সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের উদ্বেগ

আগের সংবাদ

কেন এত ভবন বিস্ফোরণ? : সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাব, সামর্থ্যরে ঘাটতি আছে রাজউকের

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামে সভায় বক্তারা : ভোগ্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে সমন্বয় দরকার

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : রমজানে দ্রব্যমূল্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, একটি দেশ ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও আমলা এই তিন চাকার সমন্বয়ে চলে। রমজান মাসে অতি মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণের জন্য এই তিন চাকার মধ্যে সমন্বয় দরকার। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে গতকাল সোমবার চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তারা এসব কথা বলেন।
চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান, বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল মো. আনোয়ার হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ড. বদিউল আলম ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ। এছাড়া চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের জয়েন্ট কমিশনার মোহাম্মদ তফছির উদ্দিন ভূঁঞা, চিটাগাং চেম্বার সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, চেম্বার পরিচালক এ কে এম আক্তার হোসেন, মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি এ এম মাহবুব চৌধুরী, সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু, ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল বাহার সাবেরী, মহানগর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সালামত আলী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি সালেহ আহমেদ সুলেমান, পাহাড়তলী ব্যবসায়ী সমিতির জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল আলম, মেট্রোপলিটন শপ ওনার্স এসোসিয়েশনের আবুল কাশেম, চট্টগ্রাম ফ্রেশ ফ্রুটস ভেজিট্যাবলস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুব রানা, মিমি সুপার মার্কেটের সভাপতি জয়নাল আবেদিন কাঞ্চন, চাকতাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম মহিউদ্দিন (মুহিম) বক্তব্য রাখেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে চেম্বার পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), অঞ্জন শেখর দাশসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান বলেন, একটি দেশ ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও আমলা এই তিন চাকার সমন্বয়ে চলে। এই তিনের মধ্যে সমন্বয় না হলে আমরা বিপদে পড়ে যাব। রমজান মাসকে ঘিরে অনেকে অতি মুনাফা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল পণ্যের মাধ্যমে বাজার অস্থিতিশীল করতে চায়। যারা এ ধরনের কার্যক্রমে লিপ্ত হবে কিংবা কৃত্রিম সংকট তৈরি করবে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে প্রশাসন। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হবে না।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সাপ্লাইচেইন ব্যাপকভাবে বিঘিœত হয়ে দ্রব্যমূল্য বাড়লেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য হ্রাসকৃত মূল্যে ভোগ্যপণ্য বিতরণ কর্মসূচি এবং সব ভোক্তার জন্য দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে আমদানিতে শুল্ক হ্রাস ও অব্যাহতিসহ নানামুখী কারণে রমজান ও ঈদ কেন্দ্রিক সাপ্লাইচেইন নির্বিঘœ রয়েছে। চিটাগাং চেম্বার সরকারের সঙ্গে একযোগে বাজার মনিটরিংয়ে কাজ করে এসেছে এবং ভবিষ্যতে তা অব্যাহত থাকবে। আমরা ব্যবসা করব, তবে অবশ্যই সাপ্লাইচেইন ঠিক রাখব যাতে করে ভোক্তাদের কোনো অসুবিধা না হয়। তাই কৃত্রিম সংকট তৈরি না করে ব্যবসায়ীদের পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন এবং মানবিক দিক বিবেচনা করে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের উৎসব কেন্দ্রিক ছাড় দেয়ার নজির স্থাপন করার আহ্বান জানান তিনি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, রমজান ও ঈদকে ঘিরে অবনতি হয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নির্বিঘœ রাখতে আমরা মনিটরিং বাড়িয়ে দেব। পাশাপাশি প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনে সাধারণ জনগণের স্বার্থে সর্বদা প্রস্তুত থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
রমজান মাসে নৈতিকতার দিক বিবেচনা করে সীমিত লাভ করে পণ্য বিক্রি ও ভেজালরোধ এবং কৃত্রিম সংকট না করে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন। সভার সিদ্ধান্তসমূহ বিভিন্ন ট্রেডবডির নেতারা তাদের স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে জানানোর আহ্বান জানান স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ড. বদিউল আলম। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমন্বয় ও মনিটরিং না থাকায় আমরা এ ধরনের সভা করছি। ব্যবসায়ীরা যদি সচেতন হয় তাহলে প্রশাসনের কঠোরতা প্রয়োজন হয় না। কেউ অসাধু উপায় অবলম্বন করলে তার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করবে।
মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, অনেক ক্ষেত্রে পাইকারি থেকে খুচরা পর্যন্ত পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা কোনো ভাউচার দেখাতে পারে না। ফলে ইচ্ছামতো দাম বাড়ায় তারা। তাই ক্রয়-বিক্রয়ের ভাউচার ছাড়া যারা অতি মুনাফার লোভে ব্যবসা পরিচালনা করবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।
সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের সহযোগিতায় আমদানি এবং উৎপাদনকারী হতে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সাপ্লাইচেইন মনিটরিংয়ের একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে চিটাগাং চেম্বার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়