উগ্র মৌলবাদের বিরুদ্ধে গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের কর্মসূচি

আগের সংবাদ

গৃহায়ণ ও রাজউকের ১১ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে

পরের সংবাদ

গ্যাং লিডারসহ ৮ সদস্য গ্রেপ্তার : ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ হাসিলে কাজ করত বিডিএসকে গ্যাং

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ছিনতাই, মাদক, আধিপত্য বিস্তার ও ইভটিজিং ছাড়াও অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ হাসিলের জন্য কাজ করত ব্রেভ ডেঞ্জার স্ট্রং কিং (বিডিএসকে) গ্যাং। র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে সবুজ বাংলা, টপ টেন ও ভাই-বন্ধু গ্রুপের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে সদস্যরা বিডিএসকে গ্রুপ খুলে রাজধানীর আদাবর, শ্যামলী, ঢাকা উদ্যান, মোহাম্মদপুর ও বেড়িবাঁধ এলাকায় ২-৩ বছর ধরে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। গ্যাং লিডার হৃদয় ওরফে হিটার হৃদয়সহ ৮ জনকে দেশি-বিদেশি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।
র‌্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গতকাল রবিবার রাজধানীর কাওরান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ৮টার দিকে রাজধানীর আদাবর থানাধীন তিন রাস্তার মোড় এলাকায় ছিনতাইকারীরা একজনকে জখম করে তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও নগদ অর্থ নিয়ে যায়। পরে ওই ব্যক্তিকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। একইভাবে কিছুদিন আগে একই এলাকার এক কলেজ শিক্ষার্থীর কাছ থেকেও একই কায়দায় ছিনতাইকারীরা মোটা অংকের অর্থ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বিষয়টি নজরে এলে র‌্যাব এসব ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। তাতে দেখা যায়, ৮-১০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে ও জানতে পারে যে, বিডিএসকে গ্রুপের প্রধান হৃদয় ওরফে হিটার হৃদয়ের নেতৃত্বে ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়েছে।
র‌্যাব-৪ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত শনিবার রাতে ফরিদপুর, রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ স্টেশন, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিডিএসকে গ্রুপের নেতা শ্রীনাথ মণ্ডল ওরফে হৃদয় ওরফে হিটার হৃদয় ছাড়াও এ গ্রুপের আরো ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন- রবিন ইসলাম ওরফে এসএমসি রবিন (২০), রাসেল ওরফে কালো রাসেল (২৫), আলামিন ওরফে ডিশ আলামিন (২১), লোমান ওরফে ঘাড় ত্যাড়া লোমান (২১), আশিক ওরফে হিরো আশিক (১৯), জোবায়ের ইসলাম ওরফে চিকনা জোবায়ের (১৯) ও সুমন ওরফে বাইট্টা সুমন (২০)। পরবর্তী সময়ে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুরে তাদের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি চাপাতি, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, ৪টি চাকু, দুটি হাঁসুয়া, কাঁচি ও লোহার রড উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা বিডিএসকে গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য। তাদের দলে প্রায় ২০-২৫ জন সদস্য রয়েছে। গ্যাং লিডার হৃদয় ওরফে হিটার হৃদয়ের নেতৃত্বে ২-৩ বছর আগে বিডিএসকে গঠন করা হয়। এই গ্রুপের সদস্যরা আগে বিভিন্ন গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
গ্রেপ্তারকৃতরা মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, আদাবর, বেড়িবাঁধ ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় চুরি-ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাত। তারা বিভিন্ন সময় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত। তারা বিভিন্ন ব্যক্তির স্বার্থ হাসিলের জন্য ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবেও কাজ করত। এ ছাড়াও তারা মাদক সেবনসহ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারকৃতদের অধিকাংশের নামে মাদক, চুরি-ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মারামারিসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। অনেকে কারাভোগও করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, ২-৩ বছর ধরে কাজ করলেও তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বা ছত্রছায়ায় থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে তারা অর্থের বিনিময়ে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ হাসিলের জন্য কাজ করত। জিজ্ঞাসাবাদে এমন কয়েকজনের নাম আমরা জানতে পেরেছি। তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। অভিযোগ সত্য হলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়