মোহাম্মদ সোহেল, নোয়াখালী থেকে : নোয়াখালী সদর উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক আব্দুল হাকিমকে (৩৫) গলা কেটে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম। এর আগে গত শনি ও রবিবার বিকালে দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সদর উপজলার পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের মো. মমিন উল্যার ছেলে মো. মহিন (২৭), পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের রেজিয়াগো বাড়ির মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মো. কামাল ওরফে কামাল ডাকাত (৩৮), হারুন মোল্লা বাড়ির আনোয়ারুল হক নশুর ছেলে মো. আজাদ হোসেন (৩২), পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের অজি উল্যাহ পাটোয়ারী বাড়ির শাহজাহানের ছেলে রিপু মিয়া (২১), আক্কাস সওদাগর বাড়ির আক্কাস সওদাগরের ছেলে জাহিদ হাসান (২৮), পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের মাহফুজের বাপের বাড়ির মো. সেলিমের ছেলে সোহেল হোসেন ওরফে শাকিল (২৪), একই গ্রামের দোকান বাড়ির মকবুল আহমেদের ছেলে মমিন উল্যাহ (৩৭) ও পাটোয়ারী বাড়ির অজি উল্যার ছেলে নূর আলম মিস্ত্রি (৫৫)। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীর সঙ্গে নিহত অটোরিকশা চালক আব্দুল হাকিমের শক্রতা ছিল। একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা চলমান রয়েছে। প্রতিশোধ নেয়ার জন্য আব্দুল হাকিমকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অর্থের লোভ দেখিয়ে আব্দুল হাকিমের সিএনজি অটোরিকশার মালিক মহিনকে ব্যবহার করা হয়।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পরিকল্পনা হিসেবে মহিন তার বাড়িতে কামাল, রিপু, মোমেন, নূর আলমসহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে অবস্থান করেন। মহিন আব্দুল হাকিমকে অটোরিকশা রাখার কথা বলে কৌশলে বাড়িতে ডেকে নেন।
এরপর হাকিম অটোরিকশা জমা দেয়ার সময় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জন মিলে তার মুখ বেঁধে ফেলেন। পরবর্তীতে সব আসামি হাকিমকে উপজেলার পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের সফিগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ রাস্তার পূর্ব পাশে ইদ্রিস মিয়ার বাড়ির পেছনে নিয়ে হাত-পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা করেন।
গ্রেপ্তার রিপু ও অপর একজন মরদেহ গোপন করার জন্য শাবল, কোদাল ও বস্তা নিয়ে যান। একপর্যায়ে সব আসামি মিলে মৃত্যু নিশ্চিতের পর হাকিমের মরদেহ বস্তার ভেতর ঢুকিয়ে মাটি চাপা দেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, তদন্তকালে আসামি সোহেলের ভাষ্যমতে রিপুর বাড়ি থেকে শাবল ও কোঁদাল উদ্ধার করা হয়। মূল পরিকল্পনাকারী হত্যাকাণ্ডের জন্য আসামি মহিনের সঙ্গে ৪ লাখ টাকা চুক্তি হয়। তিনি জানান, আসামি রিপু ও সোহেল ওরফে শাকিল হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। গত শনিবার ও রবিবার বিকেলে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।