কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর মিরপুরে শুটিং স্পটে দগ্ধ অভিনেত্রী শারমিন আঁখির (২৭) অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। শ্বাসনালিসহ তার শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। গত শনিবার দুপুরে দগ্ধ হওয়ার পর ওই দিন সন্ধ্যায়ই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বার্ন ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন গতকাল রবিবার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শ্বাসনালিসহ তার শরীরের ৩৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তার চিকিৎসা করছি। এদিকে পল্লবী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পারভেজ ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বাথরুমে সিগারেট ধরানোর সঙ্গে সঙ্গে সেখানে একটি বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে শারমিন নামে ওই তরুণী দগ্ধ হয়েছে। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। হাসপাতালে শারমিনের স্বামী নির্মাতা রাহাত কবির জানান, তারা পল্লবী স্যান্ড হাউজিংয়ে থাকেন। শনিবার সকালে তিনি নিজেই শারমিনকে মিরপুর-১১, কালশি রোড অ্যাপেক্স শো-রুমের পাশের একটি শুটিং স্পটে নামিয়ে দিয়ে তার কাজে চলে যান। এরপর দুপুরে তিনি খবর পান, সেখানেই দগ্ধ হয়েছেন শারমিন। পরে তিনি তাকে সেখান থেকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যায় তাকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। তার দুই হাতের সম্পূর্ণ অংশ ও দুই পা, মুখমণ্ডল এবং মাথার একপাশ দগ্ধ হয়েছে। শারমিনের বরাত দিয়ে তিনি জানান, দুপুর শারমিন মেকআপ রুমে ঢুকেন। মেকআপ রুমের ভেতরেই টয়লেট। সেখানে হেয়ার স্টেট দিয়ে চুল ঠিক করার পর প্লাগ খুলতেই একটি স্পার্ক হয়। এরপরই ঘটে বিস্ফোরণ। তার ধারণা, ঘটনার আগে মেকআপ রুমে কেউ বডি স্প্রে ব্যবহার করে থাকতে পারে, যা সেখানকার বাতাসে ছিল। এর কারণেও বিস্ফোরণের সূত্রপাত হতে পারে। এছাড়া শুটিং হাউজটি সম্পূর্ণ নতুন ও সবেমাত্র রং করা হয়েছে। সেখানে রংয়ের প্রচুর গন্ধও ছিল। মেকআপ রুমে তিনি ধূমপান করছিলেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে রাহাত জানান, তার জানা মতে শারমিন ধূমপান করেন না।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার মো. শাহবুদ্দিন মেয়ে শারমিন। ৩-৪ বছর আগে তার বিয়ে হয়েছে। তার স্বামীর বাড়ি চট্টগ্রামের আকবর শাহ। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিনয় করছেন শারমিন আঁখি। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা আঁখির মঞ্চে যাত্রা শুরু অরিন্দম নাট্য স¤প্রদায়ের মধ্য দিয়ে। এই দলের নিয়মিত প্রযোজনা তারাসংকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কবি’ নাটকের মূল চরিত্র ‘বসন’ করেই পরিচিতি পান। পরবর্তীতে টিভি নাটকে কাজ করেও আলোচনায় আসেন তিনি।