১০০০ টাকার নতুন নোট আসছে আজ

আগের সংবাদ

ক্যাসিনোর হোতারা ফের সক্রিয়

পরের সংবাদ

জলবায়ু পরিবর্তন ও জাতিসংঘের মহাসচিবের আহ্বান

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাব নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মঙ্গলবার দেয়া এক ভাষণে মহাসচিব গুতেরেস বলেন, বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির হুমকিতে রয়েছে। ক্রমবর্ধমান সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে থাকলে নিচু অঞ্চল এমনকি পুরো দেশ অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে গুতেরেসের সোচ্চারতা আমাদের ভাবিয়ে তোলে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্ব নেতাদের সামনে চারটি দাবি তুলে ধরেন। স্কটল্যান্ডের গøাসগোয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ ২৬তম জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনের (কপ-২৬) মূল অধিবেশনে ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবগুলো খুবই সময়োপযোগী। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের যেসব দেশ সবচেয়ে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে প্রকৃতিতে যে ঋতুবৈচিত্র্য, তা লোপ পাচ্ছে। এক ঋতুর সঙ্গে আরেক ঋতুর যে পার্থক্য, তা মুছে যাচ্ছে। আর্দ্রতা কমে আসার পাশাপাশি তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের মাত্রা বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের দেশে অসময়ে বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়সহ অতি গরম আবহাওয়া তৈরি হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের অনেক এলাকা প্লাবিত হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আমাদের উপকূলীয় এলাকা এবং সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারসহ অন্যান্য এলাকা। হিমালয়ে বরফ গলে যাওয়ায় এরই মধ্যে পাকিস্তানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি দেখা গেছে। এ অবস্থায় আগামী কয়েক দশকে হিমালয়ের হিমবাহ হ্রাস পাবে, যার ফলে সিন্ধু, গঙ্গা এবং ব্রহ্মপুত্র নদীগুলো সংকুচিত হবে। গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষের পরিবেশবিরোধী নানারকম ক্রিয়াকলাপের ব্যাপক বৃদ্ধি এবং কয়লা, পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি জীবাশ্ম জ্বালানির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড, ক্লোরোফ্লুরো কার্বন, মিথেন, ওজোন, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি ‘গ্রিনহাউস’ গ্যাসের উপস্থিতি বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তরে উষ্ণতা বেড়ে গিয়ে তা প্রভাবিত করছে পৃথিবীর জলবায়ুকে। বিশেষ করে তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের এই পরিবর্তনগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে নানারকমের স্বাস্থ্য সমস্যা ডেকে আনছে। সংকট সমাধানে দীর্ঘমেয়াদি ও সুপরিকল্পিত কৌশল প্রণয়নের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বাংলাদেশের কী করা উচিত, বিশ্বের কী করা উচিত। এ বাস্তবতায় জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জগুলো বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নকে সহায়তার জন্য প্রণীত হয়েছে বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০। এটি অত্যন্ত তথ্যবহুল ও বিজ্ঞানভিত্তিক একটি পরিকল্পনা, যা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর উচিত এ ব্যাপারে সম্মিলিতভাবে কাজ করা। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি মোকাবিলার মতো বড় কাজে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবে না। আমাদের চারপাশের পরিবেশ সুরক্ষার জন্যও সুপরিকল্পিত উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ, পানিদূষণ থেকে আমাদের পরিবেশকে সুরক্ষার জন্যও উদ্যোগ প্রয়োজন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়