উগ্র মৌলবাদের বিরুদ্ধে গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের কর্মসূচি

আগের সংবাদ

গৃহায়ণ ও রাজউকের ১১ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে

পরের সংবাদ

কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র : দক্ষ জনবলের অভাবে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নুর আলম দুলাল, কুষ্টিয়া থেকে : চিকিৎসাসেবাসহ বেশ কয়েকটি কারণে চারবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদকপ্রাপ্তি ঘটেছিল কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের। অথচ এই হাসপাতালে সরঞ্জামসহ টেকনিক্যাল যন্ত্রপাতি থাকলেও নেই দক্ষ জনবল। ফলে হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ। অস্ত্রোপচারসহ জরুরি সেবার জন্য রোগীদের যেতে হচ্ছে জেলা হাসপাতাল অথবা বেসরকারি ক্লিনিকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২৭৮টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ৯৩টি। শূন্যপদের মধ্যে ৩৩ জন চিকিৎসকের বিপরীতে ২১টি শূন্য। এর মধ্যে ১১টি কনসাল্টেন্ট পদের ১১টিই শূন্য। অফিস সহায়কের ৩টি পদের ৩টিই শূন্য। ১৬টি পিয়ন পদের ১৫টি পদই শূন্য। ২টি আয়া পদই শূন্য। ৩টি ওয়ার্ডবয়ের মধ্যে ৩টি পদই শূন্য। ৩৭টি সেবিকা পদের ৯টি শূন্য। ২০০৯ সালে ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। সে সময় রোগীর খাবার ও ওষুধের অনুমোদন দেয়া হলেও চিকিৎসক পদগুলো ফাঁকা ছিল। ২০২১ সালে চিকিৎসকের অনুমোদন দেয়া হলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি।
আরো জানা গেছে, প্রায় ৪ লাখ মানুষের একমাত্র ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ৮০-৯০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ জন রোগী সেবা নেন। শয্যা, ওষুধ, খাবার ও জনবলসহ নানামুখী সংকটের কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। জনবল না থাকায় অপারেশন থিয়েটার ও ইসিজি যন্ত্র থাকলেও তা বন্ধ রয়েছে বছরের পর বছর। জরুরি প্রয়োজনে বাইরে থেকে চিকিৎসক ডেকে কিছু কার্য সম্পাদন করা হয়। কিন্তু জরুরি অপারেশন থিয়েটার, আইসিসিইউ, সিসিইউ, ভ্যান্টিলেটর না থাকায় হৃদরোগ, ক্যান্সার, স্ট্রোকসহ জরুরি চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। উপায়ান্তর না পেয়ে চিকিৎসকরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দায় সারছেন।
গতকাল রবিবার সকালে সরজমিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে পুরুষের তুলনায় নারী ও শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। রোগী ভর্তি আছেন প্রায় শতাধিক। শয্যা সংকটে বারান্দা ও মেঝেতে ঠাঁই নিয়েছেন অনেকে। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বহির্বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, নারীদের লম্বা লাইন। এ সময় দেখা যায় প্রায় অর্ধশতাধিক নারী টিকেট কেটে ও টিকেটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে দেখা যায় সেখানে তালা ঝুলছে। পরিসংখ্যানবিদ একাই অফিস সহায়কসহ পাঁচ পদের দায়িত্ব পালন করছেন।
এ সময় কথা হয় যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের গৃহিণী বিলকিস আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, লম্বা লাইনে প্রায় আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে টিকেট কাটতে পেরেছি। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। চাপড়া ইউনিয়নের ভাঁড়রা গ্রামের আব্দুল আলিম বলেন, অনেকে আগে টিকেট কাটার জন্য লাফালাফি করছে। অনেকে আবার জড়াচ্ছেন বাগবিতণ্ডায়। বহির্বিভাগ ও ভর্তি রোগী এবং স্বজনরা জানান, ‘যেসব রোগীর অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ছে, তাদের জেলা হাসপাতাল বা বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে। অতি সাধারণ অস্ত্রোপচারের জন্য যেতে হচ্ছে অন্যত্র। মানুষ নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন অন্তঃসত্ত্বা নারীরা। অনেকেই নরমাল ডেলিভারির জন্য হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। কিন্তু নানাবিধ কারণে যাদের স্বাভাবিক প্রসব হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় সিজারের মাধ্যমে তাদের সন্তান প্রসব করানো হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়