার চেয়ে দ্রুত সুস্থ হতে পারে। রোগীদের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে। আমি চাই, সব ক্ষেত্রে যেমন বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে, এক্ষেত্রেও এগিয়ে যাবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সেবাধর্মের প্রতীক বিশ্বের খ্যাতনামা নার্স ও মানবসেবী ফ্লোরেন্স নাইটিংগেলের কথা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে স্পেশালাইজড হসপিটাল এন্ড নার্সিং কলেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তৌফিক বিন ইসমাইল, দ্বিতীয় ব্যাচের স্নাতক শিক্ষার্থী আনামুল হক, কেপিজে হেলথকেয়ার বেরহাদের সভাপতি নরহাইজাম বিনতি মোহাম্মদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে নার্সিং কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ মল্লিক। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কলেজের ২১০ জন স্নাতকের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করেন। তিনি হাসপাতালের ওয়েবসাইট, হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার ও মেডিকেল জার্নাল উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ও শেখ রেহানা ১৯৯৪ সালের ১১ এপ্রিল ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের ‘বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’ প্রতিষ্ঠা করি। এই ট্রাস্ট বিভিন্ন সেবাধর্মী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। সারাদেশে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। বিশেষায়িত এই হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজ প্রতিষ্ঠা ট্রাস্টের একটি মানবিক উদ্যোগ। এর মাধ্যমে ট্রাস্টের স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পেয়েছে। মালয়েশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী দাতোসেরি মোহাম্মদ নজিব বিন তুন আব্দুল রাজাক, ট্রাস্টের সহসভাপতি শেখ রেহানা ও আমি মিলে ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর এখানে বিশেষায়িত হাসপাতালের উদ্বোধন করি। নার্সিং সেবাকে গুরুত্ব দিয়ে এটি প্রতিষ্ঠা করি। গ্র্যাজুয়েট নার্স যেন হতে পারে সেই ব্যবস্থাটা আমরা নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে নার্সিংয়ের গুরুত্ব ও খ্যাতি বাড়ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি এনালিটিক প্রতিষ্ঠান ‘গ্যালাপ’র হিসাব মতে ২০২১ সালের মতো আবারো ২০২২ সালে নার্সিংকে সবচেয়ে বিশ্বস্ত পেশার খ্যাতি দেয়া হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসক ও নার্সরা কোভিড আক্রান্তদের সেবা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার সময় জাতির পিতা

যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও নির্যাতিত মা-বোনদের সুচিকিৎসার জন্য সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, ইংল্যান্ড, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডাক্তার ও স্পেশাল নার্স নিয়ে এসে তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তিনি তুলেছিলেন। নার্সিং পেশার সম্মান বৃদ্ধি, নার্সিং সেবা ও টেকনোলজির উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সঙ্গে নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আমরা নার্সিং পেশাকে ২য় শ্রেণিতে উন্নীত করেছি। এই সরকারের মেয়াদেই প্রায় ৪০ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছি। অভিজ্ঞতার জন্য চাকরির বয়সসীমাও শিথিল করেছি। পাশাপাশি দেশে-বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করে দিয়েছি। মানুষের সেবাকেই আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় ৪৪ হাজার ৫৩৪ জন নার্স ও মিডওয়াইফ কর্মরত আছেন। ২ হাজার ৩৬৭টি শূন্য পদের বিপরীতে সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান আছে। এছাড়া ১০ হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ৫ হাজার মিডওয়াইফের নতুন পদ সৃজন প্রক্রিয়াধীন আছে। বেসরকারি খাতে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠাকে আমরা উৎসাহ দিচ্ছি। নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রছাত্রীর আসন সংখ্যা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এ শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে শিক্ষক প্যানেল তৈরি করা, প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় শিক্ষকের পদায়ন এবং নার্স ও মিডওয়াইফদের জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়নে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। ফলে বিদেশেও চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি-২০১১ প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা দেশের স্বাস্থ্যখাতকে এগিয়ে নিচ্ছি। কমিউনিটি ক্লিনিকে ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে দিচ্ছি। এখন সেখানে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ইনসুলিনও বিনামূল্যে দেয়ার ব্যবস্থা আমরা করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়