মাদ্রাসা কর্মচারীর কাণ্ড : জাতীয় পরিচয়পত্র ও এমপিওতে ভিন্ন তারিখ!

আগের সংবাদ

যে কারণে দলে নেই মাহমুদউল্লাহ

পরের সংবাদ

শান্ত তাণ্ডবে অস্থির ইংলিশরা

প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হোঁচট খাওয়া বালাদেশ দল টি-টোয়েন্টি সিরিজে অসাধারণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রথম ম্যাচে ইংলিশ বোলারদের একের পর এক ছক্কা-চারে ভাসিয়ে দুর্দান্ত এক জয় পেয়েছিল টাইগাররা। আর সেই জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন বর্তমান স্কোয়াডের টপঅর্ডার ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় ম্যাচেও গতকাল দলের হাল ধরে জয় পর্যন্ত নিয়ে গেলেন দলের এই অন্যতম ভরসার প্রতীক। এই জয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের এই সিরিজ ইতোমধ্যেই ছিনিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচের মতো এবারের জয়টা সহজ ছিল না টাইগারদের জন্য। ইংলিশদের আটকে দিতে দেশের বোলাররা যেমন ভালোভাবেই পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন তেমনি টাইগারদের আটকে জয় তুলে নিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন ইংলিশ বোলাররাও। লিটন দাস ভালোভাবে শুরুর চেষ্টায় ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে মাঠের প্রান্তে গিয়ে ধরা পড়েন স্যাম কারানের হাতে। তিনি সাজঘরে ফেরার পর তিনে নামা শান্ত অবস্থান শক্ত করে ধীরে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন। এর পরের মুহূর্তেই স্ট্রাইকে থাকা রনি তালুকদারের বিদায়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। আশা ছিল চারে নামা তৌহিদ হৃদয় অভিষেক ম্যাচের মতো ভালোভাবে সঙ্গ দেবেন শান্তকে। ১৮ বলে ১৭ নিয়ে তিনিও বিদায় নেন। এরপর আসেন মিরাজ। মিরাজ-শান্ত জুটি রানে গতি দেয়ার মুহূর্তে আদিল রশিদের হাতে ধরা পড়েন তিনিও। উইকেট পতনের ধারাবাহিকতা আরো গতি পায় সাকিব শূন্যহাতে বিদায় নিলে। এরপর ৩ বলে ২ রান নিয়ে বিদায় নেন আফিফও। এক প্রান্তে যখন ধারাবাহিকভাবে উইকেটের পতন হচ্ছিল তখন অবস্থান শক্ত করে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিচ্ছিলেন শান্ত। সুযোগ পেলে চার মেরে রানে গতি দিচ্ছিলেন, নয়তো দৌড়ে রান নিয়ে রান রেটের চাপ থেকে দলকে রক্ষা করছিলেন। ম্যাচের শেষ পর্যন্ত তিনি ৪৭ বলে ৪৬ রানের ইনিংস গড়েন। শেষ পর্যন্ত তার সঙ্গী ছিলেন তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের বাউন্ডারিতে ম্যাচের সঙ্গে বাংলাদেশ জয় করে সিরিজও। টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ফিল্ডিংয়েও নিজের দাপট দেখিয়েছেন এই ক্রিকেটার। তার দুর্দান্ত এক ক্যাচে সাজঘরের পথ ধরেছিলেন ২৮ বলে ২৮ রানের ইনিংস গড়া ডাকেট।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নবম আসরে আগ্রাসী ব্যাটিং দিয়েই শান্ত প্রমাণ করে দিয়েছেন নিজেকে। বিপিএলে ব্যাট হাতে তার পারফরমেন্স দেখেই বোঝা গিয়েছিল দুর্দান্ত ছন্দে আছেন এই ব্যাটসম্যান। ইংলিশদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই তিনি নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করে নিজের রূপ দেখিয়েছিলেন। এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও দলের হাল ধরা নায়কের নাম নাজমুল হোসেন শান্ত। রনি-লিটনের ওপেনিং জুটি ভালো শুরু এনে দিয়ে অপ্রত্যাশিত বলে আউট হন। রনির বিদায়ের পর তিন নম্বরে ব্যাট হাতে পিচে আসেন শান্ত। এসেই প্রথম বলে দর্শক ও ভক্তদের মর্মাহত করে আউট হন। মূলত সেই আউট ছিল আম্বায়ারেরই ভুল। আদিল রশিদের বল শান্তর ব্যাট এবং গøাভস স্পর্শ করে প্যাডে ঠেকাতে আম্পায়ার তাকে লেগ বিফোরের আউট দেন। তবে নিজের আত্মবিশ্বাস থাকায় রিভিউ নেন শান্ত। রিভিউতে জীবন ফিরে পান তিনি। জীবন ফিরে পেয়েই শুরু করেন তাণ্ডব। তার ঝোড়ো ব্যাটিংয়েই বাংলাদেশের দিকে জয়ের পাল্লা ভারী হয়। এর মধ্যে এক ওভারে তিনি টানা ৪টি চার মেরে দর্শকদের নান্দনিক ক্রিকেটের স্বাদ গ্রহণ করার সুযোগও দেন। আন্তর্জাতিক বিশ ওভারের ম্যাচে শান্ত নিজের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতকের দেখা পান ২৭ বল খেলেই। শেষ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের জয়ের ম্যাচটিতে ৩০ বলে ৫১ রান করে বিদায় নেন। বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জয়ের নায়ক শান্তই ম্যাচসেরা খেলোয়াড় ঘোষিত হন। ক্যারিয়ারে তিনি প্রথমবারের মতো অর্ধশত রান পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় আয়োজিত সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। তিনি ম্যাচটিতে ৪৮ বলে ৫৪ রান সংগ্রহ করে মাঠ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। ম্যাচে তিনি ভালো করতে পারলেও অন্যান্য ব্যাটারদের অপারগতায় ম্যাচটিতে পরাজিত হয়েছিল বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিনি নিজেকে ভরসার প্রতীক হিসেবে পরিচিত করেছেন বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে ভালো অবদান রেখেই। ইংলিশদের বিপক্ষে বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটারদের আগমনে টাইগাররা ভালো করবে এমন আশা ছিল শুরু থেকেই। এর সঙ্গে নাজমুল হোসেন শান্ত ওয়ানডে ম্যাচেও নিজেকে প্রমাণ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে তিনি দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেছেন ৮২ বলের মুখোমুখি হয়ে। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচেই তিনি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন। তার অসাধারণ ব্যাটিংয়ের সঙ্গে সাকিব-মুশফিকের পারফরমেন্স বাংলাদেশকে ঘরের মাঠে লজ্জাজনক হোয়াইটওয়াশ থেকে বাঁচিয়েছিল সেদিন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়