চট্টগ্রামে ফয়েস লেক বেসক্যাম্প উদ্বোধন

আগের সংবাদ

কাটবে যেসব সংকট : আইএমএফের ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ

পরের সংবাদ

উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী : অমর একুশে বইমেলার পর্দা উঠবে বুধবার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আর মাত্র একদিন পরেই হাতুড়ি পেরেকের ঠোকাঠুকিসহ যাবতীয় শব্দযন্ত্রণা থেমে যাবে। ভাষার মাসের প্রথমদিন পাঠকের গুঞ্জরণে মুখর আর সুবাসিত হয়ে উঠবে অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণ। বুধবার বিকাল ৩টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের মূল মঞ্চে সশরীরে উপস্থিত থেকে অমর একুশে বইমেলার ঊনচল্লিশতম আসর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেলা চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
এবারের অমর একুশে বইমেলার পরিসর বেড়েছে, বেড়েছে স্টল ও প্যাভিলিয়ন সংখ্যাও। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে এবার মেলা আয়োজন করছে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। প্যাভিলিয়ন থাকছে ৩৮টি। গতকাল সোমবার বিকালে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে. এম. মুজাহিদুল ইসলাম।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নূরুল হুদা। এ সময় আরো বক্তব্য দেন- বাংলা একাডেমির সচিব এ এইচ এম লোকমান হোসেন, মেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ক্রোস ওয়াকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মারুফ, বাংলা একাডেমির পরিচালক (জনসংযোগ) সমীর কুমার সরকার প্রমুখ। লিখিত বক্তব্যে কে এম মুজাহিদুল ইসলাম জানান, একাডেমি প্রাঙ্গণে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬৫টি ইউনিট এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩৬টি ইউনিটসহ মোট ৬০১টি প্রতিষ্ঠানকে ৯০১টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মেলায় প্যাভিলিয়ন থাকছে ৩৮টি।
তিনি জানান, মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২২ দেয়া হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর। স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা

হোসেন। মুজাহিদুল ইসলাম জানান, এবারো শিশুচত্বর মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে। তবে শিশু এবং অভিভাবকদের কথা মাথায় রেখে প্রবেশ পথের কাছে শিশুচত্বর রাখা হচ্ছে। কোভিডের কারণে গত বছর মেলার শুরুর দিকে শিশুপ্রহর না থাকলেও এবার শুরু থেকেই থাকছে।
তিনি জানান, এবারো নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন মঞ্চ থাকছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে। তবে গতবারে তুলনায় এবারের মঞ্চ বড় হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জলাধারের পূর্ব-দক্ষিণ পাশে পাম গাছের কাছে নির্মিত এ মঞ্চ ও প্যান্ডেল ‘আশ্রয়কেন্দ্র’ হিসেবে ব্যবহার হবে। অমর একুশে বইমেলা প্রচার কার্যক্রমের জন্য একাডেমিতে বর্ধমান ভবনের পশ্চিম বেদিতে একটি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুটি তথ্যকেন্দ্র থাকবে। সাংবাদিকদের অবাধ তথ্য আদান-প্রদানের সুবিধার্থে বইমেলায় মিডিয়া সেন্টার এবার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে।
তিনি বলেন, বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে প্রবেশের জন্য আপাতত চারটি গেট চূড়ান্ত হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের গেটটিও আমরা চেয়েছি। এ ব্যাপারে ডিএমপি থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখন পাইনি। আশা করি পেয়ে যাব। বের হওয়ার পথ থাকবে চারটি। বরাবরের মতো এবারো বিশেষ দিনগুলোতে লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির ফেলো এবং রাষ্ট্রীয় সম্মাননাপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য প্রবেশের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি জানান, বইমেলার প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা থাকছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। নিñিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলার এলাকাজুড়ে কয়েকশ ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি জানান, প্রতিদিন বিকাল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। মাসব্যাপী প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এবারের বইমেলার প্রতিপাদ্য ‘পড়ো বই, গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।
মুজাহিদুল ইসলাম জানান, অমর একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২০২৩ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সেরা বইয়ের জন্য প্রকাশককে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ এবং ২০২৩ সালের বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে শৈল্পিক বিচারে সেরা বইয়ের জন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেয়া হবে। এছাড়া ২০২৩ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সর্বাধিক বইয়ের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাই স্মৃতি পুরস্কার’ এবং এ বছর মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেয়া হবে।
তিনি আরো জানান, বইমেলা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। শুক্রবার দুপুর ১টা থেকে ৩টা এবং শনিবার ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিরতি। ২১ ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়